একজন সফল চাষী কবিরুস এখন অন্যের অনুপ্রেরণা
মিজানুর রহমান-
ড্রাগন, পেয়ারা, ফুল, কুল আমের মতো ভিন্ন সব ফুল ফলের চাষ দিয়ে জীবনের চাকা ঘুরাতে সক্ষম হয়েছেন কবিরুস সোবাহান। অষ্টম শ্রেণি পাশের পর পরিবারের প্রয়োজনে কৃষিকাজে নিজেকে সমপৃক্ত করতে বাধ্য হলেও গতানুগতিক চাষে যখন সফলতা আসছিলো না তখনই এই কবিরুস সোবাহান বেছে নেন ভিন্নসব চাষাবাদ। বর্তমানে তিনি এতদঞ্চলের একজন সফল চাষী। তার বাড়ি হয়েছে, হয়েছে বেশ কিছু চাষযোগ্য জমি। তাকে দেখে অন্যরা অনুপ্রাণিত হচ্ছেন। কবিরুসের মতো তারাও ভিন্নসব চাষাবাদের দিকে ঝুকে যাচ্ছেন।
এক সময় কবিরুস নিজে স্বপ্ন দেখতেন। আর এখন অন্যদের স্বপ্ন দেখান। প্রতিনিয়ত দূর-দূরান্ত থেকে অনেকে আসেন এই স্বাপ্নিক চাষীর কাছে বিভিন্ন প্রকার কৃষি পরামর্শ নেওয়ার জন্য।
কবিরুস সোবাহান (৪৪) ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার ত্রিলোচনপুর গ্রামের অহেদুস সোবাহানের বড় ছেলে। কবির বলেন, “প্রায় ২০ বছর আগের কথা। গতানুগতিক চাষ ছেড়ে ছেড়ে ফুল ও সবজি চাষ শুরু করি। এ দুই চাষে অভাবনীয় সফলতা পেয়েছিলাম। অল্প অল্প করে চাষের জমি বৃদ্ধি করতে থাকি। এক সময় আত্মবিশ্বাস জন্মালো-নিষ্ঠার সাথে পরিশ্রম করলে যেকোনো চাষ থেকে ভালো
ড্রাগন, পেয়ারা, ফুল, কুল আমের মতো ভিন্ন সব ফুল ফলের চাষ দিয়ে জীবনের চাকা ঘুরাতে সক্ষম হয়েছেন কবিরুস সোবাহান। অষ্টম শ্রেণি পাশের পর পরিবারের প্রয়োজনে কৃষিকাজে নিজেকে সমপৃক্ত করতে বাধ্য হলেও গতানুগতিক চাষে যখন সফলতা আসছিলো না তখনই এই কবিরুস সোবাহান বেছে নেন ভিন্নসব চাষাবাদ। বর্তমানে তিনি এতদঞ্চলের একজন সফল চাষী। তার বাড়ি হয়েছে, হয়েছে বেশ কিছু চাষযোগ্য জমি। তাকে দেখে অন্যরা অনুপ্রাণিত হচ্ছেন। কবিরুসের মতো তারাও ভিন্নসব চাষাবাদের দিকে ঝুকে যাচ্ছেন।
এক সময় কবিরুস নিজে স্বপ্ন দেখতেন। আর এখন অন্যদের স্বপ্ন দেখান। প্রতিনিয়ত দূর-দূরান্ত থেকে অনেকে আসেন এই স্বাপ্নিক চাষীর কাছে বিভিন্ন প্রকার কৃষি পরামর্শ নেওয়ার জন্য।
কবিরুস সোবাহান (৪৪) ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার ত্রিলোচনপুর গ্রামের অহেদুস সোবাহানের বড় ছেলে। কবির বলেন, “প্রায় ২০ বছর আগের কথা। গতানুগতিক চাষ ছেড়ে ছেড়ে ফুল ও সবজি চাষ শুরু করি। এ দুই চাষে অভাবনীয় সফলতা পেয়েছিলাম। অল্প অল্প করে চাষের জমি বৃদ্ধি করতে থাকি। এক সময় আত্মবিশ্বাস জন্মালো-নিষ্ঠার সাথে পরিশ্রম করলে যেকোনো চাষ থেকে ভালো
মুনাফা পাওয়া সম্ভব। একরাশ প্রশান্তির হাসি দিয়ে বলে চলেন সফলতার গল্প, এর পর ২০১২ সালে ৫বিঘা জমিতে পেয়ারা চাষ শুরু করি। এচাষেও ভালো মুনাফা আসে। বর্তমানে ৮ বিঘা জমিতে পেয়ারা চাষ আছে। স্থানীয় এক চাষীর ড্রাগন চাষ দেখে তার উৎসাহে ২০১৬ সালে ড্রাগন ফলের চাষ শুরু করি । প্রথমে এক বিঘা(৩৩শতক)জমিতে ড্রাগন চাষ করলেও এখন তা বাড়িয়ে প্রায় ৩ বিঘা জমিতে উন্নীত করেছি। ড্রাগন চাষে একবারে অনেক টাকা খরচ হলেও এ চাষ অন্য যেকোন চাষের তুলনায় বেশ লাভজনক।”
এছাড়া কবির ৫বিঘা জমিতে বেল সুন্দরী জাতের কুল ও ৩ বিঘা জমিতে থাই আম গাছ লাগিয়েছেন। থাই আম সারা বছর পাওয়া যাবে বলে তিনি জানান। কুল ও আম চাষেও সফল হবেন বলে তিনি আশা করছেন। সফল চাষী কবিরুলের ফসল ও মাটির সাথে রয়েছে ২৮ বছরের সম্পর্ক। এই চাষ থেকেই তিনি ১০ বিঘা ফসলি জমি কিনেছেন। একটি দালান বাড়ি বানিয়েছেন। বাজার-ঘাটে যাতায়াতের জন্য একটি মটর সাইকেলও কিনেছেন। মটর সাইকেলে প্রতিদিন ছেলে-মেয়েদের স্কুলে দিয়ে আসেন। কবিরুসের বড় ছেলে জিহাদুস সোবাহান এবার বালিয়াডাঙ্গা দাখিল মাদরাসা থেকে দাখিল পরীক্ষা দিবে এবং মেয়ে কেয়াকে ভর্তি করিয়েছেন একই গ্রামের ন্যাশলাল প্রি-ক্যাডেট স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণিতে। তিনি বলেন, পরিশ্রম করে আমি শুধু আমার নিজের অবস্থার পরিবর্তন করেছি তা নয়, আমার ক্ষেত খামারে কর্মসংস্থান হয়েছে পরিতোষ, উত্তম, আমিরুলসহ ১৪ জন শ্রমিকের। কবির জানান, এই ১৪জন শ্রমিক তার জমিতে নিয়মিত কাজ করে। কাজের অভাবে কোন দিন বসে থাকতে হয়না তাদের। শ্রমিকরা আন্তরিকতার সাথে কাজ করে বলে আজ আমি একজন সফল চাষী। শ্রমিক উত্তম বলেন, আমি ১২ বছর ধরে কবির ভাইয়ের ক্ষেতে কাজ করছি। আরেকজন শ্রমিক পরিতোষ জানান তিনি ১৭ বছর ধরে কাজ করছেন। এভাবে দীর্ঘ বছর ধরে তার সাথে আছে এলাকার কৃষক শ্রেণি। তিনি বলেন, পরিকল্পিত ভাবে যদি কেউ কৃষি কাজ করে তবে তার উন্নতি হবেই। সাথে সাথে অনেক বেকার যুবকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হবে।
কবিরুস জানান, এখন অনেক নতুন ও পুরাতন চাষী আমার কাছে ছুটে আসেন, কৃষি পরমর্শের জন্য। আমি তাদের কথা মনোযোগ সহকারে শুনি। আমার বাগানগুলো ঘুরিয়ে দেখাই। আমার অভিজ্ঞতা তাদের সাথে শেয়ার করি। এতে আমি খুব আনন্দ অনুভব করি।
আগামীর স্বপ্নচারীদের উদ্দেশ্যে চাষী কবিরুস বলেন, যাদের মাঠে জায়গা জমি আছে তাদেরকে আমি বলব, আপনারা আপনাদের জমিতে বিভিন্ন ফলের গাছ লাগান এবং যতœ নেন। তাহলে দেখবেন এই চাষই একদিন আপনার ভাগ্যকে
আগামীর স্বপ্নচারীদের উদ্দেশ্যে চাষী কবিরুস বলেন, যাদের মাঠে জায়গা জমি আছে তাদেরকে আমি বলব, আপনারা আপনাদের জমিতে বিভিন্ন ফলের গাছ লাগান এবং যতœ নেন। তাহলে দেখবেন এই চাষই একদিন আপনার ভাগ্যকে
বদলে দিবে। আপনাকে করে তুলবে স্বাবলম্বি।
কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ জাহিদুল করিম বলেন, ফলের উৎপাদন বাড়ানো থেকে শুরু করে এগুলো যাতে পোকা মাকড়ের আক্রমন থেকে রক্ষা পায় সেজন্য আমরা প্রয়োজনীয় পরামর্শ সব সময় দিয়ে থাকি। আমি মনেকরি, আমাদের ফল চাষি কবিরুস সোবাহান নি:সন্দেহে দেশের আগামী দিনের ফল চাষীদের জন্য একজন অনুপ্রেরণা দায়ক ব্যক্তি হয়ে থাকবেন।
No comments