নারী শিক্ষক দ্বারা পরিচয় নিশ্চিত করে ভাইভা নেয়া হলো সেই ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীর
ইবি প্রতিনিধি-
সম্প্রতি নেকাব না খোলায় সেমিস্টার ফাইনালের মৌখিক পরীক্ষায় (ভাইভা) অংশ নিতে পারেননি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) এক নারী শিক্ষার্থী। গত ১৩ই ডিসেম্বর হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষার ভাইভায় এই ঘটনা ঘটে। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে ক্যাম্পাসে দুই দফায় প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন কর্মসূচি করে শিক্ষার্থীরা।
তবে ভিসির নির্দেশে ফের ওই ছাত্রীর ভাইভা নিয়েছে বিভাগটি। শনিবার (২৭ জানুয়ারি) নেকাব না খুলেই ভাইভায় অংশ নিয়েছেন তিনি। সকাল ১১ টায় ওই ছাত্রীর ভাইভা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিভাগের সভাপতি শিমুল রায়।
তিনি জানান, ভাইভা ঠিকমতো সম্পন্ন হয়েছে। ভাইভার আগে নারী শিক্ষক দ্বারা ওই ছাত্রীর পরিচয় নিশ্চিত করা হয়। এর আগে ভিসি স্যার আমাদের ডেকে ভাইভা নিতে বলেছিলেন।
বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ভাইভা বোর্ডে বিভাগের সভাপতি শিমুল রায়, সহকারী অধ্যাপক মোঃ শহিদুল ইসলাম ও উম্মে সালমা লুনা উপস্থিত ছিলেন।
ভাইভা শেষে ওই ছাত্রী বলেন, বিভাগের পক্ষ থেকে নেকাব না খোলার আশ্বাস পেয়ে ভাইভাতে অংশগ্রহণ করেছি। ভাইভা ঠিকঠাকমতোই হয়েছে। বোর্ডে স্যার ম্যামরাও অনেক আন্তরিক ছিলেন। ভবিষ্যতে অন্য কারোর সঙ্গে যেন এইরকম না ঘটে সেটাই আমার চাওয়া।
উল্লেখ্য, গত ১৩ ডিসেম্বর হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ১ম বর্ষের সেমিস্টার ফাইনালের ভাইভায় এক নারী শিক্ষার্থী নেকাব পরে অংশগ্রহণ করেন। ভাইভা বোর্ডে হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য পদ্ধতি বিভাগে অধ্যাপক ড. কাজী আখতার হোসেন, হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সভাপতি শিমুল রায়, পরীক্ষা কমিটির সভাপতি উম্মে সালমা লুনা ও বিভাগের শিক্ষক শহিদুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। এসময় ভাইভা বোর্ডের শিক্ষকরা ওই ছাত্রীর পরিচয় নিশ্চিতের জন্য নেকাব খুলতে বলেন।
তবে ওই ছাত্রী নেকাব খুলতে অস্বীকৃতি জানায় এবং প্রয়োজনে নারী শিক্ষকের মাধ্যমে পরিচয় নিশ্চিত করতে অনুরোধ করেন। কিন্তু ভাইভা বোর্ডের সদস্যদের সামনে তাকে নেকাব খুলতে বলা হয়। তবে নেকাব না খোলায় তার ভাইভা নেয়া হয়নি। বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে দেশব্যাপী আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়।
গত ২১ ও ২২ জানুয়ারি দুই দফায় ক্যাম্পাসে মানববন্ধন কর্মসূচি ও কর্তৃপক্ষের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেন শিক্ষার্থীরা। এসময় তারা ওই ছাত্রীর ফের ভাইভা নেয়াসহ ক্যাম্পাসে ধর্ম পালনে স্বাধীনতা নিশ্চিতের দাবি জানান। পরে ভিসির নির্দেশে ওই ছাত্রীকে ভাইভার জন্য ডাকে বিভাগটি।
No comments