মারা গেছেন সাবেক সংসদ সদস্য নুরে আলম সিদ্দিকী
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি-
মারা গেছেন স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক ও সাবেক সংসদ সদস্য মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক নূরে আলম সিদ্দিকী। বুধবার ভোরে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮২ বছর। ১৯৪৪ সালে ঝিনাইদহের তার জন্ম হয়। নুরে আলম সিদ্দিকী ঝিনাইদহ হাই স্কুল থেকে মেট্টিক পাশের পর কিছুদিন ঝিনাইদহ কেসি কলেজে পড়াশোনা করেন। এরপর ঢাকা জগন্নাথ কলেজে ভর্তি হন। সেখান থেকে পাশ করার পর ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। নুরে আলমের পিতা নুরুন্নবী সিদ্দিকী হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর অনুসারী ছিলেন। নুরে আলম সিদ্দিকী স্কুল জীবনে ছাত্র রাজনীতির সাথে জড়িয়ে পড়েন। ঢাকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে তার পরিচয় হয়। তখন থেকেই তিনি ছাত্রলীগের একনিষ্ঠ কর্মী হন। ১৯৬৬ সালে ৬ দফা আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন। ওই বছরের ৭ জুন ৬ দফা আন্দোলনের একটি বিক্ষোভ মিছিলের নেতৃত্ব দেন। আন্দোলনকারীদের উপর পুলিশের গুলিবর্ষণে মনু মিয়া নামে একজন শ্রমিক নিহত হন। নুরে আলম সিদ্দিকী মনু মিয়ার লাশ কাধে নিয়ে মিছিল করেন। ওই বছরেই বঙ্গবন্ধুসহ আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করে পুলিশ। নুরে আলম সিদ্দিকীকেও গ্রেফতার করা হয়। পুলিশি নির্যাতনে তার একটি হাত ভেঙ্গে যায়। নুরে আলম সিদ্দিকী ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ১৯৭০-১৯৭২ মেয়াদে ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। মুকিযুদ্ধকালে নুরে আলম সিদ্দিকী স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক ছিলেন। যুদ্দকালীন সময়ে ভারতে থেকে মুুক্তিযুদ্ধের সংগঠকের ভূমিকা পালন করেন। দেশ স্বাধীনের পর তিনি আওয়ামী যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৭৩ সালে ঝিনাইদহ-২ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ ও ২০০১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে তিনি ঝিনাইদহ-২ আসন থেকে অংশ নিয়েছিলেন।
নূরে আলম সিদ্দিকীকে মুক্তিযুদ্ধের ‘চার খলিফার একজন’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়। মুজিববাহিনীর অন্যতম কর্ণধার ছিলেন তিনি। তিনি প্রাক্তন ছাত্রলীগ ফাউন্ডেশনের আহ্বায়ক ছিলেন।
বুধবার সকালে তার মরদেহ ঝিনাইদহে আনা হয়। বাদ যোহর ঝিনাইদহ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়। পরে সেকানে জানাযা শেষে আবারো মরদেহ ঢাকায় নেওয়া হয়।
No comments