ঝিনাইদহে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী গরুর গাড়ীর দৌড় প্রতিযোগিতা
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি-
প্রতি বছরের ন্যায় এবারও ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বেতাই গ্রামে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল গ্রাম বাংলার ঐহিত্যবাহী গরুর গাড়ীর দৌড় প্রতিযোগিতা। গান্না ইউনিয়নের নব-নির্বাচিত চেয়ারম্যান আতিকুল হাসান মাসুম আয়োজন করে মনোমুগ্ধকর এই প্রতিযোগিতা। যা দেখতে ভীড় করেছিল হাজার হাজার দর্শক। প্রতিযোগিতাকে ঘিরে বেতাই গ্রাম যেন পরিণত হয়েছিল উৎসবের নগরীতে।
রোববার সকালে বেতাই গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, কনকনে শীত আর বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করেই সকাল থেকে বেতাই গ্রামের মাঠে হাজির হয় ঝিনাইদসহ আশপাশের জেলার হাজার হাজার মানুষ। ভ্যান, রিক্সা মোটর সাইকেলসহ নানা বাহনে সেখানে জড়ো হয় নারী-শিশু বয়োবৃদ্ধরা। মঞ্চ থেকে প্রায় ১ কিলোমিটার দুরে গরু ও গাড়ী নিয়ে ৬ টি সারিতে চলে দৌড়ের প্রস্তুতি। বাঁশিতে ফুৎকার দেওয়ার সাথে সাথে গাড়োয়ানের হাতের ছোঁয়ায় যেন মুহূর্তে পাল্টে যায় চরিত্র। একে অপরকে পেছনে ফেলতে ছুটতে থাকে বিদ্যুৎ গতিতে। যা দেখে উচ্ছসিত হাজার হাজার দর্শক।
কালীগঞ্জ উপজেলার ত্রিলোচনপুর গ্রাম থেকে আসা কলেজ ছাত্র রাব্বি হোসেন বলেন, গ্রাম বাংলা ঐহিত্য গরুর গাড়ীর দৌড় প্রতিযোগিতা সত্যিই খুবই মনোমুগ্ধকর। এটা দেখতে যে কত ভালো লাগছে তা বলে বোঝানো যাবে না। এই খেলা দেখতে হাজার হাজার মানুষ জড়ো হয়েছে। মানুষের মাঝে এক ধরনের আনন্দ কাজ করছে। প্রতিবছর এই আয়োজন করা উচিত।
ঝিনাইদহ শহর থেকে আসা অন্তর মাহমুদ নামে এক যুবক বলেন, এ অঞ্চলের ঐহিত্য যে গরুর গাড়ীর দৌড় প্রতিযোগিতা। আমরা শুনে আসছি এখানে এই আয়োজন করা হয়। আমরা বন্ধুরা মিলে দেখতে এসেছি। খুবই ভালো লাগছে খেলা দেখতে। গ্রামের মানুষের মাঝে প্রাণের সঞ্চার হয়েছে। খেলাটি সত্যিই উপভোগ্য। এ জন্য আয়োজকদের আমরা ধন্যবাদ জানায়।
খেলায় অংশ নেয় ঝিনাইদহ সদর উপজেলার জিয়ালা গ্রামে কবির হোসেন বলেন, আমরা সারাবছর চাষাবাদ করি। বছরের এই সময়টা অপেক্ষায় থাকি এই খেলায় অংশ নেওয়ার জন্য। মানুষ আমাদের খেলা দেখে আনন্দ পায় তা দেখে আমরাও আনন্দ পায়। আনন্দ পাওয়ার জন্যই আমরা দৌড় প্রতিযোগিতায় অংশ নিই।
এ ব্যাপারে আয়োজক গান্না ইউনিয়নের নব-নির্বাচিত চেয়ারম্যান আতিকুল হাসান মাসুম বলেন, গ্রামের খেটে খাওয়া মানুষকে আনন্দ দেওয়া আর গ্রামীণ ঐতিহ্য ধরে রাখতেই আমরা প্রতিবছর এই ধরনের আয়োজন করে থাকি। শীত আর বৃষ্টি উপেক্ষা করে হাজার হাজার মানুষ খেলা দেখতে এখানে এসেছেন তাতেই প্রমাণ হয় এটি মানুষকে কতটা আনন্দ দেয়। আমরা আশা করি আগামীতে আরও বড় পরিসরে এই আয়োজন করতে পারব।
দিনভর প্রতিযোগিতা শেষে সবাইকে পেছনে ফেলে প্রথম হয় যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার নজরুল মুন্সি। পুরস্কার হিসেবে তাকে দেওয়া হয় টেলিভিশন। ২য় হয় মহেশপুর উপজেলার দোলন হোসেন। তাকে দেওয়া হয় একটি বাইসাইকেল ও ৩য় হয়ে ফ্যান পুরস্কার পান যশোরের রহমত আলী।
No comments