ঝিনাইদহে বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে অ্যাভোকাডো

 

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি- ঝিনাইদহে বানিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে অ্যাভোকাডো । পুষ্টিগুন ভালো থাকায় এর চাহিদা বিশ্বজুড়ে। বিক্রিও হচ্ছে চড়া দামে। প্রয়োগ করা লাগে না কীটনাশক ও পরিচর্যায় নেই তেমন কোন খরচ। তাই জেলার চাষিদের মাঝে এ ফল চাষে রয়েছে ব্যাপক আগ্রহ। জেলার কোটচাদপুর উপজেলার কাগমারিগ্রামে বানিজ্যিক ভাবে অ্যাভোকাডোর বাগান করেছেন হারুন-অর-রশিদ। বাগানে থোকায় থোকায় ঝুলছে রসালো ফল অ্যাভোকোডা । উচ্চ ফলনশীল এই বিদেশি ফলের রয়েছে ব্যাপক চাহিদা। তাই জেলা জুড়েই এই বিদেশী ফল চাষ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।

অ্যাভোকাডো চাষী হারুন-অর-রশিদ জানান, দামি ফল চাষের আগ্রহ থেকে অ্যাভোকাডো চাষ শুরু করেন তিনি। ২০১৭ সালে নিজের দু’বিঘা জমিতে ১’শত চারা গাছ রোপন করেন তিনি। এর মধ্যে ৬০টি গাছ বেচেঁ থাকে বাকি গাছ মারা যায়। দু’বছর পর থেকেই ৬০ টি গাছেই  ফলন আসতে শুরু করে। প্রথম বছরেই তিনি ২০ লক্ষ টাকার অ্যাভোকাডো বিক্রি করেন। অন্যান্য ফসলের তুলনায় খরচ কম আর চাহিদা ও দাম ভালো পাওয়ায় বানিজ্যিকভাবে তিনি শুরু করেন অ্যাভোকাডোর চাষ। পরবর্তীতে ২০২০ সালে আরো ৫ বিঘা জমিতে তিনি অ্যাভোকোডার চারা রোপন করেন।  তার ৫ বিঘা জমিতে ব্যাকন, সিডলেস, হ্যাসসহ ১১ জাতের প্রায় ৩’শ অ্যাভোকাডোর গাছ রয়েছে। ফলন ভালো পেতে পরিচর্যার পাশাপাশি পোকা মাকড়ে যেন নষ্ট না করে সেজন্য করেছেন ব্যাগিং পদ্ধতি। বর্তমানে এমন লাভজনক চাষে এলাকার অনেক কৃষকরা আগ্রহী হচ্ছে । হারুন-অর-রশিদ ফল বিক্রির পাশাপাশি চারা বিক্রি করেও লাভবান হচ্ছেন।

এদিকে কালীগঞ্জ উপজেলার ফল চাষী আতিয়ার রহমান জানান, দীর্ঘ দিন পেয়ারা, কুল, ড্রাগন ও মাল্টা চাষ  করছেন। পার্শ্ববর্তী কোটচাদপুর উপজেলায় অ্যাভোেেকাডার চাষ দেখে প্রায় ১ বিঘা জমিতে ২ বছর আগে চারা রোপন করেন। এখন তার বাগানেও ফলন আসতে শুরু করেছে। অন্যান্য ফলের তুলনায় এই বিদেশী ফলে ভালো লাভ হওয়ায় তিনি আরো বেশি করে অ্যাভোকোডা চাষ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলেও জানান তিনি।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ষষ্ঠি চন্দ্র রায় বলেন, জেলায় ৩ হেক্টর জমিতে বানিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে অ্যাভোকাডো। ডিসেম্বর মাসে ফুল আসে বছরে ফলন হয় ১ বার । হারভেস্ট করা হয় জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত। গাছের বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে ফলনও বেশি হয়। এ ফল বাগান আম, কাঠাল, লিচুর মত কোন অতিরিক্ত কিটনাশক প্রয়োগ করা লাগে না। ঔষধি ফল হওয়ায় বাজারেও এর ব্যপক চাহিদা রয়েছে। তাই অ্যাভোকাডো চাষ বৃদ্ধিতে  কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে প্রতিনিয়তই কারিগরি প্রশিক্ষনসহ বিভিন্ন পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। 

No comments

Powered by Blogger.