“সুখের সন্ধানে”
“ সুখের সন্ধানে” বইটির প্রকাশ পূর্ব কিছু কথা :
আলহাজ¦ এম. এ. কাদের
(সাংবাদিক ও কলামিষ্ট)
সমাজের অবক্ষয়, অনিয়ম, অসঙ্গতি, অবনিত, দুর্নীতি নিরসনে লক্ষ্যে সময়োপয়োগী বিষয়ে আমি কলাম লিখে আসছি। এরই ধারাবাহিকতায় আমার লেখা “ সুখের সন্ধানে” বইটি প্রকাশ করতে যাচ্ছি। আমরা সবাই সুখের আশায় অধিক অর্থ বিত্তের সন্ধানে বিরামহীন ভাবে মরীচিকার পিছনে ছুটে সুখ নষ্ট করছি। প্রকৃত সুখের সন্ধান দিতেই সময়ের সাথে মিল রেখে কিছু পরামর্শ নিয়ে পত্রিকায় আজ থেকে প্রতি সোম ও মঙ্গল বার ধারাবাহিক ভাবে ৯টি পর্বে “ সুখের সন্ধানে” বইটি সকলের জন্য প্রকাশিত হতে যাচ্ছে। আশাকরি বইটি পাঠকের জীবন সাজাতে ও প্রকৃত সুখের সন্ধান পেতে উপকারে আসবে।
লেখক পরিচিতি ঃ আলহাজ¦ এম.এ কাদের ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ শহর সংলগ্ন ফয়লা গ্রামে ১৯৫৮ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি জন্মগ্রহন করেন। তাঁর পিতা আলহাজ¦ মোঃ বদর উদ্দীন এবং মাতা আলহাজ¦ হাওয়াতুন নেছা। তিনি কালীগঞ্জ নলডাঙ্গা ভূষণ মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এস.এস.সি ,ঢাকা আই ডিয়াল কলেজ থেকে এইচ.এস.সি ও ১৯৮৬ সালে বি.এ পাস করেন। ১৯৯০ সাল থেকে ঢাকা থেকে প্রকাশিত দৈনিক গনজাগরন ও বাংলার আওয়াজে থানা প্রতিনিধি হিসাবে এবং ১৯৯২ সাল থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ ২০ বছর তিনি বাংলাবাজার পত্রিকার থানা ও জেলা প্রতিনিধি হিসাবে কর্মরত ছিলেন। ২০১৪ সাল থেকে তিনি স্থানীয় দৈনিক নবচিত্রের স্টাফ রিপোর্টার হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন, একই সাথে দৈনিক ইত্তেফাক, জনকন্ঠ, যায়যায়দিন, যুগান্তর, সংবাদ, ইনকিলাব,সমকাল,বনিক বার্তা,ভোরের কাগজ,নয়া দিগান্ত ও সংগ্রাম সহ শীর্ষ স্থানীয় অধিকাংশ দৈনিকেই এবং অনলাইন পত্রকিা চত্রিা নউিজ ২৪ ডট কম য়ে সমাজের অনিয়ম, অসংগতি ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে তাঁর নির্দেশনা মূলক অসংখ্য কলাম দীর্ষদিন ধরে প্রকাশিত হয়ে আসছে। তিনি ১৯৯৭ সালে কালীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারন সম্পাদক ও ২০০০ সালে সভাপতি হিসাবে অত্যন্ত সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ থানার একজন সফল ব্যবসায়ী এবং স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান ইউনিভার্স্যাল পোল্ট্রী হ্যাচারীজ লিঃ প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক।
“সুখের সন্ধানে”
আলহাজ¦ এম. এ. কাদের
(সাংবাদিক ও কলামিষ্ট)
মহান আল্লাহর নামে এমন একটি বিষয়ে আলোচনা করতে যাচ্ছি, যে বিষয়ে আজ অবধি অনেক বিজ্ঞ লেখক তাঁদের লেখার মাধ্যমে স্ষ্ঠুু সমাধান দেয়ার চেষ্টা করেছেন। বিষয়টি অতীব গুরুত্বপূর্ণ। তাই সঠিক ভাবে আলোচনা করা অত্যন্ত জটিল, তবুও গবেষণামূলক আলোচনান্তে কিছু সমাধান দেয়ার চেষ্টা করেছি। বইটি পড়ে পাঠকের যদি ভাল লাগে তাহলে আমার চেষ্টা কিছুটা সার্থক হবে। বইটি পড়ার পর যদি কোন পরামর্শ থাকে তাহলে অবশ্যই আমার ফোন নম্বরে অথবা ইমেইল এ জানালে কৃতজ্ঞ থাকবো।
পৃথিবীতে সকল জীবই জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত সুখের সন্ধানে ব্যস্ত থাকে। এটাই জাগতিক নিয়ম। সুখ অনুসন্ধান করতে গিয়ে বইটি লেখার আগ্রহ সৃষ্টি হলো। আমার বয়স ষাটোধ্ব। জীবনের এই পড়ন্ত বেলায় মনে হচ্ছে, জ্ঞান, বিবেক, বুদ্ধি হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত আমার অনেক কাজই অসমাপ্ত রয়ে গেছে কর্মজীবনে অনেক কিছু ভুল করে ফেলেছি। আর এই গুলো আর সংশোধন যোগ্য নয়। কেন জানি আমার মনে হচ্ছে, না জেনে, না বুঝে, বার বার যে ভুল গুলো করে এসেছি এগুলো যদি ক্লাসের পাঠ্যপুস্তকের মাধ্যমে বা কোন গুনী জনের লেখার মাধ্যমে জানতে বা বুঝতে পারতাম তাহলে হয়তো এই ভুল গুলো এড়ানো যেতো। ভুলের কারনেই যদি সুখ বিনষ্ট হয়, তাহলে সুখ কোথায়? সব মানুষ জন্মের পর থেকে সুখী হয়ে বাঁচতে চায়। দুঃখ কারো কাম্য নয়।
মূল আলোচনার বিষয় হচ্ছে আমরা কোথায় গেলে সুখ পাবো? কিভাবে সুখী হবো? কি কাজ করলে সুখ পাবো? কিভাবে জীবন কাল সাজালে সারা জীবন সুখের মধ্যে দিয়ে দিন কাটাবো? মনের মধ্যে এ রকম হাজারো প্রশ্ন উদয় হতো সুখ পাবার আশায়। আমাদের প্রথম পিতা-মাতা আদম (আ:) ও হাওয়া কে পৃথিবীর দুই প্রান্তে ফেলে দেয়ার পর তাদের মধ্যে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় তখন বসবাসের অযোগ্য এই পৃথিবীতে ৩০০ বছর চেষ্টা করে সুখের আশায় তাঁরা এক সময় আরাফাতের ময়দানে মিলিত হয়েছিলেন।
একটি শিশু জন্মের পর খাবারের জন্য কান্নাকাটি শুরু করে, মুখে তার খাবার দিলেই সুখের কারণে কান্নাকাটি বন্ধ করে। এ প্রবৃত্তি শুধু মানব শিশুর মধ্যেই নয়, আন্যান্য জীবের মধ্যেও বিদ্যমান। একটি উদ্ভিদ ও জন্মের পর তার বেঁচে থাকা এবং সুখের জন্য প্রয়োজনীয় উপাদান আবশ্যক। এর ব্যতিক্রমে তার সুখ বিনষ্ট হয়, সে মৃত্যুবরণ করে। এই পৃথিবীতে সবাই সুখী হতে চায়। পৃথিবীতে এমন কাউকে পাওয়া যাবে না, যে সুখী হতে চায় নাই। অনেকেই মনে করেন অর্থকড়ি, শিক্ষা-দীক্ষা, বিবাহ, সন্তান-সন্ততি, পরিবার, সামাজিক ও অর্থনৈতিক প্রতিপত্তি মানুষকে সুখী করতে পারে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জরিপ চালিয়ে দেখা গেছে, এসব অর্জন আসলে মানুষকে সুখী করতে পারে নাই। প্রকৃত সুখ যেন সোনার হরিণ। অনেকে সুখ টাকা দিয়ে কিনতে চায়। গাড়ি-বাড়ি-অলঙ্কার-ধন-দৌলতের মতো সুখও তাদের কাছে এক ধরনের পণ্য। এসব প্রাপ্তি মানুষকে সাময়িকভাবে কিছুটা সুখ দিতে পারলেও স্থায়ী সুখের জন্য এসব অর্জন বড় ভূমিকা পালন করে না। যার যা আছে বা যে যে অবস্থায় আছে, তারজন্য শোকরিয়া জানিয়ে, যদি দিন শুরু করা হয়- তাতেই সুখ আসবে। শিক্ষা মানুষকে দশ বছরে যা শেখায় অভিজ্ঞতা তা ১ বছরে শেখায়। ডিগ্রী থাকা মানেই প্রকৃত মানুষ হওয়া নয়। অর্থ থাকলেই হবে না, তা ভোগ করার মন মানসিকতা থাকতে হবে। মতের অমিল হতে পারে তাই বলে তাকে জড়িয়ে হিং¯্রতা মনুষত্বের পরিচায়ক নয়। মানুষ হলেই মনুষত্ব থাকে না। সুখি হতে হলে কাড়ি কাড়ি টাকা, একগাদা ডিগ্রী থাকলেই হবে না। থাকতে হবে মনুষত্ব, হতে হবে মানবিক, থাকতে হবে ভাল বাসার মন, যা দিয়ে আপনি জয় করতে পারেন গোটা বিশ্বাস। আত্মবিশ্বাসে বিশ্বাসী, মর্যাদাবান, হৃদয়বান, জ্ঞানী-গুণী, সৎ মানুষ সাধারণত সব সময় সুখী হয়ে থাকে। যেসব মানুষ শুধু নিতে চায়, দিতে চায় না, তারা কখনোই সুখী হয় না। সুখী মানুষের জীবনেও হতাশা, দুঃখ-কষ্ট আসে। পার্থক্য হলো, সুখী মানুষরা হতাশা, দুঃখ-কষ্টকে সহজভাবে গ্রহণ করতে পারে। এজন্যই তারা সুখী।
Email: makader958@gmail.com
Phone:
01711-338182,01916-604161
No comments