করোনাই শিক্ষার্থীদের বর্তমান অবস্থা ও ভবিষ্যৎ
শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড। আর এই শিক্ষা ছাড়া কোন জাতির উন্নতি সম্ভব নাহ বলে আমরা সবাই জানি।তবে এগুলা অতি পুরাতন এবং গতানুগতিক কথা। আর বর্তমানকালে বলা হয়ে থাকে কর্মমুখী শিক্ষা ছাড়া শিক্ষা মূল্যহীন এবং এর সাথে নীতি নৈতিকতার মানকেও সম্পৃক্ত করা হয়েছে। তাই এসব ক্ষেত্রে যারা যত বেশী অগ্রসর হচ্ছে, তারা তত বেশী নিজেকে উন্নত করেছে। তাই বেশিরভাগ দেশ এসব ক্ষেত্রে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে তাদের শিক্ষা ব্যাবস্থার উন্নয়ন করার চিন্তা করে আসছে। তবে এতে সব দেশই যে সমানভাবে সফল হয়েছে তা নয়। তবে যতটুকু উন্নতি করেছে সেটাও আবার থমকে গেছে করোনা মহামারিতে। গত ৩১ ডিসেম্বর চীনের উহানে করোনা সনাক্ত হওয়ার পর বিশ্বজুড়ে এর বিশ্বায়ন হয়েছে খুবই দ্রুত। যা মোকাবেলা করার জন্য একে একে প্রায় সব দেশ লকডাউন নীতি অনুসরণ করেছে। ফলে সব খাতের ন্যায় শিক্ষা খাতও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। লক-ডাউনের কারণে শিক্ষাখাত বন্ধ হয়ে গেছে প্রায় ৩-৪ মাস যাবত। তাতে চরম ক্ষতির মুখে পড়েছে শিক্ষার্থীরা। সিএনএন’এর একটি খবরে প্রকাশ করা হয় এবং, ‘ইউনেস্কোর তথ্য মতে, বিশ্বজুড়ে প্রায় ১৯০টি দেশের শিক্ষার্থীরা লকডাউনে আছে। অর্থাৎ স্কুল বন্ধ থাকার কারণে সারা বিশ্বের ৯০ শতাংশেরও বেশি শিক্ষার্থী এখন বাড়িতে থেকেই পড়াশোনা করছে। সব দেশেই আর্থিকভাবে সচ্ছলদের তুলনায় অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা অনেক বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ধনীদের মতো অনলাইন ক্লাসে অংশ নেওয়ার কম্পিউটার, অন্যান্য ডিভাইস ও ইন্টারনেট সংযোগ এবং নিরাপদ ও পড়াশোনার উপযোগী পরিবেশ পাচ্ছে না তারা। এর সাথে থাকছে আগামীতে সেশনজটের দুঃচিন্তা কারন অনলাইনে ক্লাস নিতে পারলেও যথারীতি পরীক্ষা নাহ নিতে পারলে এমনিতেই জট বা সংকট তৈরী হবে এমতাবস্থায় এই অবস্থা যদি চলমান থাকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গুলো যদি অনলইলে পরীক্ষা নেয়ার চিন্তা করে তাহলে হইতো সেশনজট কমতে পারে কিন্ত এখানেও এই দরিদ্র বা অসচ্ছল এবং আর্থিক সংকটে থাকা শিক্ষার্থীরা ভালোভাবে অংশগ্রহণ করতে পারবে নাহ। আর্থিক অনিশ্চয়তার কারণে তারা মানসিকভাবেও ভালো নেই এবং সব মিলিয়ে চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে দিয়েই জীবন যাপন করছে তারা এছারাও করোনা মহামারি শেষ হইলে যে আর্থিক সংকট দেখা দিবে সেটা কিভাবে তারা মোকাবেলা করবে এই নিয়েই অনেক সন্দিহান। এছাড়াও নিম্ন আয়ের পরিবারগুলোর অনেক শিক্ষার্থীকেই ইচ্ছার বিরুদ্ধে জীবিকার প্রয়োজনে অর্থ উপার্জনে নামতে হবে সেক্ষেত্রে অনেক শিক্ষার্থীর লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলে ধারনা করা হচ্ছে। তাছাড়া যেসব শিক্ষার্থী টিউশনি এবং কোচিং এর উপর ভিত্তি করে তাদের পড়ালেখার খরচ নির্বাহ করতো এই করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে সেগুলা যথারীতি মিলবে নাহ এর ফলে চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়বে তারা।বাংলাদেশে যতগুলো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে সেখানে অধিকাংশ শিক্ষার্থীই নিন্ম মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে উঠে এসেছে সেই ছোট বেলা থেকেই অর্থনৈতিক লড়াই সংগ্রাম করেই বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে পদার্পন করে আর এই করোনা সংকট অনেকটা অনিশ্চয়তার মধ্যে ফেলে দিয়েছে এইসব দরিদ্র এবং অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের। এমতাবস্থা করোনা পরবর্তী সময়ে দরিদ্র শিক্ষার্থীদের আর্থিক সহায়তার প্রয়োজন হবে।আর এই সংকট নিরসনে শিক্ষার্থীদের দীর্ঘমেয়াদি কিন্তু সুদমুক্ত ঋণ এর ব্যাবস্থা করা উচিৎ। অনেকে হয়তো শর্তহীন অর্থ প্রদানের পক্ষে মত দিবেন। কিন্তু আমি তা বলছি না। সব জায়গাই কিছু অসাধু লোক ঘাপটি মেরে থাকে। তারা সুযোগ নিতে পারে। এতে প্রকৃত প্রাপ্যরা বঞ্চিত হতে পারে। ফলে মহৎ উদ্দেশ্য নিয়ে কাজে নেমেও জনমনে অস্বস্তি জন্ম নিতে পারে।পরিশেষে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানদের আরো মানবিক হতে হবে এবং সংকট নিরসনে অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের জন্য ফান্ড গঠনসহ অনান্য ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে।
লেখক : রাকিবুল ইসলাম রাকিব।
সাধারণ সম্পাদক
বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা
সাধারণ সম্পাদক
বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা
No comments