ঝিনাইদহে ঈদ যাত্রায় ফিরতি টিকিটের দাম বৃদ্ধি অভিযোগ দিয়ে মারধরের শিকার যাত্রী




রবিউল ইসলাম, স্টাফ রিপোর্টার 

ঝিনাইদহের পরিবহন কাউন্টারগুলো ঈদ যাত্রায় ফিরতি টিকিটের দাম বেশী নিচ্ছে বলে যাত্রীরা অভিযোগ করেছেন। এ নিয়ে মানুষের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দিলেও কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না। ফ্যাসিষ্ট আমলের মতোই ঢাকার মালিকরা পরিবহন সেক্টর জিম্মি করে যাত্রীদের কাছ থেকে বেশি ভাড়া আদায় করছে। শুক্রবার বিকালে ঝিনাইদহ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা যায়, গোল্ডেন লাইন, পুর্বাশা, চুয়াডাঙ্গা ডিলাক্স, গ্রিন এক্সপ্রেস, সুমন ডিলাক্স, জননী পরিবহন, রয়েল, দর্শনা ডিলাক্স ও এসবি ডিলাক্সসহ ঢাকায় চলাচলকৃত সব পরিবহনে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে। কাউন্টার মাষ্টাররা জানান, এই ভাড়া ঢাকা থেকে বৃদ্ধি করে তাদের আদায় করার নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। তারা মালিকের নির্দেশ পালন করছেন মাত্র। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কাউন্টার মাষ্টার জানান, ঢাকা বাস মালিক সমিতির কথা মতো অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করতে গিয়ে তারা বিব্রত, এমনকি মারামারির মতো ঘটনা ঘটছে। সাব্বির আহম্মেদ নামে এক যাত্রী জানান, তিনি ঝিনাইদহ থেকে সায়েদাবাদ টিকেট কেটেছেন ১২০০ টাকা দিয়ে। অথচ এই ভাড়া ৬৫০ টাকা। তার কাছ থেকে ডাবল ভাড়া আদায় করা হয়েছে। জুলহক নামে আরেক যাত্রী জানান, তিনি শৈলকুপা কদমতলী গুলশান রুটে গোল্ডেন লাইনে টিকেট কেটেছেন ৮০০ টাকা দিয়ে। তার কাছ থেকে দেড়’শ টাকা বেশি নিয়েছে। তালহা জুবায়ের নামে এক যাত্রী বলেন, বেশি ভাড়া নেয়ায় বৃহস্পতিবার বিকালে পূর্বাশা পরিবহনের ঝিনাইদহ কাউন্টারের নামে অভিযোগ করেন এক যাত্রী। অভিযোগ পেয়ে প্রশাসন ভ্রাম্যমাণ আদালত বসালে পরিবহন শ্রমিকরা অভিযোগকারী যাত্রীকে পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে লাঞ্ছিত করে। এ সময় ভ্রাম্যমান আদালতের বিচারক সহকারী কমিশনার (ভূমি) সজল কুমার দাসও উপস্থিত ছিলেন। যাত্রী লাঞ্চিত করার বিষয়ে এখনো কোন পদক্ষেপ গ্রহন করেনি পুলিশ বা ভ্রাম্যমান আদালত। বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, অভিযোগকারী যাত্রীকে লাঞ্চিত করার সময় মাত্র দুইজন পুলিশ কনস্টেবল ছিল। এ কারণে পুলিশ এ্যকশানে যেতে পারেনি। তিনি বলেন লাঞ্চিত যাত্রী থানায় কোন অভিযোগ করেনি। ঝিনাইদহ বাস মালিক সমিতি পরিচালনা পরিষদের প্রধান রোকনুজ্জামান রানু বলেন, কাউন্টার শ্রমিকরা অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে না। ঢাকা পরিবহন মালিক সমিতি ভাড়ার এই রেটকোট নির্ধারণ করে তা আদায় করতে বলেছে। ঢাকা রুটে চলাচলকৃত গাড়ির মালিকরাই অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের সঙ্গে জড়িত। এ ঘটনার সঙ্গে ঝিনাইদহের কোন বাস মালিক বা কাউন্টার মাষ্টার জড়িত নয়। তিনি বলেন, শ্রমিকরা কাউন্টার চালায় বলে মালিকদের নির্দেশ মানতে তারা বাধ্য হচ্ছে। ঝিনাইদহ সহকারী কমিশনার (ভূমি) সজল কুমার দাস বলেন, বেশি ভাড়া যাতে আদায় করেত না পারে সে জন্য নিয়মিত মনিটরিং করা হচ্ছে। তিনি বলেন, বেশি ভাড়া আদায় করার শাস্তি খুবই দুর্বল। এ কারণে মাস মালিকরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তারপরও প্রশাসন সজাগ রয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.