ঝিনাইদহের শৈলকুপার খুলুমবাড়ি ঘাটে ব্রিজ নির্মাণ করা হলে বদলে দিতে পারে চার জেলার আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন
ঝিনাইদহের শৈলকুপার খুলুমবাড়ি গড়াই নদীর একটি ব্রিজ বদলে দিতে পারে চার জেলার আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন। শৈলকুপা উপজেলার খুলুমবাড়িয়া ও অপরপ্রান্তের রাজবাড়ি জেলার পাংশা উপজেলার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া গড়াই নদীর ওপরে একটি ব্রিজ নির্মাণ করা হলে পুরোপরি পাল্টে দিতে পারে ঝিনাইদহ, রাজবাড়ি, কুষ্টিয়া ও মাগুরা জেলার মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন। আর দূরত্ব কমে গেলে সড়ক যোগাযোগে রাখতে পারে যুগান্তকারি ভূমিকা। রাজধানী ঢাকার সাথে আরো নিবিড় হতে পারে যোগাযোগ ব্যবস্থা। এমন কথাই বলছেন ঝিনাইদহ ও রাজবাড়ি এলাকার কৃষক, সাধারন মানুষ, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, পরিবহনমালিক ও শ্রমিক এবং জাতীয় সংসদের সদস্যরা। জাতীয় সংসদের দু’জন সদস্য এব্যাপারে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে ডেমি অফিসিয়াল লেটার বা ডিও লেটার দিয়েছেন বলে জানালেন ওই দুই সংসদ সদস্য।
শৈলকুপা উপজেলার খুলুমবাড়িয়া প্রান্তের সাধারন মানুষের সাথে কথা বলে জানা যায়, খুলুমবাড়িয়া বাজারটি বৃটিশ আমল থেকে একটি প্রসিদ্ধ ব্যবসায় কেন্দ্র হওয়ায় ঝিনাইদহ, রাজবাড়ি, কুষ্টিয়া ও মাগুরা জেলার মানুষের কাছে অতি গুরুত্বপূর্ণ। মাসে কয়েক কোটি টাকার কৃষিপণ্য কেনাবেচা হয় এ বাজারটিতে। গড়াই নদীর পাড়ের এ বাজারটি ঘিরে গড়ে উঠেছে স্কুল, কলেজ ও অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক-বিমা এবং অন্য প্রতিষ্ঠানসমূহ। কয়েকশ শিক্ষার্থীও এ এলাকা দিয়েই ঝিনাইদহ জেলা সদরসহ অন্য জেলা এবং ইসলামি বিশ^বিদ্যালয়ে যাতায়াত করে। কিন্তু পারাপারের সময় ভরসা মাত্র একটি নৌকা।
খুলুমবাড়িয়া বাজারের ব্যবসায়িরা জানালেন, আশেপাশের এলাকা থেকে তাদের বাজারে কৃষিপণ্য পরিবহনে একদিকে যেমন প্রচুর টাকা ব্যয় হয়, সময়ও লাগে বেশি। এতে তারা আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েন। কয়েকজন ব্যবসায়ি জানালেন, খুলুমবাড়িয়া বাজারের গড়াই নদির ঘাটে ব্রিজ না থাকায় নদি পার হয়ে তাদের পাশের রাজবাড়ি জেলার পাংশা উপজেলার বাসকাউন্টারে যেতে হয় রাজধানি ঢাকা বা অন্য কোথাও যেতে। এতে সময়, অর্থ ও শ্রমসবই বেশি লাগে। কলিমোহর ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ রাশেদুল কবীরের সাথে আলাপ করলে তিনি জানান, তার কলেজের অসংখ্য শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদেরকে প্রতিদিন খুলুমবাড়িয়া ঘাটের নদী পার হতে হয় নৌকা যোগে। এতে শিক্ষক ও কোমলমতি শিক্ষার্থীদের জীবনের ঝুঁকি থেকেই যায়।
রাজবাড়ির পাংশা উপজেলায় অবস্থিত অর্থাৎ খুলুমবাড়িয়া বাজারের বিপরিত প্রান্তেÍর কসবামাজাইল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান তরুণ রাজনীতিবিদ শাহরিয়ার সুফল মাহমুদের সাথে কথা বললে তিনি ক্ষোভের সাথে জানালেন, গড়াই নদীর ঘাটে ব্রিজ না থাাকায় তাদের এলাকার লোকজনকে আশে পাশের কোথাও যেতে হলে ৩-৪ ঘন্টা রাস্তা বেশি ঘুরে যেতে হয়। এতে অতিরিক্ত টাকা খরচ এবং সময় নিয়ে যাত্রা করতে হয়। এতে তাদের এলাকাসহ আশেপাশের এলাকার অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন কর্র্মকান্ড বাঁধাগ্রস্ত হচ্ছে। বঙ্গবন্ধুকণ্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমলে তাদের এলাকা যোগাযোগে বিচ্ছিন্ন হয়ে সারাদেশের সাথে উন্নয়নে অংশীদার হতে পারবে না এটা ভাবাও যায় না। তাছাড়া, প্রস্তাবিত ব্রিজ থেকে সরকার বছরে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব পেতে পারে যা দেশের অর্থনৈতিক পূণর্গঠনে ভূমিকা রাখবে।
ঝিনাইদহ-১ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য আবদুল হাই এবং রাজবাড়ির জাতীয় সংসদ সদস্য জিল্লুল হাকিম এর সাথে পৃথক আলাপকালে তারা জানালেন, এব্যাপারে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে তারা বছর দু’য়েক আগে ডেমি অফিসিয়াল লেটার বা ডিও লেটার দিয়েছেন। তবে বিষয়টি এখনও সুরাহা না হওয়ার কারণ তারা জানেন না। প্রস্তাবিত ব্রিজটি নির্মাণ হলে তা ঝিনাইদহ, রাজবাড়ি, কুষ্টিয়া ও মাগুরা জেলার মানুষের জন্য আশির্বাদ বয়ে আনবে। তারা অবিলম্বে ব্র্রিজটি নির্মাণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন।
No comments