বাংলাদেশের সংবিধানে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি
চিত্রা নিউজ ডেস্ক:
(১৭) অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক শিক্ষা
(ক) একই পদ্ধতির গণমুখী ও সার্বজনীন শিক্ষাব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য এবং আইনের দ্বারা নির্ধারিত স্তর পর্যন্ত সকল বালক-বালিকাকে অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক শিক্ষাদানের জন্য।
(খ) সমাজের প্রয়োজনের সহিত শিক্ষাকে সঙ্গতিপূর্ণ করিবার জন্য এবং সেই প্রয়োজন সিদ্ধ করিবার উদ্দেশ্যে যথাযথ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ও সদিচ্ছা প্রণোদিত নাগরিক সৃষ্টির জন্য।
(গ) আইন দ্বারা স্বীকৃত সময়ের মধ্যে সাক্ষরতা মুক্ত দেশ গঠনে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করিবেন৷
দেশ স্বাধীনতার ৪৮ বৎসরে সাক্ষরতার হার ৭১ শতাংশ তাঁরই আত্মতুষ্টিতে ঢেকুর তুলছেন আমাদের শিক্ষাবিদ ও কর্তাব্যক্তিরা। বিভিন্ন বছরগুলোর শিক্ষা বাজেট পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে, মানুষের শিক্ষার মৌলিক অধিকারের বিষয়ে কখনোই মনোযোগী ছিলো না। মূলত বৃটিশ উপনিবেশিক শাসনামলের শিক্ষাব্যবস্থার আদলে নির্মিত আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা। ১৯৫২’র ভাষা আন্দোলনে রফিক, জব্বারেরা, ১৯৬২ সালের বর্বর পাকিস্তানি শাসকদের জোর পূর্বক চাপিয়ে দেয়া শিক্ষানীতি বাতিলের আন্দোলনে, ওয়াজিউল্লাহরা প্রাণ দিলেন। এই দেশের মানুষ আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমেই নিজেদের ভাষা, স্বাধীনতা ও বঞ্চনা বৈষম্যের অধিকার আদায়ে সংগ্রাম করেছে যুগে যুগে। একটি শিক্ষা আন্দোলন জরুরি হয়ে পড়েছে, তা হলো অভিন্ন শিক্ষাব্যবস্থা প্রবর্তনে জাতীয়করণ এবং সরকারি নিয়ন্ত্রণ ও ব্যবস্থাপনায় শিক্ষার মানোন্নয়ন। সময়ের দাবি শিক্ষকতা পেশাকে আকর্ষণীয় করার মাধ্যমে মেধাবীদের শিক্ষকতায় আকৃষ্ট করা। আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর গুনগত মানের শিক্ষায় প্রয়োজন, গুনগত মানের মেধাবী শিক্ষক। বাংলার অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে ১৯৭২ সালে গঠিত শিক্ষা কমিশন, ডঃ কুদরত ই খুদা রিপোর্ট কিছুটা হলেও এদেশের জনমানুষের আশাআকাঙ্ক্ষা পূরনের সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু স্বপ্নও ১৯৭৫ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে নৃশংস হত্যার মধ্য দিয়ে শেষ করা হয়েছিল। ক্ষমতালিপ্সু নির্লজ্জ রাজনীতিকদের ক্ষমতার পালাবদলে, দেশের শিক্ষাব্যবস্থার স্থায়ী মানোন্নয়নে কখনই গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করেনি। সরকারগুলো নিজেদের সুনাম ও সুখ্যাতি রক্ষার্থে শিক্ষার মানোন্নয়ন তথা শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়নে স্থায়ী কোনো শিক্ষানীতি প্রণয়ন না করে, শুধুমাত্র শিক্ষা কমিটির মাধ্যমে শিক্ষার ব্যবস্থার সাময়িক নীতিমালা প্রণয়ন করে। ফলে আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় এখনো সেই বৃটিশদের ভ্রান্ত নীতি অনুযায়ী বেসরকারি করণে উৎসাহিত করা হচ্ছে। ২০১০ সালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে জাতীয় শিক্ষানীতি প্রণয়ন করা হলেও, তা দৃশ্যমান বাস্তবায়ন হয়নি। শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণের মাধ্যমে শিক্ষার নিয়ন্ত্রণ ও দায়িত্ব রাষ্ট্রকেই নিতে হবে এই দাবি এখন গণ-দাবিতে পরিণত হয়েছে । দেশের সংবিধান অনুযায়ী শিক্ষার দায়িত্ব, নিয়ন্ত্রণ এবং পরিচালনা রাষ্ট্রীয় কর্তব্য। বেসরকারিকরণে উৎসাহিত করে শিক্ষাকে বাণিজ্যিকীকরণ, আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মকে মারাত্বক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। অর্থের বিনিময়ে শিক্ষালাভ শিক্ষার্থীদের কাংখিত ইতিবাচক মানসিকতা গড়ে দিতে অপারগ। সনদ নির্ভর শিক্ষা নৈতিকতা ও মানবিকতা বিবর্জিত হতে বাধ্য। শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণের মাধ্যমে দেশের সুবিধাবঞ্চিত মানুষের সন্তানদের শিক্ষালাভের সুযোগ নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব ও কর্তব্য। নিঃসন্দেহে গুনগত মানের শিক্ষিত জনগোষ্ঠী, যে কোন জাতির অগ্রগতি ও উন্নয়নের মূল উপাদান। তাই নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ধারাবাহিক সরকারের নিকট শিক্ষা সচেতন মহলের প্রত্যাশা অনেক বেশি। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী এ সরকারের নিকট দুর্নীতিমুক্ত, যুগোপযোগী, প্রযুক্তিনির্ভর এবং গুনগত মানের শিক্ষালাভের প্রত্যাশা করি।
পরিশেষে সংবিধান সমুন্নত রাখতে দেশের ৫ লক্ষাধিক শিক্ষকদের জোরালো দাবি স্বাক্ষরতা মুক্ত দেশ গঠনের। শিক্ষায় গুনগত মান নিশ্চিতকরণ, সকল প্রকার দুর্নীতি, বিশৃঙ্খলা, বৈষম্য দূরীকরণ এবং এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ করে, ইতিহাসে চিরদিন স্মরণীয় হয়ে থাকুন।
(১৭) অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক শিক্ষা
(ক) একই পদ্ধতির গণমুখী ও সার্বজনীন শিক্ষাব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য এবং আইনের দ্বারা নির্ধারিত স্তর পর্যন্ত সকল বালক-বালিকাকে অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক শিক্ষাদানের জন্য।
(খ) সমাজের প্রয়োজনের সহিত শিক্ষাকে সঙ্গতিপূর্ণ করিবার জন্য এবং সেই প্রয়োজন সিদ্ধ করিবার উদ্দেশ্যে যথাযথ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ও সদিচ্ছা প্রণোদিত নাগরিক সৃষ্টির জন্য।
(গ) আইন দ্বারা স্বীকৃত সময়ের মধ্যে সাক্ষরতা মুক্ত দেশ গঠনে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করিবেন৷
দেশ স্বাধীনতার ৪৮ বৎসরে সাক্ষরতার হার ৭১ শতাংশ তাঁরই আত্মতুষ্টিতে ঢেকুর তুলছেন আমাদের শিক্ষাবিদ ও কর্তাব্যক্তিরা। বিভিন্ন বছরগুলোর শিক্ষা বাজেট পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে, মানুষের শিক্ষার মৌলিক অধিকারের বিষয়ে কখনোই মনোযোগী ছিলো না। মূলত বৃটিশ উপনিবেশিক শাসনামলের শিক্ষাব্যবস্থার আদলে নির্মিত আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা। ১৯৫২’র ভাষা আন্দোলনে রফিক, জব্বারেরা, ১৯৬২ সালের বর্বর পাকিস্তানি শাসকদের জোর পূর্বক চাপিয়ে দেয়া শিক্ষানীতি বাতিলের আন্দোলনে, ওয়াজিউল্লাহরা প্রাণ দিলেন। এই দেশের মানুষ আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমেই নিজেদের ভাষা, স্বাধীনতা ও বঞ্চনা বৈষম্যের অধিকার আদায়ে সংগ্রাম করেছে যুগে যুগে। একটি শিক্ষা আন্দোলন জরুরি হয়ে পড়েছে, তা হলো অভিন্ন শিক্ষাব্যবস্থা প্রবর্তনে জাতীয়করণ এবং সরকারি নিয়ন্ত্রণ ও ব্যবস্থাপনায় শিক্ষার মানোন্নয়ন। সময়ের দাবি শিক্ষকতা পেশাকে আকর্ষণীয় করার মাধ্যমে মেধাবীদের শিক্ষকতায় আকৃষ্ট করা। আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর গুনগত মানের শিক্ষায় প্রয়োজন, গুনগত মানের মেধাবী শিক্ষক। বাংলার অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে ১৯৭২ সালে গঠিত শিক্ষা কমিশন, ডঃ কুদরত ই খুদা রিপোর্ট কিছুটা হলেও এদেশের জনমানুষের আশাআকাঙ্ক্ষা পূরনের সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু স্বপ্নও ১৯৭৫ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে নৃশংস হত্যার মধ্য দিয়ে শেষ করা হয়েছিল। ক্ষমতালিপ্সু নির্লজ্জ রাজনীতিকদের ক্ষমতার পালাবদলে, দেশের শিক্ষাব্যবস্থার স্থায়ী মানোন্নয়নে কখনই গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করেনি। সরকারগুলো নিজেদের সুনাম ও সুখ্যাতি রক্ষার্থে শিক্ষার মানোন্নয়ন তথা শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়নে স্থায়ী কোনো শিক্ষানীতি প্রণয়ন না করে, শুধুমাত্র শিক্ষা কমিটির মাধ্যমে শিক্ষার ব্যবস্থার সাময়িক নীতিমালা প্রণয়ন করে। ফলে আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় এখনো সেই বৃটিশদের ভ্রান্ত নীতি অনুযায়ী বেসরকারি করণে উৎসাহিত করা হচ্ছে। ২০১০ সালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে জাতীয় শিক্ষানীতি প্রণয়ন করা হলেও, তা দৃশ্যমান বাস্তবায়ন হয়নি। শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণের মাধ্যমে শিক্ষার নিয়ন্ত্রণ ও দায়িত্ব রাষ্ট্রকেই নিতে হবে এই দাবি এখন গণ-দাবিতে পরিণত হয়েছে । দেশের সংবিধান অনুযায়ী শিক্ষার দায়িত্ব, নিয়ন্ত্রণ এবং পরিচালনা রাষ্ট্রীয় কর্তব্য। বেসরকারিকরণে উৎসাহিত করে শিক্ষাকে বাণিজ্যিকীকরণ, আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মকে মারাত্বক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। অর্থের বিনিময়ে শিক্ষালাভ শিক্ষার্থীদের কাংখিত ইতিবাচক মানসিকতা গড়ে দিতে অপারগ। সনদ নির্ভর শিক্ষা নৈতিকতা ও মানবিকতা বিবর্জিত হতে বাধ্য। শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণের মাধ্যমে দেশের সুবিধাবঞ্চিত মানুষের সন্তানদের শিক্ষালাভের সুযোগ নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব ও কর্তব্য। নিঃসন্দেহে গুনগত মানের শিক্ষিত জনগোষ্ঠী, যে কোন জাতির অগ্রগতি ও উন্নয়নের মূল উপাদান। তাই নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ধারাবাহিক সরকারের নিকট শিক্ষা সচেতন মহলের প্রত্যাশা অনেক বেশি। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী এ সরকারের নিকট দুর্নীতিমুক্ত, যুগোপযোগী, প্রযুক্তিনির্ভর এবং গুনগত মানের শিক্ষালাভের প্রত্যাশা করি।
পরিশেষে সংবিধান সমুন্নত রাখতে দেশের ৫ লক্ষাধিক শিক্ষকদের জোরালো দাবি স্বাক্ষরতা মুক্ত দেশ গঠনের। শিক্ষায় গুনগত মান নিশ্চিতকরণ, সকল প্রকার দুর্নীতি, বিশৃঙ্খলা, বৈষম্য দূরীকরণ এবং এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ করে, ইতিহাসে চিরদিন স্মরণীয় হয়ে থাকুন।
No comments