কালীগঞ্জের সেই বিতর্কিত হিজড়াদের দাবি তারা আগে থেকেই হিজড়া ছিল


এম, শাহজাহান আলী সাজু, কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ) থেকে॥
জোর করে অপারেশনের মাধ্যমে দুই যুবককে হিজড়ায় রুপান্তর করাসহ বিতর্কিত নানা গুণঞ্জনের অবসান ঘটতে চলেছে। সোমবার ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ থানায় বিতর্কিত সেই দুই হিজড়া হাজির হয়ে সর্দার রতœাসহ তাদের বিরুদ্ধে আনিত সকল অভিযোগ অস্বীকার করে লিখিত দিয়েছেন বলে জানা গেছে। তারা দুই জনই পূর্ব থেকেই হিজড়া ছিল বলে দাবি করেছেন। কালীগঞ্জ থানার অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে গত দুই মাস যাবত জোর করে অপারেশনের মাধ্যমে দুই যুবককে হিজড়ায় রুপান্তর করাসহ নানা বিতর্ক বিভিন্ন মিডিয়ায় ঝড় ওঠায় বিষয়টি টক অব দ্য টাউনে পরিনত হয়। বিষয়টি নিয়ে উপজেলা এলাকায় তোলপাড় অব্যাহত থাকলেও আলোচিত ও বিতর্কিত সেই নবাগত যুবক হিজড়া সাজে সজ্জিত হয়ে কালীগঞ্জ শহরে দাপিয়ে বেড়াতে শুরু করেছে। হিজড়া সাজে সজ্জিত কালীগঞ্জ পৌর সভা এলাকার নিশ্চিন্তপুর গ্রামের কেসমত আলীর ছেলে শরিফুল ইসলাম ওরফে (মারিয়া) (২২) ও একই উপজেলার ঘোপপাড়া গ্রামের শামসুল ইসলামের ছেলে কাজল বর্তমানেও (কাজল) (২৩) কালীগঞ্জ থানায় হাজির হয়ে লিখিত দিয়েছেন। একই সাথে প্রশাসন ও সংবাদিকদের সাথে খোলামেলা বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন।
তারা দুই জনই জানান, জোর পূর্বক অপারেশনের মাধ্যমে পুরুষাঙ্গ কর্তনের মত কোন ঘটনাই ঘটেনি। তারা পূর্ব থেকেই পুরুষ বা নারী কোনটাই নয় বলে দাবি করেন। অনেক আগে থেকে প্রসাবের দ্বারে জ্বালা যন্ত্রনা হওয়ায় তাদের অপারেশন করা হয় বলে জানায়। কালীগঞ্জের হিজড়া সর্দার মনিরা ওরফে রতœা হিজড়ার বিরুদ্ধে আনিত সকল অভিযোগ মিথ্যা বলে তারা জনান।
স্বরেজমিনে নবাগত হিজড়া নিশ্চিন্তপুর গ্রামের কেসমত আলীর ছেলে শরিফুল ইসলাম ওরফে মারিয়ার বাড়িতে গেলে ওই গ্রামের বাসিন্দা পলাশসহ এলাকাবাসী জানান, এতকিছুর পরও নতুন দুই হিজড়াকে তাদের পরিবার কয়েকদিন আগে হিজড়া সর্দারের হাতে তুলে দেয়। হিজড়া সর্দার তাদের দুই জনকে নিতে না চাইলেও তাদের পরিবারের লোজনই অনুরোধ করে হিজড়া সর্দারের হাতে তুলে দেয়। এব্যাপারে হিজড়া সর্দার রতœা কারো নাম না উল্লেখ করে জানান, এদের দুই জনকে নিয়ে নিজেদের মধ্যে অনেক বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। নিজেদের স্বার্থের জন্য একটি কুচক্রি মহল বিভিন্ন ধারণের মিথ্যা বানোয়াট কথা ছড়িয়েছে বলে জানান। মারিয়া ও কাজল পূর্ব থেকেই হিজড়া ছিল। যার মেডিকেল রিপোর্ট আছে বলে জানান তিনি।
এ ব্যাপারে কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ মিজানুর রহমান খাঁন জানান, বিতর্কিত সেই দু’জন যুবক হিজড়া সাজে সজ্জিত হয়ে থানায় এসে লিখিত দিয়ে গিয়েছে। তারা দুই জনই পূর্ব থেকেই হিজড়া ছিল। তারা কাউকে দায়ি করেনি। কেউ তাদের উপর কোন প্রকার চাপ সৃষ্টি করেনি। তাদের শারিরীক সমস্যা জনিত কারণে নিজেরা সেচ্ছাই অপারেশন করিয়েছেন বলে জানান।

No comments

Powered by Blogger.