ইবিতে বঙ্গবন্ধু টুর্ণামেন্টে মারামারি, রেফারিসহ আাহত-৩
বিপ্লব খন্দকার, ইবি:-
ইসলামী বিশ^বিদ্যলয়ের বঙ্গবন্ধু আন্ত:বিভাগ ফুটবল টুর্ণামেন্টকে কেন্দ্র করে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। সোমবার বেলা ১১টার দিকে বিশ^বিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ফুটবল মাঠে অনুষ্ঠিত ইংরেজী বিভাগ ও ইতিহাস বিভাগের মধ্যকার ফাইনাল খেলায় এ ঘটনা ঘটে। এতে ম্যাচ রেফারি সহ ২ খেলোয়াড় আহত হয়েছে বলে জানা গেছে।প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, খেলা চলাকালীন বিভিন্ন সময় দুই দলের খেলোয়ারদের মধ্যে থেমে থেমে বাকবিতন্ডা চলে। খেলার ৫ মিনিটের মাথায় ইতিহাস বিভাগের মিশু ফাউল করে। এতে ইংরেজী বিভাগের প্রাণেশ বিশ^াসের ঠোঁট ফেটে যায়। এসময় তাকে আহত অবস্থায় মাঠের বাইরে নিয়ে চিকিৎসা দেয়া হয়। ক্রমাগত বাকবিতন্ডা ও উত্তেজনার মধ্যে ১০ মিনিটের মাথায় খেলা বন্ধ হয়ে যায়। পরে দুই বিভাগের শিক্ষকদের সহায়তায় আবার খেলার শুরু হয়। খেলার এক পর্যায়ে ইংরেজী বিভাগের বিপক্ষেকে রেফারি পেনাল্টির বাশি বাজায়। তবে পেনাল্টির সিদ্ধান্ত ইংরেজী বিভাগের খেলোয়াড়রা মেনে না নিয়ে মাঠ থেকে উঠে যায়। তাদের অভিযোগ রেফারি ভুল সিদ্ধান্ত দিয়েছে। মাঠে রেফারিও নিজের ভুল স্বীকার করে। তবে প্রথমবার দেয়া সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেননি রেফারি।
পরবর্তীতে ইংরেজী বিভাগ পেনাল্টির সিদ্ধান্ত মেনে নেয় এবং রেফারি রবিউল ইসলামকে প্রত্যাহার করে আবার খেলা শুরু করে। পেনাল্টিতে গোলও পায় ইতিহাস বিভাগ। ২০ মিনিটের মাথায় ইংরেজী বিভাগের খেলোয়ারের ফাউলকে কেন্দ্র করে ইংরেজী বিভাগের শুভকে মারতে যায় ইতিহাস বিভাগের খেলোয়ার আদনান। পরে ইংরেজী বিভাগের খেলোয়াড়রা খেলতে অস্বীকৃতীতি জানিয়ে মাঠ ছেড়ে চলে আসে। পাশাপাশি ইংরেজী বিভাগের খেলোয়াররা ইতিহাসকে বিজয়ী বলে স্বীকৃতি দিয়ে আসে। রেফারির ভুল সিদ্ধান্তের জের ধরে ইংরেজী বিভাগের ৪-৫ জন শিক্ষার্থী রেফারি রবিউল ইসলামকে মারধর করে। এসময় রেফারি প্রশাসন ভবনে আশ্রয় নেয়। পরে খেলায় বাকবিতন্ডার জের ধরে প্রধান ফটকের সামনে ইংরেজী বিভাগের খেলোয়ার রাকিব শাহরিয়ার নিশাত কে মারধর করে ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থীরা। ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী জিয়ন, আদানান, সাব্বির, রমযান আইন বিভাগের কাব্য, আব্দুল্লাহ কল্লোলসহ ৮-১০ জন নিশাতকে মারধর করে।
এদিকে এঘটানায় বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে এক জরুরী মিটিং শেষে আগামীকাল বেলা ১১ টায় পুনরাই খেলা অনুষ্ঠিত করার সিদ্ধান্ত নেন বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসন। নির্ধারিত ৯০ মিনিটের মধ্যে অসমাপ্ত থাকা বাকি সময়ের খেলা অনুষ্ঠিত হওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় প্রশাসন।
জানা যায়, গত ২১শে সেপ্টেম্বর বঙ্গবন্ধু আন্ত:বিভাগ ও আন্ত:হল টুর্ণামেন্টের উদ্বোধন হয়। খেলায় অন্তত ৫দিন মাঠের মধ্যে বাকবিতন্ডা ও ফাউলকে কেন্দ্র করে মারামারি হয়। ক্রমাগত মারামারির ঘটনায় ওই মাসেই খেলা বন্ধ হয়ে যায়। পরে ১৩ জানুয়ারী পুনরায় খেলা শুরু হয়।
এসব মারামারির সময় লাঠিসোঠা আবার কখনো দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আক্রমণ করতেও দেখা যায় প্রতিপক্ষকে। নিজের দলকে সমর্থন দিতে এসে প্রতিপক্ষ দলের খেলোয়ারদেরকেও মারধর করতে দেখা গেছে দর্শকদের। আবার কিছু সময় খেলোয়ার,দর্শকদের সাথে মারধরের শিকার হয়েছেন শিক্ষকরাও।
খেলার মাঠের এমন চিত্র দেখা যায় বিশ^বিদ্যালয়ের প্রতিটি টুর্ণামেন্টে। এসব ঘটনায় প্রতিরোধে বিশ^বিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি ও ক্রীড়া কমিটির নেই কোনো কার্যত ব্যবস্থা। ফলে খেলা চলাকালীন জীবনের হুমকিতে থাকেন খেলোয়াড়রা।
বিশ^দ্যিালয়ের প্রক্টর প্রফেসর ড. পরেশ চন্দ্র বর্ম্মন বলেন,‘আমাদের আন্তরিকতার কোনো ঘাটতি ছিলোনা সমর্থের ঘাটতি ছিল। যখন শিক্ষার্থীরা দলবদ্ধ হয়ে ছোটাছুটি করে তখন আর আমাদের কিছু করার থাকেনা। তবে ক্রীড়া কমিটি যদি এ নিয়ে কোনো পদক্ষেপ নেয় তাহলে আমরা সর্বাত্মক সহযোগীতা করবো।”
No comments