নিজ বুদ্ধিমত্তায় অপহরণকারীদের হাত থেকে রক্ষা পেল শিশু আল-আমিন
আল-আমিনের যখন জ্ঞান ফেরে তখন সে দেখে একটি কালভার্টের নিচে শুয়ে আছে। কালভার্ট থেকে বেরিয়েই দেখে ৪-৫জন লোক দাঁড়িয়ে আছে। একজনের হাতে বড় একটি ছোরা। ছোরা হাতে লোকটি আল-আমিনের কাছে এসে বলে তোর আগে মোট ৩০জনকে খুন করেছি, তোকে দিয়ে ৩১টি হবে। কালভার্টটি বড় রাস্তার পাশেই মনে হচ্ছিল। রাস্তা দিয়ে যাওয়া গাড়ির আলো দেখতে পাচ্ছিল আল-আমিন। বুদ্ধি এলো দৌঁড়ে পালাতে হবে। দেরি না করে আল-আমিন দ্রুত গতিতে দৌঁড়ে পালাল। কিছুক্ষণ দৌড়ে এসে রাস্তার পাশে একটি দোকান দেখতে পেয়ে ওখানে আশ্রয় নেয়। দোকানে থাকা লোকজনদের তাকে বাাঁচানোর আকুতি জানায়। এভাবেই বর্ণনা করেছে অপহরণকারীদের কাছ থেকে পালিয়ে আসা শিশু আল-আমিন(১২)। লোকজন অপহরণকারীদের ধরতে কালভার্টের ওখানে যায় তবে তারা সেখানে কাউকে দেখতে পায়নি। ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার রাতে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার বলিদাপাড়া সংলগ্ন এলাকায়। পরে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
আল-আমিনের বাড়ি রাজবাড়ি জেলার রাজবাড়ি সদর উপজেলার শহীদ ওহাবপুর ইউনিয়নের রুপপুর গ্রামে। সে জাহাঙ্গীর শেখ ও রেনু বেগমের ছেলে। রেনু বেগম বলেন, কুষ্টিয়া তাদের এক আত্মীয়ের বাড়িতে দাওয়াত খেতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বুধবার বেলা ১২টার দিকে আল-আমিন বাড়ি থেকে বের হয়। কিন্তু বিকেলে ওই আত্মীয়রা ফোনে জানায় আল-আমিন তাদের বাড়িতে আসেনি। তাই ছেলের সন্ধান পেতে ওই দিনই কুষ্টিয়া থানায় একটি জিডি করেন তারা। যার নম্বর ১২০১ তারিখ ২০-০৯-২০১৮। ছেলে উদ্ধারের খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার তারা ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ থানায় আসেন।
আল-আমিন বলে, ‘আমি বুধবার দুপুরে ট্রেনে চড়ে কুষ্টিয়ার উদ্দেশ্যে আসছিলাম। একসময় ট্রেনের ভিতর একজন লোক একটি রুমাল আমার নাকে চেপে ধরে। এর পর যখন জ্ঞান ফিরলো তখন দেখি একটি কালভার্টের নিচে শুয়ে আছি। কালভার্ট থেকে বেরিয়েই দেখি ৪-৫জন লোক দাঁড়িয়ে আছে। একজনের হাতে বড় একটি ছোরা। ছোরা হাতে লোকটি আমার কাছে এসে বলে, তোর আগে মোট ৩০জনকে খুন করেছি, তোকে দিয়ে ৩১টি হবে। কালভার্টটি একটি বড় রাস্তার পাশে মনে হলো। রাস্তা দিয়ে যাওয়া গাড়ির আলো দেখছিলাম। এক পর্যায়ে দৌড়ে পালাই এবং একটি দোকানে এসে আশ্রয় নিই।
এ ব্যাপারে কালীগঞ্জ থানার ওসি ইউনুচ আলী জানান, বুধবার রাতে ছেলেটিকে পুলিশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। বৃহস্পতিবার রাতে আল-আমিনকে তার বাবা-মায়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
No comments