কালীগঞ্জে মৃত দাতা সদস্যের স্বাক্ষর জাল করে রেজুলেশন তৈরি করলেন এক প্রধান শিক্ষক
স্টাফ রিপোর্টার-
স্লিপের টাকায় মাল ক্রয়ের ভাউচারে অসংগতি, শিক্ষক প্রতিনিধি, সভাপতি ও মৃত দাতা সদস্যের স্বাক্ষর জাল করে ভূয়া রেজুলেশন তৈরি করলেন সুবর্ণসারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক প্রল্লাদ কুমার বিশ্বাস। ভূয়া রেজুলেশনের বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকা বাসির মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
এলাকা বাসীর অভিযোগে জানা গেছে, ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার ৩৬ নং সূবর্ণসারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ০১-০৯-২৩ তারিখে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসাবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন প্রহল্লাদ কুমার বিশ্বাস। তিনি দায়িত্বে থাকাকালীন সময়ে ২০২২- ২৩ অর্থ বছরে বিদ্যালয়ের উন্নয়নের জন্য সরকার কর্তৃক স্লিপের ৫০ হাজার টাকা অনুদান পান। কিন্তু তিনি ওই টাকার বাজেট অনুযায়ী স্কুলের কাজ না করে ভূয়া বিল ভাউচারের মাধ্যমে টাকা আত্মসাৎ করেন। ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিসহ সদস্যবৃন্দ উক্ত বরাদ্দকৃত টাকার মালামাল ক্রয়ের জন্য বার বার তাগাদা দিলেও, তাদের কথায় কোন কর্নপাত করেনি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বরং তিনি সমুদয় টাকা খরচ করেছেন এই মর্মে ভুয়া রেজুলেশন করে জমা দিয়েছেন কালীগঞ্জ শিক্ষা অফিসে। এভাবে জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছেন সাবেক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক প্রহল্লাদ কুমার বিশ্বাস। রুটিন মেইনটেইন্স এর বছরে ৮হাজার টাকা খরচ করার নিয়ম থাকলেও তিনি পূর্বের জমাকৃত ১৭ হাজার টাকা খরচের ভুয়া বিল ভাউচার দাখিল করেছেন।
সঠিক মনিটরিং না থাকার কারণে কালীগঞ্জে প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থা মুখ থুবড়ে পড়েছে বলে সচেতনমহল মনে করেন। একের পর এক প্রধান শিক্ষকদের দূর্নীতির খবর বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত হলেও নেওয়া হচ্ছে না তাদের বিরুদ্ধে কার্যকর কোন ব্যবস্থা।
ভূয়া রেজুলেশন করে জমা দেওয়ার বিষয়ে সাবেক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক প্রহল্লাদ কুমার বিশ্বাস স্বীকার করে বলেন, আমি ১৪-১২-২২ তারিখে ব্যাক ডেটে একটি রেজুলেশন তৈরি করি। চরম ব্যস্ততার কারণে ওই রেজুলেশনে এসএমসি কমিটির সভাপতি, দাতা সদস্য, অভিভাবক সদস্যসহ শিক্ষক প্রতিনিধি কাহারো স্বাক্ষর আমি নিতে পারিনি। তাদের স্বাক্ষর আমি নিজেই করে দিয়ে অফিসে জমা দিয়েছি। এ বিষয়ে আমি চরম ভূল করেছি,অন্যায় করেছি।
বর্তমান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক কানিজ খাদিজা বলেন, প্রহল্লাদ কুমার ৫০ হাজার টাকার মধ্যে ১৮-২০ হাজার টাকার মালমাল ক্রয় করেছে। বাকি টাকা আত্মসাতের জন্য আমার স্বাক্ষর ও কমিটির সদস্যদের স্বাক্ষর জাল করে রেজুলেশন করেছে। এবং পূর্বের রেজুলেশন ১৬-০১-২৩ তারিখে হলে পরের রেজুলেশন একই খাতায় ১৪-১২-২২ তারিখে কি করে হয়? সে যেদিন রেজুলেশনে তারিখ দেখিয়েছে আমি সেদিন স্কুলে ছিলাম কারণ হাজিরা খাতায় আমার স্বাক্ষর আছে। একারণেই সে বলতে পারে না যে আমি স্কুলে ছিলাম না।
কালীগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মাহমুদ হাসান বলেন, আমি বিষয়টি জানতাম না। আমি এ বিষয়ে এখনই ক্লাষ্টারকে বলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলবো।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আনন্দ কিশোর সাহা জানান, বিষযটি আমার জানা নেই । আমি এই মাত্র জানতে পারলাম তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহন করবো।
No comments