ওজন কমিয়ে বহুমূত্র রোগ কয়েক বছরের জন্য সারানো সম্ভব
ইংল্যাণ্ডে বেশ কিছু রোগীর ওপর পরীক্ষা চালিয়ে গবেষকরা এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন।
তারা বলছেন বহুমূত্র রোগের জন্য নিয়মিত ওষুধ খাওয়া বন্ধ রাখতে এবং রোগ ঠেকিয়ে রাখতে এই পদ্ধতি একটা সমাধানের পথ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন আগে ধারণা করা হতো টাইপ-টু ডায়াবেটিস যা জীবনযাপনের কারণে হয়, তা একবার হলে সেই রোগে সারা জীবন ভুগতে হবে এবং দিনে দিনে তা আরও খারাপের দিকে যাবে। নতুন গবেষণা সেই ধারণাকে পাল্টে দিয়েছে।
যুক্তরাজ্যে প্রতি ১৬জন প্রাপ্তবয়স্কের মধ্যে একজন টাইপ-টু বহুমূত্র রোগের শিকার।
টাইপ-টু ধরনের বহুমূত্র রোগে শরীরে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণবিহীন হয়ে পড়ে এবং এর থেকে নানাধরনের জটিলতা তৈরি হয়, যেমন দৃষ্টির সমস্যা, হৃদরোগ এবং অঙ্গহানি।
জো ম্যাকসোরলি বলছেন বহুমূত্রের জন্য ওষুধ খাওয়া বন্ধ করতে পেরে তিনি বিরাট স্বস্তিবোধ করছেন। 'আমি ১২ সপ্তাহে ১৭ কিলো ওজন কমিয়েছি'
৫৮ বছর বয়স্ক জো ম্যাকসোরলি থাকেন স্কটল্যাণ্ডের গ্লাসগো শহরের কাছে। ছয় বছর আগে তার টাইপ-টু ডায়াবেটিস ধরা পড়ে। তাকে চিকিৎসক দুরকম ওষুধ দেবার পরেও তিনি তার রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে আনতে হিমশিম খাচ্ছিলেন।
বিবিসি নিউজকে তিনি বলেন: ''আমার মনে হয়েছিল এখন সারা জীবন যতদিন বাঁচব আমাকে ওষুধ খেয়ে যেতে হবে।''
প্রথমদিকে তিনি যখন প্রতিদিন কম ক্যালরির তরল খাবার পরীক্ষামূলকভাবে খেতে শুরু করেছিলেন, তার খুব কষ্ট হয়েছিল। ব্যাপারটা খুব কঠিন মনে হয়েছিল ।
কিছু অল্পদিনের মধ্যেই তিনি সুফল পেতে শুরু করেন। ১২ সপ্তাহের মধ্যে তার ওজন ৯০ কেজি থেকে ৭৩ কেজিতে নেমে আসে।
মি: ম্যাকসোরলি বলছেন এরপর যখন তিনি আবার তরল ছেড়ে সবরকম খাবার শুরু করলেন তখনই ছিল সবচেয়ে কঠিন সময়।
''শুধু শেকের মত তরল খেয়ে থাকাটা ছিল আমার জন্য যাত্রার প্রথম ধাপ।"
"তবে নিজের ভাগ্য নিজের হাতে তুলে নেবার জন্য সেটা আমাকে পরবর্তী ধাপে পৌঁছে দিয়েছিল।"
এর দুবছর পর জো ম্যাকসোরলির ওজন ৭৭ কেজিতে স্থিতিশীল হয়।
এখন জো প্রতিদিন নিয়মিত ব্যায়াম করেন এবং অবসরগ্রহণের পর মানুষকে জীবনযাপনের ধারা সম্পর্কে প্রশিক্ষণ দেবার কথা চিন্তাভাবনা করছেন।
স্কটল্যাণ্ডে মি: ম্যাকসোরলি সহ ১৪৯ জন ১২ থেকে ৩০ সপ্তাহ কম ক্যালরির খাবার খাওয়ার এক কর্মসূচিতে অংশ নেন। ওজন কমানোর জন্য তাদের কম ক্যালরির শুধু তরল খাবার এবং পানীয় খেতে হতো।
ওজন কমার পর কয়েক সপ্তাহ ধরে তাদের ধীরে ধীরে আবার সাধারণ খাবার খেতে দেয়া হয়।
এক বছর পর এদের মধ্যে ৬৯ জন রোগমুক্ত হন। মাত্র ৪ শতাংশ রোগীকে শর্করা কমাতে ওষুধের সাহায্য নিতে হয়।
আর দুবছর পর এদের মধ্যে ৫৩জন রোগমুক্ত থেকে যান এবং তাদের কোনরকম ওষুধ খেতে হয় না।
প্রতি মাসে তাদের সঙ্গে বৈঠক করে কীভাবে স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করা যায় সে বিষয়ে পরামর্শ দেয়া হয়। তাদের ওজন যদি আবার বাড়ার প্রবণতা দেখা যায়, তাদের সাহায্য করার জন্য আবার তরল খাবার খেয়ে ওজন কমানোর কর্মসূচিতে যোগ দেবার জন্য উৎসাহিত করা হয়।
এক বছর পর এদের মধ্যে ৬৯ জন রোগমুক্ত হন। মাত্র ৪ শতাংশ রোগীকে শর্করা কমাতে ওষুধের সাহায্য নিতে হয়।
আর দুবছর পর এদের মধ্যে ৫৩জন রোগমুক্ত থেকে যান এবং তাদের কোনরকম ওষুধ খেতে হয় না।
প্রতি মাসে তাদের সঙ্গে বৈঠক করে কীভাবে স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করা যায় সে বিষয়ে পরামর্শ দেয়া হয়। তাদের ওজন যদি আবার বাড়ার প্রবণতা দেখা যায়, তাদের সাহায্য করার জন্য আবার তরল খাবার খেয়ে ওজন কমানোর কর্মসূচিতে যোগ দেবার জন্য উৎসাহিত করা হয়।
'ওজন কমানোই কি সবকিছু'
এই গবেষণার সঙ্গে জড়িত অধ্যাপক রয় টেইলর বলছেন: ''এই ফলাফল বহুমূত্র রোগীদের জন্য খুবই আশাব্যঞ্জক। এতদিন মনে করা হতো টাইপ-টু ডায়াবেটিস একবার ধরলে আর ফেরার পথ নেই- সেই যুগের ওপর এবার যবনিকা ফেলার পথ খুলে গেছে।''
তারা বলছেন যারা ওজন কমিয়ে বহুমূত্র রোগ ঠেকানোর কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছিলেন তারা গড়ে ১০ কেজির মত ওজন কমিয়েছেন এবং তা ধরে রাখার চেষ্টা করেছেন।
কিন্তু লণ্ডনে কিংস কলেজের ড: নিকোলা গেস বলছেন ওজন কমানোটাই যে একমাত্র পথ তা এখুনি বলা যাবে না।
''কারণ খুব কম সংখ্যক হলেও কয়েকজন রোগীর ক্ষেত্রে এই রোগ আবার ফিরে এসেছে।''
''সেটা কেন হয়েছে তা বুঝতে আরও গবেষণার প্রয়োজন।''
''হয়ত এমনটা হয়ে থাকতে পারে, ওজন কমানো তাদের জন্য একশভাগ করেনি যারা টাইপ-টু ডায়াবেটিসের রোগী ছিলেন অনেকদিন ধরে অথবা তাদের বংশগত জিন এক্ষেত্রে একটা ভূমিকা রেখেছে।''
তবে টাইপ-টু ডায়াবেটিস একটি জটিল রোগ। এই রোগের নিরাময় বা প্রতিরোধ যে সকলের জন্য একভাবে কাজ করবে এক্ষুণি তা বলা ঠিক হবে না বলে মন্তব্য করেছে যুক্তরাজ্যের ডায়াবেটিস ইউকে সংস্থা যারা এই গবেষণার জন্য অর্থায়ন করেছে। সূত্র: বিবিসি।
এই গবেষণার সঙ্গে জড়িত অধ্যাপক রয় টেইলর বলছেন: ''এই ফলাফল বহুমূত্র রোগীদের জন্য খুবই আশাব্যঞ্জক। এতদিন মনে করা হতো টাইপ-টু ডায়াবেটিস একবার ধরলে আর ফেরার পথ নেই- সেই যুগের ওপর এবার যবনিকা ফেলার পথ খুলে গেছে।''
তারা বলছেন যারা ওজন কমিয়ে বহুমূত্র রোগ ঠেকানোর কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছিলেন তারা গড়ে ১০ কেজির মত ওজন কমিয়েছেন এবং তা ধরে রাখার চেষ্টা করেছেন।
কিন্তু লণ্ডনে কিংস কলেজের ড: নিকোলা গেস বলছেন ওজন কমানোটাই যে একমাত্র পথ তা এখুনি বলা যাবে না।
''কারণ খুব কম সংখ্যক হলেও কয়েকজন রোগীর ক্ষেত্রে এই রোগ আবার ফিরে এসেছে।''
''সেটা কেন হয়েছে তা বুঝতে আরও গবেষণার প্রয়োজন।''
''হয়ত এমনটা হয়ে থাকতে পারে, ওজন কমানো তাদের জন্য একশভাগ করেনি যারা টাইপ-টু ডায়াবেটিসের রোগী ছিলেন অনেকদিন ধরে অথবা তাদের বংশগত জিন এক্ষেত্রে একটা ভূমিকা রেখেছে।''
তবে টাইপ-টু ডায়াবেটিস একটি জটিল রোগ। এই রোগের নিরাময় বা প্রতিরোধ যে সকলের জন্য একভাবে কাজ করবে এক্ষুণি তা বলা ঠিক হবে না বলে মন্তব্য করেছে যুক্তরাজ্যের ডায়াবেটিস ইউকে সংস্থা যারা এই গবেষণার জন্য অর্থায়ন করেছে। সূত্র: বিবিসি।
No comments