কুষ্টিয়া চলছে ৩দিন ব্যাপী লালন স্মরণোৎসব

 

নাইমুর রহমান, ইবি প্রতিনিধি-
কুষ্টিয়া কুমারখালি উপজেলায় শুরু হয়েছে তিন দিন ব্যাপী লালন স্মরণোৎসব। অনুষ্ঠিতব্য লালন স্মরণোৎসব-২০২২ -এ ১৭, ১৮, ১৯ই অক্টোবর এই তিনদিন ব্যাপী দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সাধু, ফকির, বাউল, ভক্ত, পাগল ও দর্শনার্থীরা আসছে লালনের মাজারে। এবছর আত্নাধিক সাধক বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহের ১৩২ তম তিরোধান দিবস।

ফকির লালন সাঁইজী ১৭৭৪ সালে তৎকালীন অবিভক্ত ভারতবর্ষের নদীয়া জেলার অন্তর্গত মহকুমা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বর্তমানে কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী উপজেলার অন্তর্ভুক্ত। গড়াই নদীর তীর ঘেঁষে গড়ে ওঠা ভাড়ারা গ্রামের হিন্দু পরিবারে তার জন্ম। শৈশবে লালন বাবাকে হারানোর পরে দরিদ্রতার মাঝে বেড়ে উঠে। সংসারে দরিদ্রতার কারনে লেখাপড়ার সুযোগ হয়নি। শৈশব থেকেই লালন কবিগান, পালাগান, কীর্তন সহ নানা রকম গানের সাথে জড়িত ছিলেন।

যৌবনের শুরুতে পূন্যলাভের আশায় লালন মুর্শিদাবাদে গঙ্গায় স্নানে যান। গঙ্গা স্নান সেরে ফেরার পথে বসন্ত রোগে আক্রান্ত হয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। সঙ্গী-সাথীরা তাঁকে মৃত ভেবে মুখাগ্নি করে নদীর পানিতে ভাসিয়ে দেয়। নদীতে পানি আনতে গিয়ে কলসি কাখে এক মুসলিম মহিলা জীবন্ত মানুষকে পানিতে ভাসতে দেখে । মহিলাটির সেবা শশ্রুষা পেয়ে লালন সুস্থ্য হয়ে ওঠে। সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরলে তার ধর্মের সমাজপতিরা তাকে ধর্মের অজুহাত দিয়ে সমাজ থেকে বিচ্যুর করে দেয়। পরে  সিরাজ সাঁইয়ের সাথে সাক্ষাত হলে তার সান্নিধ্যে এসে তাকে গুরু হিসেবে গ্রহণ করে

গুরু সিরাজ সাঁই এর নির্দেশে লালন কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী উপজেলার আখড়া নির্মাণ করে। প্রথম দিকে লালন বনের মধ্যে একটি আম গাছের নীচে ধ্যানে মগ্ন থাকতেন। এই সাধক পুরুষের কথা গ্রামের সবার কাছে পৌঁছে গেলে এলাকার মনুষ তাঁর শিষ্যত্ব গ্রহন করা শুরু করে। 

১২৯৭খ্রী. পহেলা কার্তিক আধ্মাতিক সাধক লালন শাহ-এর ওফাত হয়। এরপর থেকে লালনের অনুসারীরা প্রতিবছর ছেঁউড়িয়ার আঁখড়া বাড়িতে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে এদিবস উপলক্ষে লালন স্মরণোৎসব পালন করে আসছে। উৎসবের ৩ দিন লালনের আঁখড়াবাড়ির ভিতরে ও আশপাশের অঞ্চল জুড়ে ছোট-ছোট দলে ভাগ হয়ে বাউল ভক্তরা গাইবেন লালনের গান। এছাড়াও লালন মঞ্চে থাকছে সারারাত গানের আয়োজন।

No comments

Powered by Blogger.