ইফতারে বেঁচে থাকা দুই টুকরো কমলা খাওয়ায় এতিম কিশোরকে পাশবিক নির্যাতন, পলাতক অভিযুক্ত শিক্ষক

 


ঝিনাইদহ প্রতিনিধি-

মধ্যযুগীয় বর্বরতাকে হার মানিয়েছে একটি ইয়াতিমখানায়। ইফতারে বেচে যাওয়া মাত্র দুই টুকরো কমলা খেয়েছিল কিশোর সাগর হোসেন। এরপর শুরু হয় নির্যাতন। দঁড়ি দিয়ে হাত-পা বেধে করা হয় বেধড়ক মারপিট। ঝিনাইদহ সদর উপজেলার মথুরাপুর আদর্শ ইয়াতিমখানায় ঘটেছে এমন নির্যাতনের ঘটনা। এ ঘটনার পর পলাতক রয়েছে অভিযুক্ত শিক্ষক ইমরান হাওলাদার।

হাসপাতালে মেঝেতে ব্যাথা আর যন্ত্রনায় কাতরাচ্ছে ইয়তিমখানার কিশোর সাগর হোসেন। লাঠির অসংখ্য আঘাতে দগদগে ক্ষতচিহ্ন তার শরীরে। শরীরের প্রতিটি অংশের এই ক্ষত দেখে নিজেকে সামলাতে পারছেন না মমতাময়ী মা। ছেলের উপর নির্যাতনের ক্ষতগুলো হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন তিনি। আর অঝোরে ঝরাচ্ছেন চোখের পানি। ঝিনাইদহ সদর উপজেলার মথুরাপুর আদর্শ ইয়াতিমখানার বাসিন্দা এতিম সাগর হোসেন পাশবিক নির্যাতন করার পর ভর্তি করা হয় হাসপাতালে।

স্বজনরা জানায়, গত সোমবার জনৈক এক ব্যক্তির দেওয়া ইফতারে কিছু কমলালেবু বেঁচে যায়। রাতে ইয়াতিমখানার বাসিন্দা কিশোর সাগর হোসেন সেখান থেকে দু টুকরো খাওয়ায় ফজরের নামাজ শেষে তাকে বেঁধে লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারপিট করে শিক্ষক ইমরান হাওলাদার। সকালে অসুস্থ হয়ে পড়লে স্থানীয়রা স্বজনদের খবর দিলে তারা তাকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। এ ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছে অভিযুক্ত শিক্ষক। পাশবিক এমন নির্যাতনের ঘটনায় অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে শাস্তির দাবী জানিয়েছেন স্বজন ও এলাকাবাসী।

মথুরাপুর আদর্শ ইয়াতিমখানার সুপার  মাওলানা জাহিদুল ইসলাম জানান, এ ঘটনার পর থেকে মাওলানা শিক্ষক ইমরান হাওলাদার পলাতক রয়েছেন। ইয়াতিমখানার পক্ষ থেকে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

ঝিনাইদহ সদর থানা ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, ইয়াতিমখানার ঘটনায় ভুক্তভুগিরা অভিযোগ দিলে দ্রতই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নির্যাতনের শিকার কিশোর সাগর হোসেন গত ৫ বছর ধরে ওই ইয়াতিমখানায় বসবাস করছেন। এর আগেও সাগরসহ একাধিক শিক্ষার্থীকে নির্যাতন করেছে অভিযুক্ত শিক্ষক ইমরান।


No comments

Powered by Blogger.