কোটচাঁদপুরে ভূয়া কোম্পানী দেখিয়ে কৃষকের জমি ক্রয়, টাকা না দিয়ে উল্টো চেক চুরির মামলা
ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে ভূয়া কোম্পী দেখিয়ে ৬ টি পরিবারের কাছ থেকে জমি নিয়ে প্রতারণা করার অভিযোগ উঠেছে মশিউল আজম খাঁন নামের এক প্রতারকের বিরুদ্ধে। জমি বিক্রির সময় নগদ টাকা না দিয়ে চেক দিয়ে এখন সেই চেক চুরির মামলায় আদালতে ঘুরছেন ভুক্তভোগী ওই ৬ টি পরিবারের সদস্যরা। যার মধ্যে বয়স্ক নারীও রয়েছে। প্রতারক মশিউল আজম খাঁন’র এমন প্রতারণায় সর্বশান্ত হয়ে গেছে পরিবারগুলো। শুধু তাই না এখন জমিতে গেলে মারধর, হুমকি ও মিথ্যা মামলায় হয়রানিও করার হচ্ছে তাদের।
জানা যায়, কোটচাঁদপুর উপজেলার লক্ষীকুন্ডু গ্রামে এগ্রো ফার্ম তৈরীর কথা বলে ‘বাংলার জমিন এ্যাগ্রো ফার্ম লিমিটেডের’ চেয়ারম্যান পরিচয় দেন ঢাকা জেলার শাহাদাত হোসেন বাবলু, এমডি মশিউল আজম খাঁন ও ডিএমডি কুষ্টিয়া জেলার সরোয়ার হোসেন কোটচাঁদপুরে আসেন। প্রলোভন দেখিয়ে ২০১৩ সালে ওই গ্রামের তিন ভাই ওলিয়ার রহমান খাঁন,খায়রুল ইসলাম খাঁন, মশিউল আজম খাঁন এবং তিন বোন মোছাম্মদ ফাতেমা খাতুন, মোছাম্মদ হালিমা খাতুন ও মোছাম্মদ আফরোজা খাতুনের কাছ থেকে ২শত ১৩ শতক একর মাঠের জমি রেজিস্ট্রি করে নেন কোম্পানীর নামে। এরপর টাকা না দিয়ে দিনের পর দিন ঘুরাইতে থাকে। কিছুদিন পর কোম্পানীর নামে অগ্রনী ব্যাংকের ৯ কোটি টাকা করে স্বাক্ষরিত তিনটি চেক তিন বোনকে দেওয়া হয়। ওই চেক ব্যাংকে নিয়ে টাকা উঠাতে গিয়ে দেখেন একাউন্টে কোন টাকা নেই। উপায় না পেয়ে কোম্পানীর নামে আদালতে ২৭ কোটি টাকার মামলা করেন তিন বোন। এরপর ২০১৫ সালে কোম্পানীর ডিএমপি সরোয়ার হোসেন বাদী হয়ে তিন বোনের নামে চেক চুরি মামলা দায়ের করেন ঢাকার পল্টন থানায়। প্রতারনার ঘটনাটি সকলে বুঝতে পেরে জমি ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য আদালতে মামলা করেন জমিদাতারা। সেই থেকে চলছে পাল্টাপাল্টি মামলা দায়ের। হঠাৎ করে জমিদাতা ও কোম্পানীর এমডি মশিউল আজম খাঁন সব জমি তার বলে দাবী করছেন। জমিদাতার দখলে থাকা জমিতে ১৪৪ধারা জারি ও দফায় দফায় করে পুলিশ দিয়ে হয়রানী করার অভিযোগ তাদের। এতে নষ্ট হচ্ছে জমিতে থাকা মাল্টা, সৌদি খেজুর ও পেয়ারা।
ক্ষতিগ্রস্থ ওলিয়ার রহমান খাঁন বলেন, আমাদের কাছ থেকে প্রতারণা করে টাকা না দিয়ে জমির রেজিস্ট্রি করে নিলো। ২০১৩ সালে জমি নিয়ে টাকা দিলো না। আমরা জমিটি ফেরত পেতে মামলা করেছি। এতদিন আমরা জমিতে ভোগদখল করে আসছি। কিন্তু এখন হঠাৎ করে প্রতারক মশিউল আজম খাঁন বলছে জমি তার। মুলত কোম্পীনই ভুয়া। তারপরও সেই কোম্পানীর সাথে আদালতে আমাদের মামলা চলছে। এখন প্রতারক মশিউল আজম খাঁন বলছে জমি তার। এছাড়াও তিনি আমাদের নানাভাবে হয়রানি করছে। আমরা এই প্রতারকের হাত থেকে বাঁচতে চাই। আমরা আমাদের জমি ফেরত চাই।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত প্রতারক মশিউল আজম খাঁন’কে একাধিক বার কল দেওয়া হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।
No comments