নিয়ম মাফিক ডিউটিতে থাকেন না কালীগঞ্জ হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্সের চালক: জরুরী সেবা থেকে বঞ্চিত মুমূর্ষ রোগীরা0
রবিউল ইসলাম-
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সরকারি অ্যাম্বুলেন্সের চালক সহিদুল ইসলাম সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ডিউটিতে থাকেন না। ফলে জরুরী স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে হাসপাতালে সেবা নিতে আসা মুমূর্ষ রোগী ও স্বজনরা। এমনই অভিযোগ সেবা নিতে আসা অধিকাংশ রোগীর স্বজনদের। উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে সেবা নিতে আসা মমূর্ষ রোগীদের উন্নত চিকিৎসার জন্য জেলা শহর বা বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করলে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে বে-সরকারি অ্যাম্বুলেন্স বা মাইক্রোবাসে করে তাদের যেতে হয় বিভিন্ন চিকিৎসা সেবা কেন্দ্রে।
এসব অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করতে গত এক সপ্তাহে প্রতিদিন বিকাল ৩টার সময় সরোজমিনে হাসপাতালে গিয়ে অ্যাম্বুলেন্স চালক সহিদুল ইসলামকে খোঁজ করলে তাকে পাওয়া যায় না। গত বৃহস্পতিবার হাসপাতালে এক কর্মচারির কাছে অ্যাম্বুলেন্স চালক সহিদুল ইসলাম কোথায় জানতে চাইলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন উনি যোগদানের পর থেকে নিয়মিত ডিউটি করেন না। তাছাড়া যেদিন হাসপাতালে আসেন সেদিন বিকাল ৩ টা বাজলেই ঝিনাইদহে চলে যান। বিকাল ৩ টার পর আর তাকে পাওয়া যায় না।
এই হাসপাতালে বিকল্প কোনো চালক বা ব্যবস্থা না থাকায় সরকারি অ্যাম্বুলেন্স সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে রেফার্ড করা মুমূর্ষ রোগীরা। ফলে বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্সে বা অন্য কোনো গাড়িতে করে অন্য হাসপাতালে মুমূর্ষ রোগীদের নেওয়ার জন্য প্রায় দ্বিগুণ ভাড়া গুণতে হচ্ছে তাদের। এতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে গরিব ও দুস্থ্য রোগীদের। যেন ‘মরার উপর খাঁড়ার ঘা’!
শহরের আড়পাড়া (নদিপাড়া) শেখ নজরুল ইসলাম জানান, কালীগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে গুরুতর রোগীদের স্থানান্তর করা হয় ঝিনাইদহ, যশোরসহ বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এমনকি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেও নিয়ে যেতে হয় রোগীদের। এসব রোগী পরিবহনের জন্য স্বজনদের যেতে হয় প্রাইভেট অ্যাম্বুলেন্স বা ভাড়ায় চালিত মাইক্রোবাসের খোঁজে। এ সুযোগে প্রাইভেট গাড়িগুলোর চালকরা সরকারি ভাড়ার তুলনায় অনেক বেশি অর্থ হাতিয়ে নেন। বিকল্প ব্যবস্থা থাকলে এ সমস্যা তৈরি হতো না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অ্যাম্বুলেন্স চালক সহিদুল ইসলাম বলেন, আমি ঝিনাইদহে প্রতিদিন যায় না মাঝে মধ্যে বিকালে যায়। তবে ৩ টার দিকে যায় না আরো পরে যায়। টিএইচএ স্যারের ড্রাইভার নজরুল ভাই যেদিন হাসপাতালে থাকে আমি সেদিন ঝিনাইদহে যায়। টিএইএ সাহেবের ড্রাইভার অ্যাম্বুলেন্স চালানোর নিয়ম আছে এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি এড়িয়ে যান এবং ফোনে কথা না বলে সরাসরি কথা বলেন এবং আপনি টিএইচএ স্যারের সাথে কথা বলেন বলে ফোন কেটে দেন।
বিষয়টি জানতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও ডাঃ শিশির কুমারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, অ্যাম্বুলেন্সের ড্রাইভার শহিদুল ইসলামের অনিয়মিত ডিউটি করেন এই ধরনের অভিযোগ আমরাও পেয়েছি। অভিযোগটি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ আলমগীর হোসেনের সাথে মুঠোফোনে ০১৭১৭৫১৪৪৫৬ নম্বরে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোনটি রিসিভড করেননি।
কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইশরাত জাহান বলেন, বিষয়টি আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি।
No comments