সমাজের অসহায় নারীদের সাথে নিয়ে এগিয়ে চলেছেন ঝিনাইদহের রোমেনা বেগম
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি-
মাত্র ২০ গজ কাপড় আর একটি সেলাই মেশিন নিয়ে ১৫ বছর পূর্বে কাজ শুরু করেছিলেন রোমেনা বেগম। সুচ-আর সুতাই ঘুরিয়েছেন নিজের সহ অসংখ্য অসহায় নারীর জীবন। আজ তার ঝিনাইদহ শহরে একটি বাড়ি হয়েছে, আছে একটি বিশাল বড় শো’রুম। ঢাকা, খুলনা, বরিশালসহ নানা স্থানে তার হাতের কাজের বিভিন্ন পন্য সরবরাহ হচ্ছে। তার আওতায় কাজ করে কমপক্ষে দুইশত অসহায় নারী সংসারে সচ্ছলতা এনেছেন। আর এটা সম্ভব হয়েছে সমবায় অফিসের পরামর্শ, প্রশিক্ষন ও সহযোগিতার কারনেই।
রোমেনা বেগম জানান, তিনি নিজের মতো করে কাজ করে যেতেন। কিন্তু সফলতা আনতে পারছিলেন না। ২০১৪ সালে ঝিনাইদহ জেলা সমবায় অফিসের কর্মকর্তারা তার পাশে দাড়ান। প্রথমে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেন। এরপর নানা পরামর্শ দেন। তারা রোমেনার তৈরী বিভিন্ন মালামাল মেলার স্টলে প্রদর্শন করেন। এভাবেই তার তৈরী পন্যগুলো অল্পদিনে জনপ্রিয়তা পেয়েছে।
রোমেনা বেগম (৪৬) ঝিনাইদহ শহরের গীতাঞ্জলী সড়কের বাসিন্দা মোঃ ইয়াসিন আলী বিশ^াসের স্ত্রী। ১৯৮৬ সালে তার বিয়ে হয়। এরপর এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে পাশ করে সংসারি হয়ে যান। আর পড়ালেখা করা সম্ভব না হলেও নতুন করে পড়ালেখা শুরু করেছেন। তার মেয়ে রুবিনা ইয়াসমিনকে বিয়ে দিয়েছেন, পুত্র রিয়াজ আহম্মেদ পড়ালেখা করছে। স্বামীর ঝিনাইদহ শহরে ছোট একটি কস্মেটিক্স এর দোকান রয়েছে। তার গ্রামের বাড়ি ঝিনাইদহের বাসুদেবপুরে।
রোমেনা বেগম জানান, বিয়ের পর তাদের সংসার চলছিল না। সেই কারনে ২০০৫ সালে স্বামী-স্ত্রী শহরে চলে আসেন। এখানে স্বামী ব্যবসা শুরু করেন। কিন্তু তেমন পুজি না থাকায় ব্যবসা ভালো চলছিল না। এই অবস্থায় তিনি সিদ্ধান্ত নেন নিজে কিছু একটা করবেন। ছোট বেলা থেকেই হাতের কাজের প্রতি তার ঝোক ছিল। তাই বেছে নেন হাতের কাজ। শুরু করেন নকশী কাঁথা, থ্রীপিচ, কুশন, বেডসিট, বালিশের কভার সহ নানা পন্য তৈরী।
রোমেনা বেগম জানান, ২০০৪ সালে প্রথম যখন এই কাজ শুরু করেন তখন একটি সেলাই মেশিন কেনার পর কাছে পুজি ছিল মাত্র ২০ গজ কাপড় কেনার। এই দিয়ে শুরু করেন কাঁথা সেলাই কাজ। ২ বছর পর তার কাছে প্রতিবেশি নারীরা আসতে শুরু করেন। যারা সমাজে অসহায়। অনেক নারী আছেন যাকে স্বামী তালাক দিয়েছেন। আবার অনেকে আছেন স্বামী আরেকটি বিয়ে করে নিয়েছেন। রোমেনা বেগম আরো জানান, এই সব অসহায় নারীদের কথা শুনে তিনি তার হাতের কাজে যুক্ত করেন। একসঙ্গে কাজ দেন ৮ থেকে ১০ জন নারীকে। কাজের পরিধি বেড়ে গেলে তিনি প্রতিষ্ঠানের একটি নাম দেন ‘সেল্টার সমাজ কল্যান সংস্থা।
রোমেনা জানান, ২০১৪ সাল পর্যন্ত তিনি বাড়িতে বসে অসহায় নারীদের নিয়ে কাজ করেছেন। এরপর ঝিনাইদহ সমবায় অফিসের কর্মকর্তারা তার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তিনি সমবায় থেকে রেজিষ্ট্রেশন নেন। বর্তামানে তার এই সংগঠনের সদস্য সংখ্যা ৩৮ জন। রোমেনা সংগঠনের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। তার এই সংগঠনের মাধ্যমে বর্তমানে কালীগঞ্জে ২০ জন, যশোরে ৫০ জন, খাজুরায় ৩০ জন, ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় শতাধিক নারী কাজ করছেন।
রোমেনা বেগম জানান, জেলা সমবায় অফিসের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত ৩০ জন নারী সেলাই প্রশিক্ষন নিয়েছেন। সমবায় অফিসের পক্ষ থেকে প্রশিক্ষনের পাশাপাশি নানা পরামর্শ দিয়ে থাকেন। তিনি আরো জানান, সবচে বেশি উপকৃত হয়েছে সমবায় অফিস তার কর্মীদের তৈরী পন্যের একাধিক মেলায় প্রদর্শন করে। যার কারনে পণ্য বিক্রির পাশাপাশি মানুষের মাঝে চাহিদা বেড়েছে। মেলা থেকে দেখার পর অনেকেই তার কাছে এগুলো কেনার জন্য আসছেন। রোমেনা জানান, বর্তমানে তিনি মাসে ৩ লক্ষাধিক টাকার পন্য বিক্রি করছেন। এ থেকে তার আয় হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা। যা স্বামীর আয়ের পাশাপাশি সংসারে সচ্ছলতা ফেরাতে সহায়ক হচ্ছে। তাছাড়া তার এখানে কাজ করে অনেক নারীর সংসারে সচ্ছলতা ফিরেছে। তিনি আরো জানান, তাদের সমিতির বর্তমান মুলধন ২০ লাখ টাকা। আর সঞ্চয় আমানতের পরিমান প্রায় ৮০ হাজার টাকা।
লক্ষিকোল গ্রামের সখিনা খাতুন (৩৫) জানান, ১০ বছর পূর্বে বিয়ে হয়েছিল। দুই বছর সংসার করার পর স্বামী তাড়িয়ে দেয়। এরপর আশ্রয় হয় বৃদ্ধা মা মোমেনা খাতুনকের সংসারে। এই কাজ করে মাসে ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা আয় হয়। এই আয়ে সংসার চালিয়ে ৪ শতক জমিও কিনেছেন। সেখানে টিনের ঘর বেঁধে মা-মেয়ে থাকেন। দশম শ্রেণীর ছাত্রী সার্থী কর্মকার জানায় হতদরিদ্র বাবা বিশু কর্মকার তার পড়ালেখার খরচ দিতে পারে না। এখন পড়ার ফাঁকে ফাঁকে কাজ করে পড়ার খরচ জোগাড় করেন।
এ বিষয়ে ঝিনাইদহ জেলা সমবায় কর্মকর্তা সৈয়দ নুরুল কুদ্দুস জানান, শুধু রোমেনা নয় তারা জেলার বিভিন্ন এলাকায় অনেককে এভাবে প্রশিক্ষন দিয়ে স্বাভলম্বি করে গড়ে তুলেছেন। সমবায় একটা শক্তি এটা প্রমানে তারা কাজ করে যাচ্ছেন।
মাত্র ২০ গজ কাপড় আর একটি সেলাই মেশিন নিয়ে ১৫ বছর পূর্বে কাজ শুরু করেছিলেন রোমেনা বেগম। সুচ-আর সুতাই ঘুরিয়েছেন নিজের সহ অসংখ্য অসহায় নারীর জীবন। আজ তার ঝিনাইদহ শহরে একটি বাড়ি হয়েছে, আছে একটি বিশাল বড় শো’রুম। ঢাকা, খুলনা, বরিশালসহ নানা স্থানে তার হাতের কাজের বিভিন্ন পন্য সরবরাহ হচ্ছে। তার আওতায় কাজ করে কমপক্ষে দুইশত অসহায় নারী সংসারে সচ্ছলতা এনেছেন। আর এটা সম্ভব হয়েছে সমবায় অফিসের পরামর্শ, প্রশিক্ষন ও সহযোগিতার কারনেই।
রোমেনা বেগম জানান, তিনি নিজের মতো করে কাজ করে যেতেন। কিন্তু সফলতা আনতে পারছিলেন না। ২০১৪ সালে ঝিনাইদহ জেলা সমবায় অফিসের কর্মকর্তারা তার পাশে দাড়ান। প্রথমে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেন। এরপর নানা পরামর্শ দেন। তারা রোমেনার তৈরী বিভিন্ন মালামাল মেলার স্টলে প্রদর্শন করেন। এভাবেই তার তৈরী পন্যগুলো অল্পদিনে জনপ্রিয়তা পেয়েছে।
রোমেনা বেগম (৪৬) ঝিনাইদহ শহরের গীতাঞ্জলী সড়কের বাসিন্দা মোঃ ইয়াসিন আলী বিশ^াসের স্ত্রী। ১৯৮৬ সালে তার বিয়ে হয়। এরপর এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে পাশ করে সংসারি হয়ে যান। আর পড়ালেখা করা সম্ভব না হলেও নতুন করে পড়ালেখা শুরু করেছেন। তার মেয়ে রুবিনা ইয়াসমিনকে বিয়ে দিয়েছেন, পুত্র রিয়াজ আহম্মেদ পড়ালেখা করছে। স্বামীর ঝিনাইদহ শহরে ছোট একটি কস্মেটিক্স এর দোকান রয়েছে। তার গ্রামের বাড়ি ঝিনাইদহের বাসুদেবপুরে।
রোমেনা বেগম জানান, বিয়ের পর তাদের সংসার চলছিল না। সেই কারনে ২০০৫ সালে স্বামী-স্ত্রী শহরে চলে আসেন। এখানে স্বামী ব্যবসা শুরু করেন। কিন্তু তেমন পুজি না থাকায় ব্যবসা ভালো চলছিল না। এই অবস্থায় তিনি সিদ্ধান্ত নেন নিজে কিছু একটা করবেন। ছোট বেলা থেকেই হাতের কাজের প্রতি তার ঝোক ছিল। তাই বেছে নেন হাতের কাজ। শুরু করেন নকশী কাঁথা, থ্রীপিচ, কুশন, বেডসিট, বালিশের কভার সহ নানা পন্য তৈরী।
রোমেনা বেগম জানান, ২০০৪ সালে প্রথম যখন এই কাজ শুরু করেন তখন একটি সেলাই মেশিন কেনার পর কাছে পুজি ছিল মাত্র ২০ গজ কাপড় কেনার। এই দিয়ে শুরু করেন কাঁথা সেলাই কাজ। ২ বছর পর তার কাছে প্রতিবেশি নারীরা আসতে শুরু করেন। যারা সমাজে অসহায়। অনেক নারী আছেন যাকে স্বামী তালাক দিয়েছেন। আবার অনেকে আছেন স্বামী আরেকটি বিয়ে করে নিয়েছেন। রোমেনা বেগম আরো জানান, এই সব অসহায় নারীদের কথা শুনে তিনি তার হাতের কাজে যুক্ত করেন। একসঙ্গে কাজ দেন ৮ থেকে ১০ জন নারীকে। কাজের পরিধি বেড়ে গেলে তিনি প্রতিষ্ঠানের একটি নাম দেন ‘সেল্টার সমাজ কল্যান সংস্থা।
রোমেনা জানান, ২০১৪ সাল পর্যন্ত তিনি বাড়িতে বসে অসহায় নারীদের নিয়ে কাজ করেছেন। এরপর ঝিনাইদহ সমবায় অফিসের কর্মকর্তারা তার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তিনি সমবায় থেকে রেজিষ্ট্রেশন নেন। বর্তামানে তার এই সংগঠনের সদস্য সংখ্যা ৩৮ জন। রোমেনা সংগঠনের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। তার এই সংগঠনের মাধ্যমে বর্তমানে কালীগঞ্জে ২০ জন, যশোরে ৫০ জন, খাজুরায় ৩০ জন, ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় শতাধিক নারী কাজ করছেন।
রোমেনা বেগম জানান, জেলা সমবায় অফিসের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত ৩০ জন নারী সেলাই প্রশিক্ষন নিয়েছেন। সমবায় অফিসের পক্ষ থেকে প্রশিক্ষনের পাশাপাশি নানা পরামর্শ দিয়ে থাকেন। তিনি আরো জানান, সবচে বেশি উপকৃত হয়েছে সমবায় অফিস তার কর্মীদের তৈরী পন্যের একাধিক মেলায় প্রদর্শন করে। যার কারনে পণ্য বিক্রির পাশাপাশি মানুষের মাঝে চাহিদা বেড়েছে। মেলা থেকে দেখার পর অনেকেই তার কাছে এগুলো কেনার জন্য আসছেন। রোমেনা জানান, বর্তমানে তিনি মাসে ৩ লক্ষাধিক টাকার পন্য বিক্রি করছেন। এ থেকে তার আয় হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা। যা স্বামীর আয়ের পাশাপাশি সংসারে সচ্ছলতা ফেরাতে সহায়ক হচ্ছে। তাছাড়া তার এখানে কাজ করে অনেক নারীর সংসারে সচ্ছলতা ফিরেছে। তিনি আরো জানান, তাদের সমিতির বর্তমান মুলধন ২০ লাখ টাকা। আর সঞ্চয় আমানতের পরিমান প্রায় ৮০ হাজার টাকা।
লক্ষিকোল গ্রামের সখিনা খাতুন (৩৫) জানান, ১০ বছর পূর্বে বিয়ে হয়েছিল। দুই বছর সংসার করার পর স্বামী তাড়িয়ে দেয়। এরপর আশ্রয় হয় বৃদ্ধা মা মোমেনা খাতুনকের সংসারে। এই কাজ করে মাসে ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা আয় হয়। এই আয়ে সংসার চালিয়ে ৪ শতক জমিও কিনেছেন। সেখানে টিনের ঘর বেঁধে মা-মেয়ে থাকেন। দশম শ্রেণীর ছাত্রী সার্থী কর্মকার জানায় হতদরিদ্র বাবা বিশু কর্মকার তার পড়ালেখার খরচ দিতে পারে না। এখন পড়ার ফাঁকে ফাঁকে কাজ করে পড়ার খরচ জোগাড় করেন।
এ বিষয়ে ঝিনাইদহ জেলা সমবায় কর্মকর্তা সৈয়দ নুরুল কুদ্দুস জানান, শুধু রোমেনা নয় তারা জেলার বিভিন্ন এলাকায় অনেককে এভাবে প্রশিক্ষন দিয়ে স্বাভলম্বি করে গড়ে তুলেছেন। সমবায় একটা শক্তি এটা প্রমানে তারা কাজ করে যাচ্ছেন।
No comments