কৃষকবন্ধু এমদাদুল হক
বাবুল আক্তার, কালীগঞ্জ॥
গনগনে সূর্যটা আগুন ঢালছে যেন। ফাঁকা মাঠের মধ্যে সবজিখেত। কোথাও একটু ছায়া নেই। প্রখর রোদে দরদর করে ঘামছেন কৃষক নান্নু মিয়া। হঠাৎ মাথাল হাতে এগিয়ে এলেন একজন। মাথার ওপর এক টুকরো ছায়া শান্তির পরশ বুলিয়ে দিল নান্নু মিয়ার শরীর-মনে। শুধু মাথাল নয়, জমিতে কেউ কীটনাশক ছিটাচ্ছেন, মুখে মাস্ক নেই। মানুষটি ছুটে যান সেখানে। মুখে বেঁধে দেন মাস্ক। কাজ শেষে বাড়ি ফিরে সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার অভ্যাস করতে কৃষকদের হাতে তুলে দেন সাবান। রাতে নিরাপদে ঘুমানোর জন্য দেন মশারি।
শুধু কি তাই! কৃষকের মধ্যে জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে দিতে গড়ে তুলেছেন নৈশবিদ্যালয়। এ পর্যন্ত প্রায় ৫০০ কৃষককে পড়ালেখা শিখেছেন সেখানে। জমিতে রাসায়নিকের ব্যবহার কমাতে কেঁচো সার তৈরির পরামর্শ ও প্রশিক্ষণ দেন। কৃষকের রক্তের গ্রুপ নির্ণয়ে সহায়তা করেন। বিতরণ করেন গাছের চারা। এক যুগেরও বেশি সময় ধরে কৃষকের কল্যাণে, বন্ধুর মতো পাশে থেকে কাজ করে চলেছেন মানুষটি। তিনি কাজী এমদাদুল হক। বাড়ি ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার দৌলতপুর গ্রামে। তিনি নিজেও একজন কৃষক। আবার শিক্ষকতা করেন গ্রামের একটি মাদ্রাসায়। সেখানে বেতন নেই। বাড়িতে তাই ছাত্র পড়িয়ে আর কৃষিকাজের আয়ে চলে সংসার। সেখান থেকে কিছু টাকা বাঁচিয়ে কৃষকের কল্যাণে ব্যয় করেন।এমদাদুলের বাবা প্রয়াত কাজী আবদুল ওয়াহেদও কৃষির পাশাপাশি সামাজিক কাজে জড়িত ছিলেন। এলাকার লোকজন আজও তাঁকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন। আর তা দেখে বাবার মতো মানুষের জন্য কিছু করার ভাবনা তাড়িত করত এমদাদুলকে। ২০০৬ সাল থেকে পাড়ায় পাড়ায় কৃষকদের নিয়ে রাতে পাঠদানের ব্যবস্থা করেন। এরপর একে একে জড়িয়ে পড়েন কৃষকের নানা সমস্যা সমাধানের কাজে।
শুরুর দিকে এমদাদুল তাঁর নিজ ইউনিয়ন কোলার ১১টি গ্রামে মাঠ ঘুরে কৃষকের তালিকা করেন। যাঁরা মাথায় মাথাল ব্যবহার করেন না এবং কীটনাশক ছিটানোর সময় মুখে মাস্ক দেন না, তাঁদেরও তালিকা করেন। সেই তালিকা ধরে তিনি কৃষকদের হাতে মাথাল ও মাস্ক তুলে দেন। এমদাদুল জানান, ইতিমধ্যে তিনি এক হাজারের বেশি মাথাল কৃষকদের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন। মাস্ক দিয়েছেন আরও বেশি।
কামালহাট গ্রামের মোমিনুর রহমান বলেন, মাথাল ছাড়া মাঠে কাজ করতে দেখলে এমদাদ ভাইয়ের মাথা ঠিক থাকে না। ছুটে গিয়ে ওই কৃষকের মাথায় মাথাল পরিয়ে দেন।
কৃষকদের নিয়ে কাজ করতে গিয়ে এমদাদুল দেখতে পান, অক্ষরজ্ঞান না থাকায় সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়ছেন তাঁরা। কৃষি বিভাগ থেকে দেওয়া পরামর্শ দ্রুত ভুলে যান কৃষকেরা। লিখতে না পারায় কোনো কিছুই ধরে রাখতে পারেন না তাঁরা। তাই পাড়ায় পাড়ায় নৈশবিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিলেন। এখন পর্যন্ত আটটি গ্রামে ১৩টি কেন্দ্রের মাধ্যমে পাঁচ শতাধিক কৃষককে অক্ষরজ্ঞান স¤পন্ন করে তুলেছেন। এই কাজে গ্রামের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলো তিনি ব্যবহার করেছেন। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে একটি কক্ষ ব্যবহার করে স্কুল চালিয়েছেন।
এমদাদুল হক বলেন, অনেক কৃষক মাঠ থেকে বাড়ি ফিরে নিজের শরীরটা ভালোভাবে পরিষ্কার করেন না। রাতে মশারি খাটিয়ে ঘুমান না। এসব অসচেতনতা দূর করতে তিনি কৃষকদের মধ্যে সাবান ও মশারি বিতরণ শুরু করেন। এখন অনেক কৃষকই সাবান ব্যবহার করছেন।স্থানীয় একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন থেকে এমদাদুল নিজে কেঁচো সার তৈরির প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন। এখন গ্রামের কৃষকদের সেই প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন। সঙ্গে কৃষকদের মধ্যে কেঁচোও বিতরণ করছেন। কোলা ইউনিয়নের অনেক কৃষক এখন কেঁচে-া সার তৈরি করে নিজের জমিতে ব্যবহার করছেন। পাশাপাশি অন্যের কাছে বিক্রিও করছেন। এতে একদিকে যেমন বিষমুক্ত ফসল পাওয়া যাচ্ছে, অন্যদিকে কৃষিজমির উৎপাদনক্ষমতাও বৃদ্ধি পাচ্ছে।
কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. জাহিদুল করিম বলেন, তাঁর কাজ দেখে স্থানীয় কৃষি বিভাগ মুগ্ধ। তাই তাঁরা কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে এমদাদুল হকের বাড়িতে একটি কৃষি পাঠাগার করে দিয়েছেন। সেখানে একটি আলমারিসহ বেশ কিছু বইও দিয়েছেন তাঁরা।
এ ছাড়া এমদাদুল কৃষকদের চিকিৎসা সহায়তায় রক্তের গ্রুপ নির্ণয় করে আসছেন। তিনি এলাকায় ২০ হাজারের বেশি বনজ ও ফলদ গাছ এবং ১৫ হাজার তালের আঁটি রোপণ করেছেন।
দৌলতপুর গ্রামের কৃষক আজিজুর রহমান জানান, তিনি আগে পড়ালেখা জানতেন না। এমদাদুল হকের স্কুলে পড়ে এখন লিখতে ও পড়তে পারেন।
এমদাদুল হকের স্ত্রী, দুই মেয়ে ও এক ছেলে নিয়ে তাঁর সংসার। মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করে বেতন পান না বলে বাড়িতে ছাত্র পড়ান। সেখান থেকে হাজার দশেক টাকা আয় হয়। এর মধ্যে ৬ হাজার টাকা সংসারের পেছনে খরচ করেন। বাকিটা কৃষকদের পেছনে।
এমদাদুলের ভাষায়, কৃষকদের আরও বেশি সহায়তা দিতে অন্যদের এই কাজে সঙ্গী করেছেন। আর সে জন্য বাবার নামে প্রতিষ্ঠা করেছেন কাজী আবদুল ওয়াহেদ মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশন। এই ফাউন্ডেশনের সভাপতি তিনি নিজে।
এমদাদুল হকের কাজকর্ম নিয়ে কোলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আয়ুব হোসেন বলেন, এমদাদ যে পরিমাণ জনকল্যাণমূলক কাজ করেছেন, তাঁরা জনপ্রতিনিধি হয়েও তাঁর ধারেকাছেও যেতে পারেন না। তিনি নিজে যে টাকা উপার্জন করেন, তা পরিবারের পেছনে কম খরচ করে এলাকার মানুষের পেছনে ব্যয় করেন।
আর কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কমকতা সুবর্ণা রানী সাহা তো ভূয়সী প্রশংসা করলেন এমদাদুল হকের। তাঁর কথায়,আমাদের সমাজে অনেক মানুষ আছেন যাঁরা সমাজ পরিবর্তনের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। এঁরা সাদামনের মানুষ। কাজী এমদাদুল হকও তাঁদের একজন।
গনগনে সূর্যটা আগুন ঢালছে যেন। ফাঁকা মাঠের মধ্যে সবজিখেত। কোথাও একটু ছায়া নেই। প্রখর রোদে দরদর করে ঘামছেন কৃষক নান্নু মিয়া। হঠাৎ মাথাল হাতে এগিয়ে এলেন একজন। মাথার ওপর এক টুকরো ছায়া শান্তির পরশ বুলিয়ে দিল নান্নু মিয়ার শরীর-মনে। শুধু মাথাল নয়, জমিতে কেউ কীটনাশক ছিটাচ্ছেন, মুখে মাস্ক নেই। মানুষটি ছুটে যান সেখানে। মুখে বেঁধে দেন মাস্ক। কাজ শেষে বাড়ি ফিরে সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার অভ্যাস করতে কৃষকদের হাতে তুলে দেন সাবান। রাতে নিরাপদে ঘুমানোর জন্য দেন মশারি।
শুধু কি তাই! কৃষকের মধ্যে জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে দিতে গড়ে তুলেছেন নৈশবিদ্যালয়। এ পর্যন্ত প্রায় ৫০০ কৃষককে পড়ালেখা শিখেছেন সেখানে। জমিতে রাসায়নিকের ব্যবহার কমাতে কেঁচো সার তৈরির পরামর্শ ও প্রশিক্ষণ দেন। কৃষকের রক্তের গ্রুপ নির্ণয়ে সহায়তা করেন। বিতরণ করেন গাছের চারা। এক যুগেরও বেশি সময় ধরে কৃষকের কল্যাণে, বন্ধুর মতো পাশে থেকে কাজ করে চলেছেন মানুষটি। তিনি কাজী এমদাদুল হক। বাড়ি ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার দৌলতপুর গ্রামে। তিনি নিজেও একজন কৃষক। আবার শিক্ষকতা করেন গ্রামের একটি মাদ্রাসায়। সেখানে বেতন নেই। বাড়িতে তাই ছাত্র পড়িয়ে আর কৃষিকাজের আয়ে চলে সংসার। সেখান থেকে কিছু টাকা বাঁচিয়ে কৃষকের কল্যাণে ব্যয় করেন।এমদাদুলের বাবা প্রয়াত কাজী আবদুল ওয়াহেদও কৃষির পাশাপাশি সামাজিক কাজে জড়িত ছিলেন। এলাকার লোকজন আজও তাঁকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন। আর তা দেখে বাবার মতো মানুষের জন্য কিছু করার ভাবনা তাড়িত করত এমদাদুলকে। ২০০৬ সাল থেকে পাড়ায় পাড়ায় কৃষকদের নিয়ে রাতে পাঠদানের ব্যবস্থা করেন। এরপর একে একে জড়িয়ে পড়েন কৃষকের নানা সমস্যা সমাধানের কাজে।
শুরুর দিকে এমদাদুল তাঁর নিজ ইউনিয়ন কোলার ১১টি গ্রামে মাঠ ঘুরে কৃষকের তালিকা করেন। যাঁরা মাথায় মাথাল ব্যবহার করেন না এবং কীটনাশক ছিটানোর সময় মুখে মাস্ক দেন না, তাঁদেরও তালিকা করেন। সেই তালিকা ধরে তিনি কৃষকদের হাতে মাথাল ও মাস্ক তুলে দেন। এমদাদুল জানান, ইতিমধ্যে তিনি এক হাজারের বেশি মাথাল কৃষকদের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন। মাস্ক দিয়েছেন আরও বেশি।
কামালহাট গ্রামের মোমিনুর রহমান বলেন, মাথাল ছাড়া মাঠে কাজ করতে দেখলে এমদাদ ভাইয়ের মাথা ঠিক থাকে না। ছুটে গিয়ে ওই কৃষকের মাথায় মাথাল পরিয়ে দেন।
কৃষকদের নিয়ে কাজ করতে গিয়ে এমদাদুল দেখতে পান, অক্ষরজ্ঞান না থাকায় সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়ছেন তাঁরা। কৃষি বিভাগ থেকে দেওয়া পরামর্শ দ্রুত ভুলে যান কৃষকেরা। লিখতে না পারায় কোনো কিছুই ধরে রাখতে পারেন না তাঁরা। তাই পাড়ায় পাড়ায় নৈশবিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিলেন। এখন পর্যন্ত আটটি গ্রামে ১৩টি কেন্দ্রের মাধ্যমে পাঁচ শতাধিক কৃষককে অক্ষরজ্ঞান স¤পন্ন করে তুলেছেন। এই কাজে গ্রামের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলো তিনি ব্যবহার করেছেন। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে একটি কক্ষ ব্যবহার করে স্কুল চালিয়েছেন।
এমদাদুল হক বলেন, অনেক কৃষক মাঠ থেকে বাড়ি ফিরে নিজের শরীরটা ভালোভাবে পরিষ্কার করেন না। রাতে মশারি খাটিয়ে ঘুমান না। এসব অসচেতনতা দূর করতে তিনি কৃষকদের মধ্যে সাবান ও মশারি বিতরণ শুরু করেন। এখন অনেক কৃষকই সাবান ব্যবহার করছেন।স্থানীয় একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন থেকে এমদাদুল নিজে কেঁচো সার তৈরির প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন। এখন গ্রামের কৃষকদের সেই প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন। সঙ্গে কৃষকদের মধ্যে কেঁচোও বিতরণ করছেন। কোলা ইউনিয়নের অনেক কৃষক এখন কেঁচে-া সার তৈরি করে নিজের জমিতে ব্যবহার করছেন। পাশাপাশি অন্যের কাছে বিক্রিও করছেন। এতে একদিকে যেমন বিষমুক্ত ফসল পাওয়া যাচ্ছে, অন্যদিকে কৃষিজমির উৎপাদনক্ষমতাও বৃদ্ধি পাচ্ছে।
কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. জাহিদুল করিম বলেন, তাঁর কাজ দেখে স্থানীয় কৃষি বিভাগ মুগ্ধ। তাই তাঁরা কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে এমদাদুল হকের বাড়িতে একটি কৃষি পাঠাগার করে দিয়েছেন। সেখানে একটি আলমারিসহ বেশ কিছু বইও দিয়েছেন তাঁরা।
এ ছাড়া এমদাদুল কৃষকদের চিকিৎসা সহায়তায় রক্তের গ্রুপ নির্ণয় করে আসছেন। তিনি এলাকায় ২০ হাজারের বেশি বনজ ও ফলদ গাছ এবং ১৫ হাজার তালের আঁটি রোপণ করেছেন।
দৌলতপুর গ্রামের কৃষক আজিজুর রহমান জানান, তিনি আগে পড়ালেখা জানতেন না। এমদাদুল হকের স্কুলে পড়ে এখন লিখতে ও পড়তে পারেন।
এমদাদুল হকের স্ত্রী, দুই মেয়ে ও এক ছেলে নিয়ে তাঁর সংসার। মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করে বেতন পান না বলে বাড়িতে ছাত্র পড়ান। সেখান থেকে হাজার দশেক টাকা আয় হয়। এর মধ্যে ৬ হাজার টাকা সংসারের পেছনে খরচ করেন। বাকিটা কৃষকদের পেছনে।
এমদাদুলের ভাষায়, কৃষকদের আরও বেশি সহায়তা দিতে অন্যদের এই কাজে সঙ্গী করেছেন। আর সে জন্য বাবার নামে প্রতিষ্ঠা করেছেন কাজী আবদুল ওয়াহেদ মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশন। এই ফাউন্ডেশনের সভাপতি তিনি নিজে।
এমদাদুল হকের কাজকর্ম নিয়ে কোলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আয়ুব হোসেন বলেন, এমদাদ যে পরিমাণ জনকল্যাণমূলক কাজ করেছেন, তাঁরা জনপ্রতিনিধি হয়েও তাঁর ধারেকাছেও যেতে পারেন না। তিনি নিজে যে টাকা উপার্জন করেন, তা পরিবারের পেছনে কম খরচ করে এলাকার মানুষের পেছনে ব্যয় করেন।
আর কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কমকতা সুবর্ণা রানী সাহা তো ভূয়সী প্রশংসা করলেন এমদাদুল হকের। তাঁর কথায়,আমাদের সমাজে অনেক মানুষ আছেন যাঁরা সমাজ পরিবর্তনের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। এঁরা সাদামনের মানুষ। কাজী এমদাদুল হকও তাঁদের একজন।
No comments