কোটচাঁদপুরে বিদায় হলো দেবী দুর্গা

 


রোকনুজ্জামান কোটচাঁদপুরঃ

শারদীয় দুর্গোৎসবের বিজয়া দশমীতে ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে মণ্ডপগুলোতে সিঁদুর খেলায় মেতে উঠেছিলেন সনাতন ধর্মাবলম্বী নারী পুরুষ বৃদ্ধ যুবক সহ সকলে। সিঁদুর খেলা শেষেই শুরু হয় দেবী দুর্গাকে বিদায় দেওয়ার প্রস্তুতি। 

দুপুরের পর থেকেই কোটচাঁদপুরের বিভিন্ন এলাকার প্রতিমা বিসর্জনের জন্য নেওয়া হয় ঘাটে।বিকাল চারটা থেকে  শুরু হয় প্রতিমা বিসর্জন । 

পাঁচদিন ব্যাপী শারদ উৎসবের শেষ দিন রবিবার  এলাকার  বিভিন্ন পূজা মণ্ডপে ঘুরে দেখা যায়, ঢাকের তালে তালে সিঁদুর খেলায় মেতে উঠেছেন বিবাহিত অবিবাহিত নারী পুরুষ। একজন অপরজনের সিঁথিতে সিঁদুর তুলে দিচ্ছিলেন তারা। অনেকে একজন আরেকজনের গালেও লাগিয়ে দিচ্ছিলেন সিঁদুরের রঙ। স্বামীর মঙ্গল কামনায় দেবীর পা ছোঁয়ানো এ সিঁদুর নিয়ে খেলায় মেতে ওঠেন তারা। এ বিষয়ে সিঁদুর খেলতে আসা আরতি দাশ বলেন,‘স্বামীর দীর্ঘায়ু, সুস্থতা ও সৌভাগ্য কামনায় দুর্গা মায়ের চরণে দেওয়া সিঁদুর মাথায় পরি। সিঁদুর খেলার সময় এক ধরনের ভালো লাগা কাজ করে মনে।’   আরতী দাস পেশায় গৃহবধূ তিনি বলেন,‘সিঁদুরের লাল রং পবিত্রতার প্রতীক। সিঁদুর খেলার মাধ্যমে সেই পবিত্রতা নিজে ধারণের পাশাপাশি অন্যদের মধ্যেও তা বিলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করি। এটা একান্তই নারীদের উৎসব। বয়স নির্বিশেষে সব নারীই তাই এ খেলায় মেতে ওঠে। 

এর আগে সকাল থেকে শুরু হয় ভক্তদের আরাধনা। দশমী পূজার পর সিঁদুর খেলা শুরু হয়। দুপুরের পর দেবী দুর্গাকে এক বছরের জন্য বিদায় দিতে গিয়ে বিষাদে ভরে ওঠে সবার মন। শহরের চাকলাপাড়া সংলগ্ন নবগঙ্গা নদীর পড়ে গিয়ে চোখের জলে দেবী দুর্গাকে বিদায় জানাতে দেখা গেছে তাদের। 

দেবী দুর্গাকে বিসর্জন দেওয়ার সময় যাতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সেজন্য সতর্ক অবস্থায় দেখা গেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদেরকেও। এসময় দেবী দুর্গাকে বিসর্জন ঘাট পরিদর্শন করেন,উপজেলা প্রসাশনের  কর্মকর্তাবৃন্দ।
ঘাঘা দাশ পাড়া পুজামন্ডবের রাজকুমার জানান‘এবারের পূজায় প্রার্থনা করেছি দেশ ও জাতির কল্যাণের। মানুষ যেন সুখে ও শান্তিতে বসবাস করতে পারে সেই প্রার্থনা করেছি। মানুষের মঙ্গল নিয়ে দেবী আবার আসবেন, সেই পর্যন্ত আমরা অপেক্ষায় থাকব।’ উৎসব চলাকালে কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মধ্যে দিয়েই উদযাপিত হলো সনাতন ধর্মাবলাম্বীদের সবচেয়ে বড় এই ধর্মীয় উৎসব।

No comments

Powered by Blogger.