৪১টি ধারা সংশোধনের প্রস্তাবসহ শ্রম আইন ২০১৮ মন্ত্রিসভায় অনুমোদন


বাংলাদেশ শ্রম (সংশোধন) আইন ২০১৮-এ নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। আইএলও কনভেনশন অনুযায়ী বর্তমান বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬-কে আরও যুগোপযোগী করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব শফিউল আলম।

সোমবার (৩ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বৈঠকে সংশোধিত আইনের খসড়ায় অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠক শেষে সচিব জানান, শ্রম আইন ২০০৬ সংশোধন করা হয়েছিল ২০১৩ সালে। তখন এই আইনের ৯০টি ধারা সংশোধন করা হয়েছিল। এখন ২০১৮ সালে সংশোধনের মাধ্যমে এটিকে আরও যুগোপযোগী এবং শ্রমবান্ধব করা হয়েছে।

শফিউল আলম বলেন, ‘শ্রম আইনে ধারা হচ্ছে ৩৫৪টি। এই সংশোধনী প্রস্তাবে দুটি ধারা, চারটি উপধারা, আটটি দফা সংযোজন করা হয়েছে। ৬টি উপধারা বিলুপ্ত করা হয়েছে। ৪১টি ধারা সংশোধনের প্রস্তাব করা হয়েছে।’

মন্ত্রিপরিষদের বৈঠক (ছবি: ফোকাস বাংলা)তিনি জানান, ‘এই আইনের উল্লেখযোগ্য সংশোধনের প্রস্তাবগুলো হলো কোনও কারখানায় কর্মরত শ্রমিকদের ২০ শতাংশের সম্মতিতে ট্রেড ইউনিয়ন করা যাবে। এর আগে ৩০ শতাংশ লাগতো। ১৪ বছর বয়সের নিচে কোনও শিশুকে কোনও কারখানায় নিয়োগ দেওয়া যাবে না। ১৪ থেকে ১৮ বছর বয়সী কিশোরদের কারখানায় শ্রমিক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া যাবে। কারখানায় নারী শ্রমিকরা ৮ সপ্তাহের জন্য মাতৃত্বকালীন ছুটি পাবেন। এর ব্যত্যয় হলে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা দিতে হবে। কোনও নারী শ্রমিক সন্তানসম্ভবা হলে তার প্রমাণ পেশ করার ৩ দিনের মধ্যে ছুটি দিতে হবে। ৫১ শতাংশ শ্রমিকের অনুমতি সাপেক্ষে ধর্মঘট করা যাবে। যেকোনও শ্রম আদালতে ৯০ দিনের মধ্যে অভিযোগ নিষ্পত্তি করতে হবে। না হলে পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে অবশ্যই করতে হবে। এই ১৮০ দিনের মধ্যেও যদি নিষ্পত্তি না হয় তাহলে বাকি পরবর্তী ৬০ দিনের মধ্যে আপিল করতে পারবে।’

তিনি আরও জানান, ‘কর্মক্ষেত্রে কর্মরত অবস্থায় কোনও শ্রমিক মারা গেলে দুই লাখ টাকা এবং দুর্ঘটনায় স্থায়ীভাবে পঙ্গু হলে আড়াই লাখ টাকা শ্রমিককে দিতে হবে। আর কোনও শ্রমিক সংগঠন বিদেশ থেকে চাঁদা আনলে তা সরকারকে অবহিত করতে হবে। শ্রমিক সংগঠনের রেজিস্ট্রেশন ৬০ দিনের পরিবর্তে ৫৫ দিনের মধ্যে করতে হবে। শ্রমিকদের কল্যাণে যেকোনও সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য সরকার, মালিক ও শ্রমিক এই ত্রিপক্ষীয় পরিষদ করার বিধান রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে।’
সূত্র-বাংলা ট্রিবিউন

No comments

Powered by Blogger.