ঝিনাইদহের শৈলকুপায় প্রধানমন্ত্রীকে বঙ্গবন্ধুর দেওয়া চেকটি উপহার দিতে চান মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী

 

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি -   বঙ্গবন্ধুর পাঠানো চেক ৪৭ বছর ধরে যত্ন সহসহকারে আগলে রেখেছেন নিহত বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ কোবাদ আলীর স্ত্রী সুরাইয়া খাতুন (৭৮)ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার এই মুক্তিযোদ্ধা ১৯৭৪ সালের ডিসেম্বর আততায়ীর গুলিতে নিহত হন। মৃত্যুর পর ১৯৭৫ সালের ২৮ জুলাই জাতীর পিতা তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমান ত্রাণ কল্যাণ তহবিল থেকে সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে ডাকযোগে দুই হাজার টাকার একটি চেক পাঠান। চেক পাঠানোর মাত্র ১৬ দিন পর হত্যাকাণ্ডের শিকার হন বঙ্গবন্ধু। চেকের সত্যতা নিশ্চিত করেছে মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের প্রত্যয়নপত্র

 সুরাইয়া খাতুন বলেন, আমার স্বামী মুক্তিবাহিনীর সদস্য ছিলেন। ছোট ছেলে গর্ভে থাকা অবস্থায় তাকে গুলি গুলি করে মেরে ফেলা হয়। তখন বঙ্গবন্ধু আমাকে এই চেক দেন। আমি চেকটি ভাঙাইনি, ছেলেদেরও ভাঙাতে দেইনি। এখন আমার বয়স হয়েছে, আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে চেকটি তুলে দিতে চাই। এর বিনিময়ে আমি কিছুই চাই না

পরিবার ঝিনাইদহ জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের প্রত্যয়ন সূত্রে জানা যায়, শৈলকুপা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীর উপপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে ১৯৭৪ সালের ডিসেম্বর রাতে উপজেলার কচুয়া বাজার কাঁচের পুল এলাকায় আততায়ীর গুলিতে নিহত হন কোবাদ আলী। তিনি স্বাধীনতাপূর্ব বিভিন্ন গণ-আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছিলেন। ১৯৭১ সালে নিজ এলাকায় মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক হিসেবে কাজ শুরু করেন তিনি। একপর্যায়ে প্রশিক্ষণের জন্য ভারতে যান। ওই বছর  তিনি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। স্বাধীনতার পর তিনি বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে সাড়া দিয়ে দেশ গঠনে আত্মনিয়োগ করেন

কোবাদ আলীর বড় সন্তান কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ হিসাব বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জাকির হোসেন বলেন, মা আমাদের ছয় ভাই-বোনকে অনেক কষ্টে মানুষ করেছেন। ওই সময় চেকটির মূল্যমান অনেক হলেও বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর পর তিনি চেকটি না ভাঙিয়ে যত্ন করে রেখে দেন। বাঁধাই করে সংরক্ষণে রাখা চেকটি আমাদের কাছে পারিবারিক সম্পদে পরিণত হয়েছে। অনেক সংস্থা জাদুঘর থেকে চেকটি চেয়েছিল, আমরা দেইনি

 

 

No comments

Powered by Blogger.