হস্তান্তরের কয়েক মাসের মধ্যেই ভেঙ্গে পড়লো ঝিনাইদহের আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরের খুটি, ফাটল ধরেছে অন্যান্যা ঘরেও
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি-
হস্তান্তরের কয়েক মাসের মধ্যেই ভেঙ্গে পড়েছে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার লাউদিয়া গ্রামের মুজিব বর্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহার আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরের খুঁটি। অন্যান্য ঘরগুলোতেও দেখা দিয়েছে ফাটল। নেই বিদ্যুৎ বা সুপেয় পানির পর্যাপ্ত ব্যবস্থা। ঘর ভেঙ্গে পড়ায় আতংক দেখা দিয়েছে ওই প্রকল্পে বাসিন্দাদের মাঝে।
শনিবার সকালে লাউদিয়া গ্রামের আশ্রয়ন প্রকল্পে গিয়ে দেখা যায়, আবাসনের ১ নং ঘরের ডানপাশের খুঁটি ভেঙ্গে পড়ে আছে। মাটিতে পড়ে ভেঙ্গে কয়েকটুকরো হয়ে গেছে। ঘর ঠেকাতে সেখানে বাশের খুটি দেওয়া হয়েছে।
ঘরের বাসিন্দা ফাতেমা খাতুন জানান, শুক্রবার রাত ১০ টার পরে ঘরের সামনে জোরে কিছু ভেঙ্গে পড়ার শব্দ শুনতে পান তারা। বাইরে বেরিয়ে দেখতে পান ঘরের সামনের ডান পাশের খুটিটি ভেঙ্গে পড়ে আছে। ভেঙ্গে কয়েক টুকরো হয়ে গেছে। ফাতেমা খাতুন বলেন, খুটি ভাঙ্গে পড়ার পর থেকে খুব ভয়ে আছি। কখন জানি ঘর ভাঙ্গে মাথায় পড়ে এই ভয়ে ভয়ে রাত কাটাইছি।
ওই আশ্রয়ন প্রকল্পের অন্যান্যনা বাসিন্দাদের রয়েছে নানা অভিযোগ। বাড়িতে যাওয়ার রাস্তাটিও ব্যবহারের অনুপযোগী। পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই সুপেয় পানির। নিম্ন মানের উপকরণ দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে ঘরগুলো। যে কারণে কয়েকমাসের মধ্যেই ভেঙ্গে পড়েছে বলে অভিযোগ বাসিন্দা ও স্থানীয়দের।
ঘরের বাসিন্দা তারা খাতুন বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাগের ঘর দিয়েছে। আমার এতে খুব খুশি। কিন্তুক সেই ঘরে যুদি থাকতি না পারি তাহলে নিয়ে কি করব। সরকার তো কম দিই নি। এই ঘর যারা বানাইছে তারা টাকা মারে খাইছে। এই জন্যি আজ এই দশা।
তারাবানু নামের এক বাসিন্দা বলেন, প্রত্যেক ঘরেই এক অবস্থা। জোরে ঝড় হলি তো ভাঙ্গে পড়বে। এর মদ্যি থাকতি তো ভয় করে। কখন যানি ঘর ভাঙ্গে মাথায় পড়ে। এই ভয়ে থাকি। যদি দ্যাও ভালোতা দ্যাও। না দিলি দরকার নেই। এসব কুমা জিনিস দিয়ে ঘর বানানোর দরকার কি।
লাউদিয়া গ্রামের বাসিন্দা সাহেব আলী বলেন, ঘরগুলো তৈরী করেছে কিন্তু তার সামনে যে রাস্তা সেই রাস্তা দিয়ে গরুও হাটতে চায় না। আর যে খুটি ভেঙ্গে পড়েছে সেই খুটি মনে করেন ৫ ফিট। সেখানে ২ ফিট রড দিয়ে খুটি বানাইছে। ঠিকমত সিমেন্টও দিইনি। তাহলে খুটি থাকবে কি করে।
ঝিনাইদহ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম শাহীন বলেন, সরকারের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন করার জন্য রাতের আধাঁরে কে বা কারা এই কাজটি করেছে।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মজিবর রহমান বলেন, ঘটনা শোনার পর সেখানে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে পাঠানো হয়েছে। এছাড়াও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে পাঠানো হয়েছে। তারা ঘুরে এসে বিষয়টি জানালে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
No comments