কৃষক নেতা কমরেড সরোজ বিশ্বাস আর নেই
জাতীয় কৃষক ক্ষেতমজুর সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সভাপতি, জাতীয় গণফ্রন্টের কেন্দ্রীয় সদস্য, তেল-গ্যাস-বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা আন্দোলনের অন্যতম নেতা কমরেড সরোজ বিশ্বাস আর নেই। তিনি দীর্ঘদিন ধরে লিভার,কিডনি,ডায়াবেটিস ও হাইপ্রেশার রোগে ভূগছিলেন। শুক্রবার বিকাল ৫টা ২০ মিনিটে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার হরদেবপুর নিজ বাড়িতে তিনি মারা যান। কমরেড সরোজ বিশ্বাস ওই গ্রামের মৃত শশাঙ্ক শেখর বিশ্বাসের ছেলে।
জনগণতান্ত্রীক বিপ্লবের মাধ্যমে সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ও সাম্যবাদ পানচাষী আন্দোলন, বিদ্যুৎ শোষণ দুর্নীতি বিরোধী আন্দোলন, পাটচাষী ও আঁখ চাষীদের অধিকার রক্ষা আন্দোলন, অযৌক্তিক হাট খাঁজনা বিরোধী আন্দোলন, সাম্রাজ্যবাদ পূঁজিবাদ বিরোধী আন্দোলনসহ প্রভৃতি আন্দোলন তিনি কালীগঞ্জের সামনের সারিতে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তার সবচেয়ে আলোড়ন সৃষ্টকারী আন্দোলন ছিল ১৯৮৭ সালে একটি ধর্ষনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে গণনির্যাতন প্রতিরোধ কমিটি গঠনের মাধ্যমে জাতীয় পার্টির মাস্তান বিরোধী আন্দোলন। সে আন্দোলন দেশে- বিদেশে ব্যাপক সাড়া ফেলেছিল। ওয়ার্কার্স পার্টি ও কৃষক সংগ্রাম সমিতির সাথে যৌথভাবে যৌথ নেতৃত্বে তিনি ওই আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন। আন্দোলনে হাজর হাজার লোক সমবেত হতে থাকে। এক পর্যায়ে তৎকালীন ক্ষমতাসীন জাপার এমপি আন্দোলন কারীদের সাথে বৈঠকে বসতে বাধ্য হন। জাতীয় পার্টির মাস্তানরা এলাকা ছেড়ে পালায়। ধর্ষনের আসামীরা পুলিশের হাতে ধরা দিতে বাধ্য হয়।
১৯৬৮ সালে অবিভক্ত ছাত্র ইউনিয়নের রাজনীতি সরোজ বিশ্বাসের হাতে খড়ি। ১৯৭৩/৭৪ সালে পূর্ব পাকিস্তানের কমিউনিষ্ট পার্টি সদস্য হিসেবে আতœগোপনের রাজনীতিতে যান। ১৯৭৭ সালে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন এবং ১৯৮০ সালে জেলমুক্তির মাধ্যমে পূনরায় প্রকাশ্যে রাজনীতিতে আসেন। পরবর্তিতে বিপ্লবী কমিউনিষ্ট পার্টি ( মুনির) গ্রæপে যোগদান করেন। তিনি কৃষক আন্দোলনেও অগ্রনী ভ‚মিকা রাখেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি কমরেড টিপু বিশ্বসের নেতৃত্বাধীন জাতীয় গসফ্রন্টের কেন্দ্রীয় সদস্য ছিলেন। এ ছাড়াও বিভিন্ন সময়ে তিনি দলের জেলা-উপজেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন।
No comments