শাকিলের মাটি তৈরীর কারখানায় তৈরী হচ্ছে উর্বর জৈব মাটি, ছাদবাগান তৈরীর প্রয়োজনে যাচ্ছে জেলায় জেলায়
স্টাফ রিপোর্টার-
মাটির পাতিলগুলোয় রাখা আছে মাটি। সারিবদ্ধ ভাবে সাজানো রয়েছে এগুলো। কোনোটিতে শুধুই মাটি, আবার কোনোটিতে ছাদবাগানের জন্য তৈরীকৃত মাটি। নানা কিছুর সংমিশ্রনে এগুলোতে তৈরী করেছেন কৃষি প্রশিক্ষন ইনিস্টিটিউটের ছাত্র শাকিল হোসাইন। গড়ে তুলেছেন মাটির কারখানা। যে কারখানা থেকে প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন স্থানে মাটি যাচ্ছে। মাটি ক্রেতারা এই মাটি নিয়ে ছাদবাগান তৈরী করছেন।
শাকিলের ভাষায়, মাসে ২ মেঃ টন মাটি তিনি দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠিয়ে থাকেন। ফেসবুক গ্রপের মাধ্যমে তার এই মাটি ক্রয়-বিক্রয় হয়। দেশের অনেক জেলাতেই পৌছে গেছে সাকিলের তৈরী মাটি। এই মাটি ক্রেতাদের কাছে রেডি সয়েল ও ক্যাকটাস পটিং হিসেবে পরিচিত। পাশাপাশি তিনি ভার্মি কম্পোষ্টও তৈরী করেন।
শাকিল হোসাইন (২০) ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার চাপালী (কুটিপাড়া) গ্রামের নুরুল ইসলামের একমাত্র পুত্র। তানজিলা আক্তার নামে তার আরেকটি ছোট বোন রয়েছে। সে আইএসটি’র ছাত্রী। শাকিল জানান, ২০১৬ সালে এসএসসি পাশের পর তিনি ভর্তি হন ঝিনাইদহ কৃষি প্রশিক্ষন ইনিস্টিটিউট (এ.টি.আই) এ ভর্তি হন। বর্তমানে তিনি ৬ষ্ট সেমিষ্টারের ছাত্র। তিনি জানান, এখানে পড়ালেখা করার কারনে কৃষির প্রতি তার আগ্রহ সৃষ্টি হয়। ২০১৭ সালে নিজ বাড়িতে ভার্মি কম্পোষ্ট সার তৈরী শুরু করেন। অল্পদিনেই তার এই কম্পোষ্ট সারের চাহিদা বেড়ে যায়। ফেসবুক এর মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন স্থানে তার তৈরী সারের ক্রেতা সৃষ্টি হয়। এভাবে কিছুদিন সার বিক্রির পর ২০১৮ সালের গোড়ার দিকে ছাদবাগান তৈরীর সিদ্ধান্ত নেন।
শাকিল জানান, কালীগঞ্জ শহরের নিমতলা বাসষ্টান্ডে তার বাবার একটি চায়ের দোকান রয়েছে। যার পাশেই একটি তিনতলা ভবন আছে। যে ভবনে ইসলামী ক্লিনিক নামের একটি বে-সরকারি হাসপাতাল রয়েছে। তিনি ওই ভবনের মালিকপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। সেখানে ছাদ বাগান তৈরীর কাজ শুরু করেন। মাত্র ৬ মাসের মধ্যে তার ছাদবাগানটি দর্শনীয় হয়ে ওঠে। ভবনের চারিপাশে নানা প্রজাতির ফলজ ও বনজ গাছ লাগান। যা এলাকার সৌন্দয্য বৃদ্ধির পাশাপাশি ভবনটিকে ঠান্ডা করে দেয়।
শাকিল হোসাইন আরো জানান, এই ছাদবাগান করতে গিয়ে তাকে মাটি ব্যবহার করতে হয়। এই মাটি কিভাবে উর্বর শক্তি বৃদ্ধি করে ছাদবাগানের উপযোগি করা যায় সেটা নিয়েও তিনি বইপত্র পড়াশুনা করেন। এক পর্যায়ে তার তৈরী মাটিতে তর তর করে গাছগুলো বেড়ে ওঠে। এরপর তিনি সিদ্ধান্ত নেন উর্বর শক্তি সম্পন্ন এই মাটি তৈরী করবেন এবং যারা ছাদবাগান তৈরীতে আগ্রহ প্রকাশ করবেন তাদের মাঝে বিতরন করবেন। মাত্র কয়েকজনকে এই মাটি সরবরাহের পর তার মাটির চাহিদা বেড়ে যায়। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মাটি কেনার প্রস্তাব আসতে শুরু করে। তখন তিনি জোরে-সোরে মাটি তৈরী ও বিক্রি শুরু করেন।
শাকিলে জানান, প্রথমে তিনি নিজ এলাকা থেকে বেলেদোঁয়াশ মাটি সংগ্রহ করেন। এই মাটি কয়েকদিন রেখে দেন এবং এই শুধু মাটিই নানা ভাবে মিশ্রন করেন। তারপর চালনী দিয়ে চেলে ময়লা আলাদা করে নেন। এরপর ওই মাটিতে তিনি পরিমানমতো বালি, ভার্মি কম্পোষ্ট সার, চুন, কোকোডাষ্ট সহ কয়েকটি উপাদান ছিটিয়ে দেন। তারপর কয়েকদফা মিশ্রিন করার পর তৈরী হয়ে যায় তার ছাদবাগানের মাটি। ২০১৮ সাল থেকে তিনি দুই ধরনের মাটি তৈরী করে যাচ্ছেন। রেডি সয়েল ১২ টাকা কেজি আর ক্যাকটাস পটিং সয়েল ১৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেন। এভাবে শুধু মাটি তৈরী আর বিক্রি করে তিনি মাসে ৮ থেকে ৯ হাজার টাকা আয় করেন। এছাড়া ভার্মি কম্পোষ্ট সারে তার পৃথক আয় রয়েছে। তিনি জানান, প্রতিদিনই তার মাটি দেশের বিভিন্ন স্থানে যায়। প্রতিটি ২৫ কেজির বস্তা মাটি কুরিয়ারের মাধ্যমে সব স্থানে পাটিয়ে থাকেন। তার ভাষায় প্রতি মাসে কমপক্ষে ২ টন মাটি তিনি বিভন্ন স্থানে পাঠান।
হবিগঞ্জের পুরাতন হাসপাতাল সড়কের বাসিন্দা পলাশ চন্দ্র জানান, তিনি ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ থেকে মাটি নিয়েছিলেন। শাকিল হোসেনের তৈরী করা মাটি দিয়ে তিনি ছাদবাগান করেছেন। তিনি জানান, জৈবসার, কোকোডাষ্ট সহ অন্যান্য উপাদান ঠিকমতো থাকায় এই মাটি যথেষ্ট উর্বর এবং জৈব। এটার সন্ধান পেয়ে তিনি মোবাইল ফোনের মাধ্যমে যোগাযোগ করে এই মাটি নিয়েছেন। তার এখাকায় আরো যারা ছাদ বাগান করেছেন তারাও শাকিলের নিকট থেকে মাটি ক্রয় করেছেন।
কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা হুমায়ন কবির জানান, তারা এই কারখানা পরিদর্শন করে তাকে একটি প্রদর্শনী দিয়েছেন। তাছাড়া ছেলেটি তরুন উদ্যোক্তা। তার মতো তরুণ উদ্যোক্তা দিয়ে অনেক কিছুই সম্ভব, তারাও কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে শাকিল হোসাইন এর কাছে অনেক কিছুই আশা করে।
শাকিলের ভাষায়, মাসে ২ মেঃ টন মাটি তিনি দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠিয়ে থাকেন। ফেসবুক গ্রপের মাধ্যমে তার এই মাটি ক্রয়-বিক্রয় হয়। দেশের অনেক জেলাতেই পৌছে গেছে সাকিলের তৈরী মাটি। এই মাটি ক্রেতাদের কাছে রেডি সয়েল ও ক্যাকটাস পটিং হিসেবে পরিচিত। পাশাপাশি তিনি ভার্মি কম্পোষ্টও তৈরী করেন।
শাকিল হোসাইন (২০) ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার চাপালী (কুটিপাড়া) গ্রামের নুরুল ইসলামের একমাত্র পুত্র। তানজিলা আক্তার নামে তার আরেকটি ছোট বোন রয়েছে। সে আইএসটি’র ছাত্রী। শাকিল জানান, ২০১৬ সালে এসএসসি পাশের পর তিনি ভর্তি হন ঝিনাইদহ কৃষি প্রশিক্ষন ইনিস্টিটিউট (এ.টি.আই) এ ভর্তি হন। বর্তমানে তিনি ৬ষ্ট সেমিষ্টারের ছাত্র। তিনি জানান, এখানে পড়ালেখা করার কারনে কৃষির প্রতি তার আগ্রহ সৃষ্টি হয়। ২০১৭ সালে নিজ বাড়িতে ভার্মি কম্পোষ্ট সার তৈরী শুরু করেন। অল্পদিনেই তার এই কম্পোষ্ট সারের চাহিদা বেড়ে যায়। ফেসবুক এর মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন স্থানে তার তৈরী সারের ক্রেতা সৃষ্টি হয়। এভাবে কিছুদিন সার বিক্রির পর ২০১৮ সালের গোড়ার দিকে ছাদবাগান তৈরীর সিদ্ধান্ত নেন।
শাকিল জানান, কালীগঞ্জ শহরের নিমতলা বাসষ্টান্ডে তার বাবার একটি চায়ের দোকান রয়েছে। যার পাশেই একটি তিনতলা ভবন আছে। যে ভবনে ইসলামী ক্লিনিক নামের একটি বে-সরকারি হাসপাতাল রয়েছে। তিনি ওই ভবনের মালিকপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। সেখানে ছাদ বাগান তৈরীর কাজ শুরু করেন। মাত্র ৬ মাসের মধ্যে তার ছাদবাগানটি দর্শনীয় হয়ে ওঠে। ভবনের চারিপাশে নানা প্রজাতির ফলজ ও বনজ গাছ লাগান। যা এলাকার সৌন্দয্য বৃদ্ধির পাশাপাশি ভবনটিকে ঠান্ডা করে দেয়।
শাকিল হোসাইন আরো জানান, এই ছাদবাগান করতে গিয়ে তাকে মাটি ব্যবহার করতে হয়। এই মাটি কিভাবে উর্বর শক্তি বৃদ্ধি করে ছাদবাগানের উপযোগি করা যায় সেটা নিয়েও তিনি বইপত্র পড়াশুনা করেন। এক পর্যায়ে তার তৈরী মাটিতে তর তর করে গাছগুলো বেড়ে ওঠে। এরপর তিনি সিদ্ধান্ত নেন উর্বর শক্তি সম্পন্ন এই মাটি তৈরী করবেন এবং যারা ছাদবাগান তৈরীতে আগ্রহ প্রকাশ করবেন তাদের মাঝে বিতরন করবেন। মাত্র কয়েকজনকে এই মাটি সরবরাহের পর তার মাটির চাহিদা বেড়ে যায়। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মাটি কেনার প্রস্তাব আসতে শুরু করে। তখন তিনি জোরে-সোরে মাটি তৈরী ও বিক্রি শুরু করেন।
শাকিলে জানান, প্রথমে তিনি নিজ এলাকা থেকে বেলেদোঁয়াশ মাটি সংগ্রহ করেন। এই মাটি কয়েকদিন রেখে দেন এবং এই শুধু মাটিই নানা ভাবে মিশ্রন করেন। তারপর চালনী দিয়ে চেলে ময়লা আলাদা করে নেন। এরপর ওই মাটিতে তিনি পরিমানমতো বালি, ভার্মি কম্পোষ্ট সার, চুন, কোকোডাষ্ট সহ কয়েকটি উপাদান ছিটিয়ে দেন। তারপর কয়েকদফা মিশ্রিন করার পর তৈরী হয়ে যায় তার ছাদবাগানের মাটি। ২০১৮ সাল থেকে তিনি দুই ধরনের মাটি তৈরী করে যাচ্ছেন। রেডি সয়েল ১২ টাকা কেজি আর ক্যাকটাস পটিং সয়েল ১৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেন। এভাবে শুধু মাটি তৈরী আর বিক্রি করে তিনি মাসে ৮ থেকে ৯ হাজার টাকা আয় করেন। এছাড়া ভার্মি কম্পোষ্ট সারে তার পৃথক আয় রয়েছে। তিনি জানান, প্রতিদিনই তার মাটি দেশের বিভিন্ন স্থানে যায়। প্রতিটি ২৫ কেজির বস্তা মাটি কুরিয়ারের মাধ্যমে সব স্থানে পাটিয়ে থাকেন। তার ভাষায় প্রতি মাসে কমপক্ষে ২ টন মাটি তিনি বিভন্ন স্থানে পাঠান।
হবিগঞ্জের পুরাতন হাসপাতাল সড়কের বাসিন্দা পলাশ চন্দ্র জানান, তিনি ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ থেকে মাটি নিয়েছিলেন। শাকিল হোসেনের তৈরী করা মাটি দিয়ে তিনি ছাদবাগান করেছেন। তিনি জানান, জৈবসার, কোকোডাষ্ট সহ অন্যান্য উপাদান ঠিকমতো থাকায় এই মাটি যথেষ্ট উর্বর এবং জৈব। এটার সন্ধান পেয়ে তিনি মোবাইল ফোনের মাধ্যমে যোগাযোগ করে এই মাটি নিয়েছেন। তার এখাকায় আরো যারা ছাদ বাগান করেছেন তারাও শাকিলের নিকট থেকে মাটি ক্রয় করেছেন।
কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা হুমায়ন কবির জানান, তারা এই কারখানা পরিদর্শন করে তাকে একটি প্রদর্শনী দিয়েছেন। তাছাড়া ছেলেটি তরুন উদ্যোক্তা। তার মতো তরুণ উদ্যোক্তা দিয়ে অনেক কিছুই সম্ভব, তারাও কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে শাকিল হোসাইন এর কাছে অনেক কিছুই আশা করে।
No comments