ঝিনাইদহে বাদশা নিহতের ঘটনায় লুটতরাজ ও বাড়িঘর ভাঙচুর নিরাপত্তা কামনা পরিবারের

 


মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, সংবাদদাতা:

ঝিনাইদহের শৈলকুপায় গত ৯ডিসেম্বর ১২নং নিত্যানন্দনপর ইউনিয়নের দীঘলগ্রামে প্রতিপক্ষের হামলায় বাদশা মোল্যা নিহতের ঘটনায় দূর্বৃত্তরা হামলা চালিয়ে গুড়িয়ে দিয়েছে অর্ধশতাধিক বাড়িঘর। বাদশা নিহতের পর বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্থ্যদের অভিযোগ যারা বাদশা হত্যার সাথে জড়িত তাদের বিচার হোক। কিন্ত নির্বিচারে প্রায় অর্ধশতাধিক বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে ধ্বংস করে দেওয়ায় তারা আশ্রয় হারিয়ে এখন অন্যত্র মানবতার জীবন যাপন করছেন। তারা প্রশাসনের কাছে নিরাপত্তা চান। ভাংচুরের ঘটনায় পুলিশ জানায় দীঘলগ্রামের বাদশা নিহতের ঘটনায় বাড়িঘরে হামলায় ক্ষতিগ্রস্থরা যদি বাড়ি ফিরতে চায় তাহলে প্রশাসন নিরাপত্তা দেবে।

সরেজমিনে দীঘলগ্রামে গিয়ে দেখা যায়, রহিম মোল্যার ছেলে টিপু সুলতান, টিটুল, মিটুল, মনো মোল্যার ছেলে মজনু, ফজলু, বিল্লাল, ছনো মোল্যার ছেলে নুর ইসলাম, হবিবার মোল্যার ছেলে মাসুদ, সুজন, মোখলেচ মোল্যার ছেলে তুষার, লিটন, ইব্রাহীম মোল্যার ছেলে চয়ন, মন্টু মোল্যার ছেলে জাহাঙ্গীর, আনোয়ার, দুলাল মোল্যার ছেলে লাকু, সাহেব আলী, ফটিক মোল্যার ছেলে হকছদ্দি, মাহাতাব, বক্কার মোল্যার ছেলে বাচ্চু ও ফিরোজ, মঙ্গল মোল্যার ছেলে রাজ্জাক, আফাঙ্গীর, জেনারুল, হামিদুর, নয়ন মোল্যার ছেলে বজলু, নজরুল, সাদ্দাম, গোলাম নবীর ছেলে লাল্টু, লাড্ডু,ও ইছাহাক মোল্যার ছেলে রেজাউল ও হাফিজুলের বাড়িঘরে দূর্বৃত্তরা হামলা চালিয়ে গুড়িয়ে দিয়েছে।
দীঘলগ্রামের সিদ্দিক মোল্যার স্ত্রী কুলসুম বেগম বলেন, চলতি মাসের ৬ ডিসেম্বর বিকালে গরু চুরির ঘটনায় বাহারুল মোল্যা ও রহিম মোল্যার পরিবারের মধ্যে নারীদের ঝগড়া শুরু হয়। এক পর্যায়ে তা সংঘর্ষে রুপ নেয়। এ সময় বাহারুল সমর্থক বাদশা মোল্যা আহত হলে পরে ৯ডিসেম্বর তার মৃত্যু হয়। এরপর থেকে বাদশা মোল্যার সমর্থকরা তাদের বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে তার একতলা বিল্ডিং সহ প্রায় অর্ধশতাধিক বাড়িঘর সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দিয়েছে। বর্তমানে তারা অন্যত্র আত্মিয়ের বাড়িতে কষ্টে জীবন যাপন করছেন।
দীঘলগ্রামের টিপু সুলতানে স্ত্রী টুম্পা খাতুন বলেন, আমরা যদি অন্যায় করে থাকি তাহলে তার বিচার হবে। কিন্ত আমাদের বাড়িঘরতো আর অন্যায় করেনি। সবই ভেঙ্গে মাটিতে মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে।
বাদশা হত্যা পরবর্তী বাড়িঘর গুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় শৈলকুপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাসুদ খান বলেন, সামাজিক বিরোধে যে কোন হত্যার পর বাড়িঘরে হামলা ও ভাংচুর এটা শৈলকুপার সংস্কৃতি। বাদশা নিহতের পর অভিযুক্তদের মালামাল তারা নিজেরা প্রশাসনের সহযোগীতায় নিরাপদে সরিয়ে নেয়। তবে যারা বাদশা মোল্যার প্রতিপক্ষরা ভয়ে বাড়িঘর ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছে এ সুযোগে রাতের আধারে কিছু দূর্বৃত্ত বাড়িঘরে হামলা চালাতে পারে। বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্থরা যদি কোন অভিযোগ দেয় তাহলে তারা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান।
উল্লেখ্য দীঘলগ্রামের বাদশা মোল্যা নিহতের ঘটনায় তার ভাই মিরাজ মোল্যা বাদী হয়ে ৩৭ জনের নামে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ মামলার ২৭ আসামী বর্তমানে জেলহাজতে রয়েছে বলে জানা যায়।

No comments

Powered by Blogger.