কোটচাঁদপুরে অতিরিক্ত টাকা নেওয়ায় জনগণের রোষানলে সাব রেজিস্ট্রার

 


মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, কোটচাঁদপুর থাকে :

নিয়ম বহির্ভূত অতিরিক্ত টাকা নিয়ে ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে দলিল লেখক ও সাব-রেজিষ্ট্রারের মধ্যে দরকষাকষিতে ক্ষোভে দলিল লেখা বন্ধ করে দেন লেখকরা। এতে করে বে-কায়দায় পড়েন জমি রেজিষ্ট্রি করতে আসা ভুক্তভোগীরা। জনগণের রোষানলে পড়েন সাব রেজিস্ট্রার। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সমঝোতায় ৬ ঘন্টা পর শুরু হয় কার্যক্রম। 
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা যায়, কোটচাঁদপুর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে সপ্তাহে দুই দিন জমি রেজিস্ট্রি করা হয়। এ অফিসে জমি রেজিষ্ট্রি করেন সাব-রেজিস্ট্রার তামিম আহম্মেদ চৌধুরী। বুধবার সকালে সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে এসে ডাক দেন দলিল লেখকদের। এরপর উভয় পক্ষের মধ্যে চলে জমি রেজিষ্ট্রি নিয়ম বহিরভূত অতিরিক্ত টাকা চাওয়া নিয়ে দরকষাকষি। একপর্যায় ক্ষোভে ফেটে পড়েন দলিল লেখকরা। বের হয়ে যান অফিস থেকে। বন্ধ করে দেন দলিল লেখা। এতে করে বে-কায়দায় পড়েন জমি রেজিষ্ট্রি করতে আসা ভুক্তভোগীরা। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সমঝোতায় ৬ ঘন্টা পর শুরু হয় জমি রেজিষ্ট্রি কার্যক্রম।
ভুক্তভোগী হরিণদীয়া গ্রামের শফিকুল ইসলাম, রাঙ্গিযারপোতা গ্রামের আবুল কালাম আজাদ, জগনাথপুর গ্রামের শহিদুল ইসলাম ও তালিনা গ্রামের আজাহার আলী বলেন, আমরা জমি রেজিষ্ট্রি করতে এসে ছিলাম। অফিস থেকে কাগজপত্র দেখে ওয়ারিশের জন্য দশ হাজার টাকা আর প্রত্যয়নের জন্য দশ হাজার টাকা দাবি করেন। সাব-রেজিষ্টার হাতে করে টাকা নেন কিনা এমন প্রশ্নে তারা বলেন, টাকা তো ওনি হাতে করে নেন না। টাকা নেন অফিসের বড় বাবু আবদুল মালেক ও ওই অফিসের টোটন নামের আরেক জন।
দলিল লেখক সমিতির সভাপতি বদর উদ্দিন বলেন, সকালে সাব-রেজিষ্ট্রার আমাদের ডাকেন। কথা হয় জমি রেজিষ্ট্রি অতিরিক্ত টাকার প্রসঙ্গে। তিনি আমাদের ওয়ারিশের জমির দলিলে টাকা বাড়িয়ে দিতে বলেন। এ ছাড়া বিভিন্ন ধরনের অজুহাতে টাকা নিয়ে দিতে বলেন জমি রেজিষ্ট্রি করতে আসা ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে। 
আগে কত করে টাকা নেয়া হত, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আগে পাঁচ হাজার টাকা নেয়া হত। এখন আরো বাড়িয়ে দিতে বলছেন। যা আমোদের পক্ষে আদৌও সম্ভব না। আর প্রত্যয়ন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রত্যয়নে টাকার কোন ধরা বাধা নিয়ম নাই।
এদিকে সাব- রেজিষ্ট্রার তামিম আহম্মেদ চৌধুরী তাঁর বিরুদ্ধে তোলা সব অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, সকালে লেখকদের ডেকে ছিলাম জমি রেজিষ্ট্রির বিষয় নিয়ে কথা বলতে। আমি ওনাদের একটা কথা বলায় ওনারা তাতে রাজি হননি। এরপর আমি লেখকদের চলে যেতে বললে, ওনারা বাইরে গিয়ে ক্ষোভ দেখান। পরে তারা দলিল লেখা বন্ধ করে দেন। এতে করেই বাধে বিপত্তি। পরে জমি রেজিষ্ট্রি করতে আসা মানুষেরা ক্ষিপ্ত হয়ে যান।
কোটচাঁদপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) অপু কুমার বিশ্বাস বলেন, ওসি স্যার আমাকে বলেন সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসে ঝামেলা হচ্ছে। এ খবরে আমি ঘটনাস্থলে আসি। এরপর এসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক দেখতে পায়। এখনও পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। 
তবে ঘটনাটি নিয়ে ইউএনও স্যারের অফিসে সভা হচ্ছিল। 
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী আনিসুল ইসলাম বলেন, ওই ঘটনার ভিকটিম সাব রেজিস্টার। আপনারা ওনার সঙ্গে কথা বলেন। এ ব্যাপারে আমার কোন মন্তব্য নাই। আর কোন মন্তব্য করতেও চাই না। এরপর তিনি সাব- রেজিস্ট্রারকে সাংবাদিকদের ভাল করে খাইয়ে দিতে বলেন।

No comments

Powered by Blogger.