কালীগঞ্জে ইসলামী এজেন্ট ব্যাংক থেকে বিদ্যুত বিলের টাকা গায়েব
স্টাফ রিপোর্টার-
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার মঙ্গলপৈতা বাজারের ইসলামী এজেন্ট ব্যাংক থেকে প্রবাসী এক গ্রাহকের ১৫ লাখ টাকা গায়েবের পর এবার ৫০ জন পল্লী বিদ্যুত গ্রাহকের প্রায় কয়েক লক্ষ টাকা আতœসাতের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। বিদ্যুত গ্রাহকদের বিল নিকটস্থ ইসলামী এজেন্ট ব্যাংকে জমা নেওয়া হলেও সে টাকা স্ব স্ব গ্রাহকে হিসাবে জমা না দিয়ে ব্যাংক থেকে গায়েব হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি কালীগঞ্জ পল্লী বিদ্যুত অফিস থেকে গ্রাহকের বিদ্যুত সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার জন্য গ্রাহকদের বাড়ি গেলে বিদ্যুত বিলের টাকা আতœসাতের ঘটনাটি সামনে আসে।
খোজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার ফরিয়াদকাঠি গ্রামের আসাদ বিশ্বাসের ৪ টি বিদ্যুত বিলে প্রায় ১০ হাজার টাকা, একই গ্রামের নাজির বিশ্বাসের ৩ টি বিলে ৯ হাজার ৩০০ টাকা , মঙ্গলপৌতা গ্রামের সাধন রায়ের ৪ টি বিলে ১২ হাজার ১শত টাকা ,পারখির্দ্দা গ্রামের বিল্টু হোসেনের ৪টি বিলে ১ হাজার ১৩০ টাকাসহ প্রায় অর্ধশতাধিক গ্রাহকের বিদ্যুত বিলে এজেন্ট ব্যাংকটি রেভিনিউ স্টা¤প দিয়ে বিল গ্রহন করলেও তা বিদ্যুত অফিস বুঝে পাইনি। এরপর কয়েক মাসের বকেয়া বিদ্যুত বিল আদায়ে সংযোগ বিচ্ছিন্নে নামে কালীগঞ্জ পল্লী বিদ্যুত সমিতি। সেসময় এজেন্ট ব্যাংক কর্তৃক টাকা গায়েবের বিষয়টি প্রকাশ্যে এলে এই ঘটনাটার সাথে জড়িতরা বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে।
উল্লেখ্য , এই এজেন্ট ব্যাংক থেকে ২০২৩ সালে এক মালয়েশিয়া প্রবাসীর ১৫ লাখ টাকা টাকা আতœসাতের দায়ে মঙ্গলপৈতা ইসলামি এজেন্ট ব্যাংকের সত্বাধিকারি জসিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে ওই প্রবাসীর ভাই পারখির্দ্দা গ্রামের সুজন আলী ঝিনাইদহের আমলি ম্যাজিষ্ট্রেট (কালীগঞ্জ) আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। গত ২৬ ফেব্রুয়ারী প্রতিষ্ঠানটির ইনচার্জ তরিকুল ইসলামকে ব্যাংকের ভিতর আটক করে জোর পূর্বক সাদা স্টা¤েপ সাক্ষর করিয়ে নিয়েছেন। এরপর থেকে ওই ইনচার্জ ভয়ে বাড়ি থেকে বের হচ্ছেন না বলে জানা যায়। এছাড়া এজেন্ট ব্যাংকটির আরেক কর্মকর্তা জসিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে কালীগঞ্জ থানায় ২০২৩ সালে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। অভিযোগ আছে মঙ্গলপৈতা বাজারের ইসলামী এজেন্ট ব্যাংকে দীর্ঘদিন নানা অনিয়ম হলেও ব্যাংটির তদারকিতে থাকা কালীগঞ্জ ইসলামী ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক তরিকুল ইসলাম নিশ্চুপ থাকেন। বিদ্যুত বিলের বিড়ম্বনায় পড়া পারখির্দ্দা গ্রামের বিল্টু হোসেন জানান , শুধু আমি না এ অঞ্চলের প্রায় অধিকাংশ মানুষের সাথে প্রায়ই একই রকম ঘটনা ঘটেছে। আমরা এর সঠিক বিচার চাই। তিনি বলেন, আসলে এ ব্যাংক কি দেখাশোনার কেউ নেই।
এজেন্ট ব্যাংকের অভিযোগের ব্যাপারে মঙ্গলপৈতা বাজারের ইসলামী এজেন্ট ব্যাংকের সত্বাধিকারী জসিম উদ্দিন জানান , এগুলো সব মিথ্যা। আমার বিরুদ্ধে কিছু মানুষ অপপ্রচার চালাচ্ছে।
কালীগঞ্জ ইসলামী ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক তরিকুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন , বিদ্যুত বিলের এ ঘটনা আমি জানার পর সমস্যার সমাধান করে দিয়েছি। ৫০ জন মানুষের সাথে এমনটা হয়েছিল। এটা প্রতিষ্ঠানের ইনচার্জ করেছিলেন। আমি আমার উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি বলে জানান এই কর্মকর্তা।
No comments