শ্রেণী কক্ষের অভাবে কালীগঞ্জের কালুখালী-মধুপুর বিদ্যালয়ে খোলা আকাশের নিচে পাঠদান

এম. শাহজাহান আলী সাজু, কালীগঞ্জ(ঝিনাইদহ) ॥
প্রয়োজনীয় শ্রেণী কক্ষ না থাকায় প্রতিদিন গড় ১৩টি করে ক্লাস শ্রেণী কক্ষের বাইরে বিদ্যালয় চত্ত্বরে নিতে হয় কর্তৃপক্ষকে। রৌদ্র-ছায়ার লুকোচুরির মাঝে পাঠদান করতে হয় শিক্ষককে। আলো-অধারী, রৌদ্র, ধুলা-বালি, বৈরী প্রকৃতির সাথে তাল মিলিয়ে দৌড়া-দড়ি আর ছুটাছুটির মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীদেরও ক্লাস করতে হয়। সকল পরিস্থিতির সাথে তাল মেলাতে ও পাশে চলা অপর ক্লাসের কারনে উভয় শ্রেণীর শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের অমনোযোগ ঘটে থাকে মাঝে মাঝে। ছায়া শিতল ও সবুজ ঘাসে মোড়া বিদ্যালয় চত্ত্বরটির প্রকৃত সৌন্দর্য্য ছাত্র-ছাত্রীদের পদভারে হারিয়ে যেতে বসেছে। ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে কালুখালী-মধুপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সকল পরিস্থিতি যেন নিত্যদিনের সাথী হয়েছে।
স্বরেজমিনে বিদ্যালযে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয় চত্বরে চারটি পৃথক স্থানে পাঠদান চলছে। কোন কোন ক্লাসে গাছের সাথে হোয়াইট বোর্ড ব্যবহার হচ্ছে। আবার কোন স্থানে প্রতিজন শিক্ষার্থীকে পৃথক স্থানে বসিয়ে পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে। চার দিক ঘেরা বিদ্যালয়টির একটি মাত্র ফটক। বিভিন্ন্ প্রজাতির গাছের ছায়ায় পরিবেষ্টিত বিদ্যালয়ের তিন দিক ইট ও টিনের বিভিন্ন ধরনের ঘর। সামনে দিয়ে বয়ে যাওয়া সড়কের সাথে আছে সৌন্দর্য্যমন্ডিত প্রধান ফটকের সাথে প্রাচীর দেয়া। মাঝে আছে সসজ্জিত শহীদ মিনার। বিদ্যালয় চত্বরের খোলা জায়গায় নেয়া ক্লাস গুলোতে ছাত্র-ছাত্রীরা আলাদা ভাবে প্লাষ্টিক বস্তার উপর বসে আছেন এবং সামনের দিকে চেয়ারে বসে পাঠদান করছেন শিক্ষক। এধরনের পাঠদান নিয়মিত হওয়ায় প্রতিজন শিক্ষার্থী তাদের বাসা থেকে একটি করে প্লাষ্টিক বস্তা এনে রেখেছেন বলে জানানো হয়। নির্ধারিত সময় শেষে ঘন্টা বাজলে ক্লাস শেষে শিক্ষার্থীরা নিজ আসনের বস্তাটি ও বই খাতা নিয়ে শ্রেণী কক্ষে চলে যায়। এভাবে কখনো বাইরে আবার কখনো শ্রেণী কক্ষে আবার কথনো পর পর কয়েকটি ক্লাস বাইরের বিভিন্ন স্থানে বস্তার আসনে বসে ক্লাস করতে হয় ছাত্র ছাত্রীদের।
বিদ্যলয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ মশিয়ার রহমান জানান, প্রতিদিন গড় ১৩টি ক্লাস বাইরে নেয়া হয়ে থাকে। বৃষ্টি হলে ক্লাস নেয়ায় জটিলতা দেখা দেয়। অ্যয়নরত ৫৫০জন ছাত্র-ছাত্রীর এই বিদ্যালয়ে ছোট বড় ১৫টি কক্ষ আছ্। যার ৪টিতে অফিস ও ১১টিতে ক্লাস নেয়া হয়। বিঞ্জান, কর্মাস ও কারিগরিসহ অন্যান্য বিভাগ থাকায় পরিচ্ছন্ন পাঠদানে শাখা ভিত্তিক ক্লাসগুলো বাইরে নেয়া হয় । বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টি হলে পাঠদানে স্বাভাবিক কার্যক্রমে বিঘ্ন হয় বলে তিনি জানান।
প্রধান শিক্ষক আরো জানান, ১৯৯৫ সালে প্রতিষ্ঠিত ২১জন শিক্ষক কর্মচারীর নিরলস প্রচেষ্টায় বিদ্যালয়ের কার্যক্রম স্বাভাবিক চললেও শ্রেণী কক্ষের অভাবে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের বাড়তি বেগ পেতে হয়। একাধিকবার স্থানীয় সাংসদ সমস্যার সমাধানে একাডেমিক ভবন নির্মাণের আশ্বাস দিলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। বর্তমান সরকারের মেয়াদকালে বিদ্যালয়ের ভবন সমস্যার সমাধান হবে বলে তিনি আশা করছেন।




No comments

Powered by Blogger.