শেরপুরের নকলা উপজেলার ইউএনওর বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ
চিত্রা নিউজ ডেস্ক-
তথ্য অধিকার আইন ২০০৯ অনুযায়ী তথ্য সরবারাহের সহযোগিতা না করে তথ্য অধিকার আইনের প্রয়োগকে বাধাগ্রস্ত করায় শেরপুর জেলার নকলা উপজেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) সাদিয়া উম্মুল বানিন-এর বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছে তথ্য কমিশন। এই সিদ্ধান্ত তথ্য কমিশন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে সুপারিশ করা হয়। সুপারিশ বাস্তবায়নের দায়িত্ব জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের।
মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) সোয়া ১০টায় তিনি তথ্য কমিশনের কার্যালয়ে হাজির হন। বেলা ১১টায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে তথ্য কমিশনের কার্যালয়ে ব্যাখ্যা দেন তিনি। ব্যাখ্যা দেওয়া শেষে বেলা পৌনে ১টার সময় বেরিয়ে আসেন তিনি। এ সময় সাংবাদিকরা তার সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তিনি এড়িয়ে যান এবং তার হাতে থাকা ফাইল দিয়ে মুখ আড়াল করে দ্রুত হেঁটে বাইরে অপেক্ষারত সিএনজিতে গিয়ে ওঠেন।
সিএনজিতে উঠে ইউএনও বানিন সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, 'যা বলার আমি তথ্য কমিশনকে বলেছি। আমি কোনো ক্ষমতার অপব্যবহার করিনি। তিনি (রানা) অপরাধ করেছিলেন বলে তাকে শাস্তি দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও ফাইল ধরে টানাটানি ও একজন নারীকে উত্ত্যক্ত করেছিলেন তিনি।'
এ সময় সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেন, সন্তান সাথে থাকা অবস্থায় অন্য কোনো নারীর সঙ্গে অসম্মানজনক আচরণ করা যায় কী না। এমন প্রশ্নের উত্তরে চুপ হয়ে যান ইউএনও সাদিয়া উম্মুল বানিন।
উল্লেখ্য, শফিউজ্জামান তার ছেলে শাহরিয়ার জাহানকে সঙ্গে নিয়ে এডিপি প্রকল্পের কম্পিউটার ও ল্যাপটপ ক্রয়-সংক্রান্ত তথ্য চেয়ে তথ্য অধিকার আইনে ইউএনও কার্যালয়ে আবেদন জমা দেন। আবেদনটি কার্যালয়ের গোপনীয় সহকারী (সিএ) শীলার কাছে দিয়ে রিসিভড কপি (গ্রহণের অনুলিপি) চান। শীলা তাকে অপেক্ষা করতে বলেন। শফিউজ্জামান অনেকক্ষণ অপেক্ষা করার পর আবার শীলার কাছে অনুলিপি চান।তখন শীলা বলেন, ‘ইউএনওকে ছাড়া রিসিভড কপি দেওয়া যাবে না।’ পরে শফিউজ্জামান জেলা প্রশাসককে মুঠোফোনে বিষয়টি জানান। এতে ইউএনও আরও ক্ষুব্ধ হন। একপর্যায়ে নকলা থানা-পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে ইউএনও ও সিএ শীলার সঙ্গে অসদাচরণের অভিযোগে শফিউজ্জামানকে আটক করে। পরে নকলা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শিহাবুল আরিফ ওই কার্যালয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে শফিউজ্জামানকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন।
এ ঘটনার পর তথ্য অধিকার আইনে আবেদন করার পরও সাংবাদিককে তথ্য না দিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে কারাদণ্ড দেওয়ার বিষয়টি অনুসন্ধানের নির্দেশ দেয় তথ্য কমিশন।
No comments