২২ জনের কথা বলে নিয়োগ দেওয়া হয় ৩৮ জনকে ঝিনাইদহের সদ্য বিদায়ী জেলা প্রশাসক ও চক্ষু হাসপাতালের সহকারী পরিচালকের বিরুদ্ধে অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি- প্রয়োজনের অতিরিক্ত জনবল নিয়োগে বানজ্যি। কেনাকাটা, নির্মাণ আর সংস্কারেও অনিয়ম। প্রতিবাদ করলে করা হয় হুমকি ও বহিস্কার। অনিয়ম যেন নিয়মে পরিণত হয়েছে ঝিনাইদহ চক্ষু হাসপাতালে। এমন অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে হাসপাতালের সভাপতি সদ্য বিদায়ী জেলা প্রশাসক ও সহকারী পরিচালক মিলন হোসেনের বিরুদ্ধে। অবৈধ নিয়োগ বাতিল, কেনাকাটায় অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রতিবাদসহ ১১ দফা দাবী আদায়ে ফুসে উঠেছে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। ঝিনাইদহ চক্ষু হাসপাতালে প্রয়োজন ছিলো ৫ থেকে ৭ জন চিকিৎসক ও নার্স। সেই চাহিদার অজুহাত দেখিয়ে ২২ জনের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু রাতে আঁধারে টাকার বিনিময়ে নিয়োগ দেওয়া হয় ৩৮ জনকে। হাসপাতালের সামনের শেড তৈরী, রোগীদের জন্য চশমা ক্রয়সহ করা হয় নানা অনিয়ম। হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অভিযোগ, সদ্য বিদায়ী জেলা প্রশাসক এস এম রফিকুল ইসলাম আর হিসাব রক্ষক থেকে সম্প্রতি সহকারী পরিচালক পদে পদোন্নতি পাওয়া মিলন হোসেন এসব অনিয়মের মুল হোতা। তাদের অভিযোগ লাখ লাখ টাকার বিনিময়ে দেওয়া হয়েছে বাড়তি জনবল নিয়োগ। আর নামমাত্র টেন্ডার দেখিয়ে করা হয়েছে শেড তৈরী। এমনকি জেলা প্রশাসনের এক কর্মকর্তাকে পরিচালক পদে নিয়োগ দিয়ে মাসিক সম্মানী নিচ্ছেন ৩০ হাজার। অথচ তিনি কোনদিন হাসপাতালেই আসেন না। এদিকে হঠাৎ করে নিয়োগ দেওয়ার পর হাসপাতালের সেবার মুল্য বাড়ানো হয়েছে। ৫০ টাকার টিকিট করা হয়েছে ১০০ টাকা। আর সব ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষার মুল্য বাড়ানো হয়েছে শতকরা ২০ ভাগ। এতে ভোগান্তিতে পড়েছে সেবা নিতে আসা হতদরিদ্র রোগীরা। হাসপাতালের এসব অনিয়মের প্রতিবাদ করায় ২ জনকে করা হয় বহিস্কার আর লাঞ্ছিত করা হয় চিকিৎসককে। সেবা গ্রহিতা মশিয়ার রহমান জানান, সেবা নিতে এসে দেখি টিকিটের মুল্য বাড়িয়ে করা হয়েছে ১০০ টাকা। আর সব ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষায় গুনতে হচ্ছে আতিরিক্ত টাকা। এতে ভোগান্তিতে পড়েছে সেবা নিতে আসা হতদরিদ্র রোগীরা। সেবা নিতে আসা হতদরিদ্র রোগীদের দাবি টিকিটের মুল্য সহ সব ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষার মুল্য কমানোর। সকল নীরবতা ভেঙ্গে অবৈধ নিয়োগ বাতিল, কেনাকাটায় অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রতিবাদসহ ১১ দফা দাবী আদায়ে কর্মবিরতিও পালন করেছে হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। ঝিনাইদহ সমাজ সেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ও ঝিনাইদহ চক্ষু হাসপাতালের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের জানান, চক্ষু হাসপাতালসহ অন্যান্য দুর্নীতির অভিযোগে ছাত্রদের আন্দোলনের মুখে ঝিনাইদহ ছেড়েছেন জেলা প্রশাসক এস এম রফিকুল ইসলাম আর অসুস্থতার অজুহাতে হাসপাতালে আসছেন না অভিযুক্ত সহকারী পরিচালক মিলন হোসেন। তবে অনিয়ম দুর্নীতি হলেও কিছুই করার ছিলো না আমার। ২০০৪ সালের অক্টোবরে ঝিনাইদহ-মাগুরা মহাসড়কের বাস টার্মিনাল এলাকায় হাসপাতালটির উদ্বোধন করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। সমাজ সেবা অধিদপ্তরের নিয়ন্ত্রাধীন এই হাসপাতালটিতে প্রতিদিন গড়ে আড়াই’শ থেকে ৩’শত রোগী চিকিৎসা সেবা নেন।

No comments

Powered by Blogger.