ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের বৃদ্ধা শিবানী দাসীর জীবন সংগ্রাম শান্তিনগর আর কত দূর ?
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি:মেয়ে অনিতা দাসীর জন্মের আড়াই বছর পর ছেলে রবীন দাস জন্ম গ্রহন করে। এর ৩ দিন পর দিনমজুর স্বামী মহাদেব দাস মারাত্বক রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। তখন থেকে আমাকে ওদের বাবা মা উভয়ের দায়িত্ব পালন করতে হয়েছে। শত কষ্টে ২ সন্তানকে লালন পালনে বড় করে বিয়ে দিয়েছিলাম। মনে করেছিলাম সব কষ্টের অবসান হবে। কিন্ত ঘটেছে তার উল্টোটা। বর্তমানে আমার বয়স ৭০ পেরিয়ে গেছে। এ বয়সে এসে প্রতিদিন ছেলে রবীনের প্রতিবন্ধী সন্তান অন্তর দাসের হুইল ঠেলে বাঁচতে হচ্ছে। বয়সের ভার আর অসুস্থতায় শরীরে এখন শক্তি নেই। সারাদিন হুইল ঠেলি আর মনে করি এর চেয়ে মরলেই মনে হয় শান্তি পাবো। কিন্ত সেই শান্তি নগর আর কত দূর ? আর আমি শান্তি নগরে চলে গেলে (মারা গেলে) তখন অন্তরেরই বা কে দেখবে ? কথাগুলো বললেন কালীগঞ্জ পৌরসভার নিশ্চিন্তপুর গ্রামে বসবাসকারী অসহায় বৃদ্ধা শিবানী দাসী। বৃদ্ধা শিবানী দাসী চোখের পানি ফেলে বলেন,এক সময় আমার সবই ছিল কিন্ত এখন কিছুই নেই। নিশ্চিন্তপুর গ্রামের রনজিৎ দাসের পতিত জমিতে প্রতিমাসে ১’শ টাকার চুক্তিতে মাটি ভাড়া নিয়ে ঝুপড়ি ঘর বেধে বসবাস করছি। এখন আমি পথের ভিখারী। মানুষের কাছে হাত পেতে বেঁচে আছি। তিনি বলেন, আমার ছেলের সন্তান অন্তরের জন্মের ৩ বছর পর তার মা স্বামী সন্তান ফেলে চলে যায়। তখন থেকে অন্তরের দেখাশুনার আর কেউ রইল না। অন্তর কথাও বলতে পারে না। দাঁড়াতেও পারে না। পরে ছেলে আবার বিবাহ করলেও সে বউমাও আমাদের ছেড়ে বাবা বাড়িতে থাকে। ফলে অন্তরের শেষ ভরসা এখন আমিই। প্রতিদিন হুইল চেয়ারে করে শহরে ঘুরে মানুষের কাছে হাত পেতে যা পাই তা দিয়ে চলতে হয়। সরকারী ভাতা পাই কিন্ত তা দিয়ে ২ জনের ঔষধ কিনে আর পয়সা থাকে না। অতীতের স্মৃতিচারন করে বৃদ্ধা শিবানী বলেন, কার কপালে কি আছে বলা যায় না। আমার বাবা উপজেলার সাদিকপুর গ্রামের গিরীন দাস ছিলেন একজন স্বচ্ছল কৃষক। তিনি আমাকেও বিয়ে দিয়েছিলেন কৃষক পরিবারে। এদিকে বাবা বাড়িতে হঠাৎ আগুন লেগে জমির দলিলসহ মূল্যবান জিনিসপত্র পুড়ে ছাই হয়ে গেল। ওই বছরই দেশে শুরু হলো মুক্তিযুদ্ধ। সে সময়ে নিজের জীবন বাঁচাতে বাবার বাড়ির সবাই শরনার্থীদের সাথে চলে গেলেন ভারতে। এর অল্প কিছুদিন পরেই সেখানে বাবা মারা যাওয়ার পর এখানকার সম্পত্তি সব বেহাত হয়ে যায়। ফলে আমি সবক’ল হারিয়ে ফেললাম। জীবনে হাড় ভাঙা পরিশ্রমের মাধ্যমে ২ সন্তান বড় করেও কপাল দোষে এ বয়সে এখন ছেলের প্রতিবন্ধি ছেলের হুইল চেয়ার ঠেলে মানুষের নিকট হাত পেতে বাঁচতে হচ্ছে।
প্রতিবেশী জিতেন্দ্রনাথ দাস জানান, প্রায় এক যুগেরও বেশি সময় ধরে এভাবে প্রতিবন্ধী অন্তরের হুইল ঠেলছে শিবানী। অন্তরের বয়স বর্তমান ১৭ বছর। এখন তার দৈহিক ওজনও বেড়েছে। ফলে বৃদ্ধা শিবানীর পক্ষে তার হুইল ঠেলা কষ্টকর ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। তারপরও সে প্রতিবন্ধীকে বাঁচাতে জীবন সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন। শিবানী এ বয়সে এসে এক প্রতিবন্ধীর জন্য যে কষ্ট করছেন তাকে ধন্যবাদ দিতে হয়। প্রতিবেশী সাধন কুমার দাস জানান,এ প্রতিবন্ধী ছেলেটাকে নিয়ে বৃদ্ধা শিবানী দীর্ঘদিন ধরে কষ্ট করছেন। বাবা হারা ২ ছেলেমেয়েকে লালন পালন করেছেন। এখন করছেন ছেলের প্রতিবন্ধী সন্তানকে। বয়সের ভারে শিবানী এখন নিজেই অসুস্থ। তারপরও প্রতিবন্ধী অন্তরের হুইল চেয়ার ঠেলছেন এটা মহল্লারবাসীর নিকট আশ্চর্য লাগে। প্রতিবন্ধী অন্তরকে দেখলে যেমন কষ্ট লাগে তেমন কষ্ট লাগে বৃদ্ধা শিবানীর কষ্ট করে হুইল চেয়ার ঠেলে বাজারে আসা দেখলে।
প্রতিবেশী জিতেন্দ্রনাথ দাস জানান, প্রায় এক যুগেরও বেশি সময় ধরে এভাবে প্রতিবন্ধী অন্তরের হুইল ঠেলছে শিবানী। অন্তরের বয়স বর্তমান ১৭ বছর। এখন তার দৈহিক ওজনও বেড়েছে। ফলে বৃদ্ধা শিবানীর পক্ষে তার হুইল ঠেলা কষ্টকর ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। তারপরও সে প্রতিবন্ধীকে বাঁচাতে জীবন সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন। শিবানী এ বয়সে এসে এক প্রতিবন্ধীর জন্য যে কষ্ট করছেন তাকে ধন্যবাদ দিতে হয়। প্রতিবেশী সাধন কুমার দাস জানান,এ প্রতিবন্ধী ছেলেটাকে নিয়ে বৃদ্ধা শিবানী দীর্ঘদিন ধরে কষ্ট করছেন। বাবা হারা ২ ছেলেমেয়েকে লালন পালন করেছেন। এখন করছেন ছেলের প্রতিবন্ধী সন্তানকে। বয়সের ভারে শিবানী এখন নিজেই অসুস্থ। তারপরও প্রতিবন্ধী অন্তরের হুইল চেয়ার ঠেলছেন এটা মহল্লারবাসীর নিকট আশ্চর্য লাগে। প্রতিবন্ধী অন্তরকে দেখলে যেমন কষ্ট লাগে তেমন কষ্ট লাগে বৃদ্ধা শিবানীর কষ্ট করে হুইল চেয়ার ঠেলে বাজারে আসা দেখলে।
No comments