ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার স্বপ্ন ছিল শহিদ আরিফুল ইসলাম সাদের, এক গুলিতেই সব শেষ
চিত্রা নিউজ ডেস্ক -
সাভার ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী আরিফুল ইসলাম সাদ। স্বপ্ন ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার বিজ্ঞানে পড়ার।
কিন্তু বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত হন তিনি।
সোমবার (৫ আগস্ট) দুপুরের দিকে ঢাকা জেলার ধামরাইয়ে হার্ডিঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের সামনে মিছিল করা অবস্থায় পুলিশের গুলিতে আহত হন সাদ।পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান সাদ।
সাদ মানিকগঞ্জ জেলার সাটুরিয়া উপজেলার দরগ্রাম এলাকার পল্লী চিকিৎসক শফিকুল ইসলামের বড় ছেলে।
সাদের বাবা শফিকুল ইসলাম বলেন, ৫ আগস্ট ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করার জন্য বাসা থেকে বের হয় সাদ। প্রথম দিকে শিক্ষার্থীরা শরীফবাগে জড়ো হতে থাকেন।
এসময় পুলিশ এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়তে থাকে এবং একজন নারী গুলিবিদ্ধ হন। পরে উপজেলা ও পৌরসভায় শিক্ষার্থীসহ আমজনতা পিকেটিং করে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীরা থানা রোড এলাকায় এলে পুলিশ পুনরায় গুলি ছুড়তে থাকে।
দুপুরের দিকে ধামরাই হার্ডিঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের সামনে পুলিশের ছোড়া গুলিতে আমার বড় ছেলে (আরিফুল ইসলাম সাদ) আহত হন। পরে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাকে প্রথমে ইসলামপুর হাসপাতালে নিলে চিকিৎসকরা গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে রেফার করেন। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য পুনরায় সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ৮ আগস্ট সকালের দিকে মারা যান সাদ।
নিহতের বাবা শফিকুল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সব শহীদদের আত্মার শান্তির কামনা করে তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে প্রথমবার বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, ২০২৪ সালেও সরকারের পতনের জন্য শতশত ছাত্রজনতা শহীদ হয়েছেন। যেমন ৭১ সালে যারা শহীদ হয়েছে, তাদের স্মরণে জাতীয় স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হয়েছে। আমি চাই এবারের পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য ২০২৪ সালে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের স্মরণে স্মৃতিস্তম্ভ করা হোক। এর পাশাপাশি কেন নিরপরাধ সাধারণ শিক্ষার্থীসহ জনতাকে গুলি করে হত্যা করা হলো তার সঠিক বিচার চাই।
পারিবারিক ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ছোট বেলা থেকেই সাদ মেধাবী ছিল। নার্সারি থেকেই সাভারের পাবলিক ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজে পড়ছেন তিনি। সাদ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রথম দিকে থেকেই বেশ সরব ছিল। ঢাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের ৫ আগষ্ট ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে। এরই ধারাবাহিকতায় আন্দোলনে সময় ঢাকা জেলার ধামরাই উপজেলার থানা রোড সংলগ্ন হার্ডিঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের সামনে পুলিশের গুলিতে গুরুতর আহত হন তিনি। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে ইসলামপুর হাসপাতাল, গণস্বাস্থ্য এবং সর্বশেষ এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। গত ৮ আগস্ট সকালের দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান আরিফুল ইসলাম সাদ।
সাদের চাচা শহিদুল ইসলাম সাগর বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আমার ভাতিজা তার নিজের অধিকারের জন্য মাঠে নামে এবং পুলিশ তাকে নৃশংসভাবে গুলি করে হত্যা করে। আমিসহ আমার পরিবারের সব সদস্যরা সহ এলাকা বাসী সাদ হত্যার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি।
No comments