একই গ্রামে ২৫জন ডেঙ্গু রোগী সন্ধান॥ ইউনিয়নে আগে ২ নারীর মৃত্যু

বাবুল আক্তার, কালীগঞ্জ॥
একতারপুর গ্রামের মিন্টু মিয়ার ছেলে তানভীর (৪)। গত ১৬ তারিখে প্রচন্ড জ্বরে আক্রান্ত হয়। দু’দিন স্থানীয় চিকিৎসকে দেখিও জ্বর না কুমায় কালীগঞ্জ স্বস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। সেখানে পরিক্ষা করে তার ডেঙ্গু ধরা পড়ে। কয়েক দিন কালীগঞ্জ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েও তার অবস্থার পরিবর্তন না হলে তাকে যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে রিফার্ড করা হয়। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে সেখান থেকে খুলনা ২৫০ শয্যা হাসপাতালে নিতে বলা হয়। বর্তমানে খূলনা ২৫০ শষ্যা হাসপাতালে মারাত্বক অসুস্থ্য অবস্থায় চিকিৎসাধীন আছে। প্রতিদিনই তাকে রক্ত দিতে হচ্ছে। একই গ্রামের মীর আব্দুল করিমের স্ত্রী জহুরা খাতুন(৬০)। গত ১৫ সেপ্টেম্বর জ্বরে আক্রান্ত হন। ৪ দিন ধরে কোন পরিবর্তন না হওয়ায় ২০ সেপ্টেম্বর কালীগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করার পর রক্ত পরিক্ষা করে ডেঙ্গু ধরা পড়ে। গত ২২ সেপ্টেম্ব ছাড় পত্র নিয়ে বাড়ি ফেরে। বর্তমানে জ্বর না থাকলেও শাররিক দূর্বলতায় উঠতে পারছেনা। পাশের বাড়ির রমজান আলীর মেয়ে স্কুলছাত্রী রাবেয়া খাতুন (১৫)। গত ১০ সেপ্টেম্বর প্রচন্ড জ¡ের আক্রান্ত হয়ে বমি করে। স্থানীয় ভাবে চিকিৎসা দেওয়ার পরও কোন পরিবর্তন না হওয়ায় গত ১৩ সেপ্টেম্বর কালীগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। পরিক্ষা-নিরিক্ষার পর ডেঙ্গু ধরা পড়ে। ২দিনের ব্যবধানে রাবেয়া খাতুনের মা শেফালী বেগম(৪৫) ও তার বড় ভাই আসিফ (১৭)সহ একই পরিবারের ৩জন প্রচন্ড জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ডেঙ্গু ধরা পড়ে। শুধু তারাই নয় একই গ্রামের একই পাড়ার আবুল হোসেন ছেলে হাফিজুর রহমান(২৮), আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে শরিফুল হোসেন, আসলাম হোসেনের স্ত্রী চম্পা খাতুনসহ গত ২৫দিনে কমপক্ষে ২৫জন ডেঙ্গু রোগে সন্ধান পাওয়া যায়। ডেঙ্গু রোগে আক্রান্তরা সবাই প্রথমে কালীগঞ্জ হাসপাতালে চিকিৎসা নেন বলে জানান এলাকাবাসী। ঘটনাটি ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার ত্রিলোচানপুর ইউনিয়নের একতারপুর গ্রামের মন্ডল পাড়ায়। এঘটনায় ডেঙ্গু আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে আশে-পাশের গ্রাম গুলোতেও।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: হুসাইন সাফায়াত বলেন, বিষয়টি আমি জেনেছি এবং ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের ইতিমধ্যে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। ডেঙ্গু প্রতিরোধের বিষয়ের তিনি বলেন, এটা স্থানীয় সরকারের ব্যাপার।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা সূবর্ণা রানী সাহা বলেন, বিষয়টি জানার পর সার্বক্ষণিক তদারকি করা হচ্ছে।
এলাকার মানুষকে সচেতন করা হচ্ছে। এডিস মশা বংশ বিস্তার করতে না পারে সেজন্য ওষধ স্প্রে ও এলাকায় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ২৭ আগষ্ট ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সুফিয়া বেগম (৫৫) নামের এক নারীর মৃত্যু হয়। তিনি উপজেলার ত্রিলোচানপুর ইউনিয়নে বানুড়িয়া গ্রামের আব্দুর রহিমের স্ত্রী। এছাড়া গত ৪ সেপ্টেম্বর তারানা বেগম (৩৫) নামের এই নারী ঝিনাইদহ সদর হাসপাতাল থেকে ফরিদপুর মেডিকেলে পাঠানো হলে পথিমধ্যে তার মৃত্যু হয়। তারানা বেগম উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের আলতাফ হোসেনের স্ত্রী।

No comments

Powered by Blogger.